চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে ফের জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে অনেক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই সড়কের বাসিন্দারা।
সকাল এবং বিকেলে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলেই চাঁদপুরের বহু আলোচিত ও ব্যস্ততম বাইপাস এই সড়কটি হাটু পানিতে ডুবে থাকে। এর পূর্বেও গত ২০/২৫ দিন আগে হঠাৎ করে চাঁদপুরের মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু সড়ক সহ পুরো চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা ও সড়ক গুলো বন্যার পানির মতো প্লাবিত হতে দেখা গেছে। তবে বিকেলের চেয়ে রাত ৮টা ৯ টার সময় সড়কে বেশি পানি হয়ে থাকে বলে জানা গেছে।
জানাযায়, গত দু, তিন দিন ধরে আবারো চাঁদপুরের পদ্মা,মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি উত্তাল হতে রয়েছে।প্রতিদিন জোয়ার হলেই এসব নদীর পানি অনেকটা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। দেশের অন্যান্য জেলা, অঞ্চলে বন্যা দুৃর্যোগ দেখা দিলেও চাঁদপুরে এখনো বন্যার কোন প্রভাব পড়েনি। তবে গত কয়েক দিনে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়, অনেকেই বন্যার আশংকা বলে ধারণা করছেন।
এদিকে গত দু’দিন ধরে দেখা গেছে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই পানি চাঁদপুর শহরের (বাইপাস সড়ক) বঙ্গবন্ধু সড়কের ওপর উঠে যায়। সরজমিনে দেখা গেছে, ওই সড়কের মিশন রোড থেকে শুরু করে হাজী বাড়ি মোহাম্মদীয়া জামে মসজিদ হয়ে দর্জিঘাট পর্যন্ত হাটু সমপরিমান এই জোয়ারের পানি সড়কে বইতে থাকে।
এছাড়া সড়কের মিশন রোড হতে শুরু করে ওয়্যারলেস সড়ক পর্যন্ত সড়কের দক্ষিন পাশে অর্থাৎ লেকের অংশ জুড়ে সড়কটির অনেকাংশে জোয়ারের পানি উঠতে দেখা যায়। ভাটা হলে সড়কের ওপর থেকে পানি নেমে গেলেও পানি থাকাবস্থায় ছোট বড় বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের কারনে সড়কটির বিভিন্নস্থানে ছোট বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়। যার কারনে ওই সড়ক দিয়ে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ টেপাহাতে হচ্ছে।
চাঁদপুর পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের দক্ষিন বিষ্ণুদী এলাকার মিশন রোডস্থ বঙ্গবন্ধু সড়কে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দিনের টানা বৃষ্টির পানি এবং জোয়ারের পানি ওই এলাকায় বন্যার পানির মতো বিশাল জায়গা জুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানি জমে বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে থাকা লেক এক হয়ে যায়।
বিশেষ করে হাজী বাড়ি মসজিদ হতে খান বাড়ি পর্যন্ত সড়কের ওপর হাটু পরিমান পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এতে বুঝা যায়নি কোনটি সড়ক আর কোনটি লেক। এ সময় অনেক যানবাহন সেখান দিয়ে ধীর গতিতে যানবাহন চালিয়ে যেতে দেখা যায়। একই সাথে অনেক পথচারী পানির কারনে জুতা হাতে নিয়ে কেউবা আবার বিকল্প পথ বেছে নিয়ে রেললাইন দিয়ে হেটে যেতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এই সড়কটি প্রায় বছর খানেক আগে পুনঃসংস্কার করা হয়েছে। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, কর্ভাট ভ্যান, মাইক্রোবাস,সিএনজি স্কুটার, রিক্সা অটোবাইক সহ বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে থাকে।
এজন্য ভারী যানবাহন চলাচল করার কারনে সড়কটি খুব অল্প সময়ে আবার বেহাল দশায় পরিণত হয়। স্থানীয়রা মনে করছেন, এভাবে যদি প্রতিনিয়ত এমন একটি ব্যস্ততম সড়কে জোয়ারের পানি বইতে থাকে তাহলে ভারী যানবহনে চলাচলে সড়কটির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। এমন অবস্থায় সড়কটি ক্ষয় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে স্থানীয়রা যে কোন মুর্হুতে ওই সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন।
তাই জোয়ারের পানি থাকাবস্থায় কর্তৃপক্ষ যানবাহন চলাচল রোধ করে সড়কটি রক্ষা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি,২১ আগস্ট ২০২০