জেলা পরিষদের ১শ’ সোয়া ৩ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন

বঙ্গবন্ধু কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন- ২০৪১ বাস্তবায়নে একজন কর্মদক্ষ এবং পরিশ্রমী জনপ্রতিনিধি হিসেবে ২০১৭-১৭ অর্থ বছর হতে ২০২১-২২ অর্থ বছরে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক আলহাজ্ব ওসমান গণি পাটওয়ারী। তাঁর সফল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে চাঁদপুর জেলা পরিষদ এখন এই জেলার গণমানুষের আস্থার অন্যতম কেন্দ্রস্থলে পরিনত হয়েছে। গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি চাঁদপুর জেলা পরিষদ কর্তৃক জাতির শ্রেষ্ঠে সন্তান- বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান জানানো, গরীব অসহায়দের সাবলম্বি করা, গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দেয়া, গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান এবং করোনাকালীন সময়ে ১ লক্ষ উন্নত মাস্কসহ সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ বিগত পরিষদকে ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। এছাড়াও জেলা পরিষদ প্রঙ্গনে জেলার প্রথম ‘বঙ্গবন্ধুর মূঁর‍্যাল’ নির্মাণ, চাঁদপুর শহরের প্রবেশদ্বারে দৃষ্টিনন্দন ‘বঙ্গবন্ধু গেইট নির্মাণ, জেলা পরিষদ স্টাফ কোয়াটার নির্মাণ, প্রধান নির্বাহী কর্মকতার বাসভবন নির্মাণ, চাঁদপুর প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণ এবং হাজীগঞ্জ সুপার মার্কেট নির্মাণ জেলা পরিষদের উন্নয়ন কর্মকান্ডের অন্যতম সাফল্য।

চাঁদপুর জেলা পরিষদের কারিগরি শাখা সূত্রে জানা যায়, জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও সাবেক সফল চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গণি পাটওয়ারীর নেতৃত্বে ২০০১৬-১৭ অর্ধ বছর থেকে ২০২১-২২ অর্থ বছরে চঁাদপুরে অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বমোট ১০৩ কোটি ২৮ লক্ষ ২৭ হাজার ৫৫ টাকার গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে এডিপি খাত থেকে বরাদ্দকৃত ৪০কোটি ৭৬ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা ব্যায়ে ১ হাজার ৯শ’ ৫৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্দকৃত ৬২ কোটি ৫১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৫৫ টাকায় ব্যায় ২ হাজার ৭শ’ ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।

জেলা পরিষদ সূত্রে আরো জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছর হতে ২০২১-২২ অর্থ বছর পর্যন্ত ১ কোটি ৮৫ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা ব্যায়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬৮টি শহীদ মিনার নির্মাণ, গরীব অসহায়দের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ৮৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ব্যায়ে ৪০১টি রিক্সা/ ভ্যান বিতরণ, অসহায় নারীদের স্বাবলম্বি করতে ৩ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যায়ে ৩ হাজার ২শ’ ১৭টি সেলাই মেশিন বিতরণ এবং ২০২০-২১ অর্থ বছরে জেলা পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৩৮টি বসত ঘর এবং একই অর্থ বছরে ১০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ১টি বীরনিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ২০১৬-১৭ অর্থ বছর হতে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ২২৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ১০ লক্ষ ৮১ হাজার টাকার অর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। ৫ হাজার ৫শ’ জন গরীব ও অসহায় শিক্ষার্থীকে প্রায় ১ কোটি টাকার শিক্ষা অনুদান এবং ১৬শ’ মেধাবী শিক্ষার্থীকে ৩২ লক্ষ টাকার শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।

এছাড়াও মসজিদ, ঈদগাহ, কবরস্থান, মন্দির, শ্মশান, এতিমখানা, পাকা ঘাটলা নির্মাণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, পাকা রাস্তা নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণ, কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাঠাগার, নলকূপ, শৌচাগার, শহীদ মিনার, যাত্রী ছাউনী, নিজস্ব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করেছে চাঁদপুর জেলা পরিষদ।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক আলহাজ্ব ওসমান গণি পাটওয়ারী বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠির আর্থিক সামাজিক ও জীবনযাত্রার ব্যবস্থাপনার অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে একটি উন্নত জীবনব্যবস্থা গড়ে তুলতে জেলা পরিষদ কাজ করে চলেছে। রাস্তাঘাটের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জনপদে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অর্থায়ন করে থাকে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের কাজই হলো গ্রামীণ জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা। এর সাথে সম্পৃক্ত ধর্মীয় ও সামাজিক অবকাঠামো মানোন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন ও উন্নয়নে কাজ করা।

তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে পরিষদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমি আন্তরিকতার সাথে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি। আমাদের বিগত পরিষদের দায়িত্বকালীন সময়ে চঁাদপুর জেলা পরিষদ জেলা বাসীর কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিগত দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্ব ও নির্দেশনার মাধ্যমে কাজ করে গেছি। নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের শেষ সময় পর্যন্ত আমি এবং আমার পরিষদ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে ছিলাম, তাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেয়ার চেষ্ঠা করেছি। সমগ্র জেলা ব্যাপী মেধাবী অসহায় ও অসচ্ছল ছাত্রছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরন ও নগদ অর্থ, চেক বিতরন করেছি। জাতির পিতার আর্দশকে ছড়িয়ে দিতে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি বিতরন করেছি। অসহায়, দুস্থ্য, রোগী, কর্মহীন, গরীব মানুষের মাঝে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। পরিষদ থেকে পুরো জেলায় প্রায় সকল স্কুলে শহীদ মিনার নির্মান করেছি। জেলার বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়েও মসজিদ, মন্দির,উপাসনালয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আমরা অনুদান দিয়েছি। সাধারন মানুষকে শতভাগ সেবা দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে কাজ করেছি। চঁাদপুর জেলা পরিষদের এই সফল কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে বড় অংশীদার আমার পরিষদের সদস্য এবং কর্মকর্তাগণ। তঁাদের সহযোগীতার মনোভাব ছিলো বলে এবং তাদের কর্মদক্ষতার কারনেই আমরা সরকারের এতসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২

Share