শীর্ষ সংবাদ

জেলা পরিষদ নির্বাচন : ফরিদগঞ্জে সম্ভাব্যদের একজন ছাড়া সবাই আ’লীগ

আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে দৌড় ঝাঁপ চলছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে গনসংযোগ করে যাচ্ছেন।

এছাড়া দলীয় সমর্থন আদায়ে শীর্ষ নেতাদের আর্শিবাদ প্রার্থনা করছেন। তথ্যমেত নভেম্বর মাসে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে জেলা পরিষদ নির্বাচন।

এদিকে উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে আগ্রহ যতসামান্য। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য যেহেতু দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে আ’লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা কারচুপির মাধ্যমে বিজয়ী হয়েছে। সেখানে প্রার্থী দিয়ে ফলাফল পক্ষে আসবে না।

জানা যায়, সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপির একজন ছাড়া বাকি সবাই আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতা।

নির্বাচন নিয়ে আ’লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের প্রভাবশালী নেতাদের দার¯’ হ”েছন নিজের প্রতি সমর্থন আদায়ে। অন্যদিকে বিএনপি ও অন্যান রাজনৈতিক দলের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তেমন কোন আগ্রহ বা উত্তাপ নেই।

নির্বাচনে ৭নং ওয়ার্ড ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩নং সুবিদপুর পূর্ব, ৪নং সুবিদপুর পশ্চিম, ৫নং গুপ্টি পূর্ব, ৬নং গুপ্টি পশ্চিম, ৭নং পাইকপাড়া উত্তর, ৮নং পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করা হয়েছে।

এ ওয়ার্ডে সদস্য পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম সিরাজুল ইসলাম বিএড এর ছেলে, ফরিদগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মো. মশিউর রহমান মিটু, উপজেলা আ’লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহাবুবুর রহমান টিটু, আ’লীগ নেতা মো. নজরুল ইসলাম পাটওয়ারী।

এ ওয়ার্ডের সদস্য পদে প্রার্থী মশিউর রহমান মিটু একজন পরি”ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসাবে সকল রাজনৈতিক দলের কাছে বহুল পরিচিত।

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া সর্ম্পকে মশিউর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমার বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আদর্শ শিক্ষক নেতা। তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলা আ’লীগ ও শিক্ষকদের সংগঠিত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমি আমার মরহুম পিতার দেখানো পথে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে চাই। সে ক্ষেত্রে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ইউনিয়নের জনগনের জন্য ডিপটিউবওয়েল, ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তা, মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়নের সুযোগ বেশি থাকবে। জেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে চাই।’

অপরদিকে সদস্য প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান টিটু মুন্সি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমার বাবা ২২ বছর ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। বহু বছর আগে থেকেই পারিবারিক ভাবেই আমরা সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের জনগণকে সাথে নিয়ে সাংগঠনিক রাজনীতি করে আসছি। মানুষের চাহিদা ও সরকারের কর্মকান্ডকে জনগনের দৌড় গোড়ায় পৌঁছে দিবো। এজন্য সকলের সহযোগিতা চাই।’

এদিকে নির্বাচনের ৮নং ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে ১১নং চরদু:খিয়া পূর্ব, ১২নং চরদু:খিয়া পশ্চিম, ১৩নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ(পৌরসভা), ১৪ নং ফরিদগঞ্জ উত্তর, ১৫নং রুপসা উত্তর ও ১৬নং রুপসা দক্ষিন ইউনিয়ন নিয়ে।

এ ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হ”েছন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিএস তছলিম. জেলা অ’লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম এ্যাড সিরাজুল ইসলাম এমপির বড় ভাই ডা. নূরুল ইসলামের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এড. জাহিদুল ইসলাম রোমানের জেডাতো ভাই পৌর আ’লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম রিপন, চাঁদপুর জেলা স’মিল মালিক সমিতির চেয়ারম্যান ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. নাছির উদ্দিন হাজী ও উপজেলা স্বে”ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন মিঠু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন।

উদীয়মান সংগঠক পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম রিপন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘ঐতিহ্যগত ভাবে আমি রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি জেলা পরিষদের উন্নয়ন বরাদ্দ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে সমন্বয় করে সুষম বন্টনের মাধ্যমে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য।’

অপরদিকে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত একমাত্র প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিন হাজী। জেলা স’মিল মালিক সমিতির নির্বাচনে যিনি হেভিওয়েট আ’লীগ ও বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘জনগণের সেবা করার জন্য আমি নির্বাচনে প্রার্থী হবো। এ নির্বাচনের ভোটার হচ্ছে চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। যেহেতু তারা নির্বাচিত প্রতিনিধি, তারা সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে ভুল করবে না। আমি সকলের দোয়া ও সমর্থন চাই।’

নির্বাচনের ৯নং ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে উপজেলার ১নং বালিথুবা পশ্চিম, ২নং বালিথুবা পূর্ব, ৯নং গোবিন্দপুর উত্তর, ১০নং গোবিন্দপুর দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর উপজেলার ২নং বালিয়া ও ৪নং বাগাদী ইউনিয়ন নিয়ে। এই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হ”েছন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খাজা আহম্মেদ ভূঁইয়া, উপজেলা সেক্টরস কমান্ডার ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আহছান হাবীব(অবঃ নেভী), উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী সফিকুর রহমান, চাঁদপুর সরকারি কলেজ শেরে বাংলা ছাত্রাবাসের সাবেক সভাপতি ও চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক ছাত্র নেতা মো. আব্দুস সালাম আজাদ জুয়েল, ১০ নং ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম ও মো. আবু জাফর।

আব্দুস সালাম আজাদ জুয়েল চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতে খড়ি। এখন পর্যন্ত মানুষের সেবা করেই আসছি। আমার দ্বারা মানুষের কোনো ক্ষতি হয়নি। জেলা পরিষদের সদস্য হয়ে তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের সেবা করতে চাই।’

আরেক প্রার্থী হাজী শফিকুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘নির্বাচিত হলে আমার দ্বারা জনগণের সেবা জনগণের নাগালে পৌঁছে যাবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ভোটার সেহেতু অস্বচ্ছ হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।’

এ সর্ম্পকে আহছান হাবীব চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমি দীর্ঘ দিন আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। জনগনের কল্যানের স্বার্থে অনেক কাজ করেছি। এছাড়া জেলা পরিষদের প্রশাসক লে. কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরীর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। জেলা পরিষদের কর্মকান্ড নিয়ে আমার বিস্তর অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিশেষ করে জেলা পরিষদের উন্নয়ন বরাদ্দ সুষ্ঠু ব্যবহার করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে সমন্বিত ভাবে কাজ করে যাবো।’

ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচনের সময় নিকটে আসার সাথে সাথে এসব প্রার্থী ছাড়াও আরো অনেকেই প্রার্থী হবেন।

: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০২:৪০ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

About The Author

প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম
Share