সৌদি আরবের জেদ্দা হজ্ব টার্মিনালে বাংলাদেশের হজ যাত্রীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের (বিজি-১০১১) প্রথম ফ্লইটটি অবতরণের পর হজ্ব যাত্রীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে।
অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কনসাল জেনারেল এফ এম বোরহান উদ্দিন, বাংলাদেশ হজ মিশন মক্কার কাউন্সিলর (হজ) মাকসুদুর রহমান, সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে ডেপুটি মিনিষ্টার হজ্জ ও ওমরাহ্ ড. আব্দুল ফাত্তাহ্ মুসাঈদ, ডিজি হজ্জ জেদ্দা ইঞ্জিনিয়ার মরোয়ান সোলাইমানি, চেয়ারম্যান মোয়াছাচা ড. রাফাত ইসমাঈল বদর, ইউনাইটেড এজেন্সী চেয়ারম্যান ড. ফারুক বোখারী সহ সৌদি হজ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ মিশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
আগত সকল হজ যাত্রীদের শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে খেজুর, জায়নামাজ, ছাতি ও তসবিহ তুলে দেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ।
এবারের হজ্বে সৌদি হজ্জ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল হজ্জযাত্রীদের পাসপোর্টের পিছনের অংশে মক্কা ও মদিনায় থাকার হোটেলের ঠিকানা সম্বলিত স্টিকার লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এছাড়াও একই দিনে বাংলাদেশ বিমানের আরও তিনটি এবং সৌদি এয়ারলাইন্সের চারটি হজ ফ্লাইট সৌদি আরব আসার কথা রয়েছে। পাকিস্তান এবং ভারতের হজ যাত্রী বহনকারি উড়োজাহাজও মদিনায় অবতরণ করছে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব আসবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬ হাজার ৭৯৮ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার জন। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫২৮টি হজ এজেন্সি হজের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এদিকে হজযাত্রী পরিবহনে তিন বছরের অভিজ্ঞতা না থাকলে কোনও এয়ারলাইন্স কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না এমন নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে বাংলাদেশ বিমান। তাদের লিজ নেয়া দুটি বিমানই নিষেজ্ঞায় পড়েছে। তারপরও এখন পর্যন্ত কোনও সংকট নেই হজ ফ্লাইট নিয়ে।
চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের হজ ব্যবস্থাপনায় সহায়তার জন্য ৫১ সদস্যবিশিষ্ট হজ প্রশাসনিক দল-২০১৮ গঠন করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনিক টিমের সদস্যদের তিনটি উপ-দলে নির্বাচিত করা হয়েছে। তারা জেদ্দা, মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফা ও মুজদালিফায় দায়িত্বপালন করবেন।
নিযোগপ্রাপ্ত তিন কর্মকর্তার মধ্যে এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীকে মদিনায় ও মো. সাখাওয়াত হোসেন জেদ্দায় তিন মাস এবং মো.জহিরুল ইসলাম চার মাস মক্কায় দায়িত্ব পালন করবেন।
সৌদি আরবে অসুস্থ বাংলাদেশি হজযাত্রীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ১২১ সদস্যের হজ সহায়ক দল এবং ডাক্তার, র্নাস ও ফার্মাসিস্ট ও টেকনোলজিস্টদের নিয়ে গঠিত ২৩৭ সদস্যের হজ মেডিকেল টিম গঠন করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ঢাকা থেকে হজের শেষ ফ্লাইট ছেড়ে আসবে ১৫ আগস্ট। আর পবিত্র হজ পালন শেষে ২৭ আগস্ট থেকে প্রথম ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে। বাংলাদেশ বিমান ১৮৭টি ফ্লাইটে ৬৪ হাজার ৯৬৭ জন এবং সাউদিয়া এয়ারলাইনস ৬১ হাজার ৮৩১ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে।এরই মধ্যে সরকারি বেসরকারি মিলে এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ১৯ জনের হজ ভিসা হয়েছে। ঢাকার সৌদি দূতাবাসে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা আছে ৫০ হাজারের মতো।
বাংলাদেশ সময় ১৪ জুলাই শনিবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমানের প্রথম ফ্লাইট হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের জেদ্দায় রওয়ানা হয়। ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহাজান কামাল বিমানবন্দরে উদ্বোধনী ফ্লাইটে হজ যাত্রীদের বিদায় জানান।
উল্লেখ্য, গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে হজ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকেও এ বছর বিমানের যথাক্রমে নয়টি ও তিনটি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হবে।
সাগর চৌধুরী : সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট