Home / জাতীয় / জেলা প্রশাসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ২৩ দফা নির্দেশনা
শিক্ষকগণ জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা পাবেন
ফাইল ছবি

জেলা প্রশাসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ২৩ দফা নির্দেশনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২৫ জুলাই)জেলা প্রশাসক সম্মেলনে জেলা প্রশাসকদের করণীয় হিসেবে ২৩ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-সরকারি সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ যাতে কোনোভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন,সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। মানুষ যেন শহরমুখী না হয়। শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন,সম্ভাবনাময় স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে আপনাদের ব্রতী হতে হবে।

ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য কমাতে উন্নয়ন কর্মসূচি এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ উপকৃত হয়। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। জঙ্গিবাদ,সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতার সঙ্গে এবং কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক,মসজিদের ইমাম, গ্রামের মুরুব্বি,নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী,নারী সংগঠক,আনসার-ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ,এনজিও কর্মীসহ সমাজের সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

প্রতিবন্ধী,অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সহজে সুবিচার প্রদান ও আদালতে মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালতগুলোকে কার্যকর করতে হবে। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিকাশে নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে।

শিক্ষার সর্বস্তরে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি এবং ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারি ভূমি রক্ষায় আরও সচেষ্ট হতে হবে।

কৃষি-উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার,বীজ,বিদ্যুৎ,জ্বালানী ইত্যাদির সরবরাহ নির্বিঘ্নে করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থাপনাকে জনপ্রিয় করতে উদ্যোগী হতে হবে। ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড-কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজির সফল বাস্তবায়নে মেধা,দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় প্রশমনে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ রক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ সংক্রান্ত আইন ও বিধি বিধানের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা,পণ্য পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানি নির্বিঘ্নে করা এবং পেশিশক্তি,চাঁদাবাজি,টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাস নিমূর্ল করতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভোক্তা অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে এবং বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির যে কোনো অপচেষ্টা কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

নারী উন্নয়ন নীতি সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা,নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ,নারী ও শিশু পাচার রোধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা, ক্রীড়া,বিনোদন ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে ইতিহাস চেতনা,জ্ঞানস্পৃহা ও বিজ্ঞানমনষ্কতা জাগিয়ে তুলতে হবে।কঠোরভাবে মাদক ব্যবসা,মাদক চোরাচালান এবং এর অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

পার্বত্য জেলাসমূহের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক সৌন্দয্য ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ করতে হবে। পর্যটন শিল্প,ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্পের বিকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে সরকারি ভূমি রক্ষায় সজাগ থাকতে হবে।

এসবের বাইরে নিজস্ব জেলাভিত্তিক সমস্যা চিহ্নিত করে এগুলো সমাধানের উদ্যোগ এবং নদী ভাঙ্গনের শিকার ও গৃহহীনদের ঘর-বাড়ি তৈরি করে দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন।

এ সময় মঞ্চে জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম,প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক,মুখ্য সচিব ড.কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী,মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম,প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো.আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। (বাসস)

ডেস্ক নিউজ
:আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৫:১০ পিএম,২৫ জুলাই ২০১৭,মঙ্গলবার
এজি

Leave a Reply