Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক-পুলিশ সুপারের জুমার নামাজ আদায়
মসজিদ

হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক-পুলিশ সুপারের জুমার নামাজ আদায়

চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের মান্যবর জেলা প্রশাসক মহসীন উদ্দিন ১৪ মার্চ শুক্রবার রমজানের দ্বিতীয় জুমায় জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন পবিত্র রমজানের দ্বিতীয় জুমার নামাজের পর হাজার হাজার মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে রমজানের তাৎপর্য তুলে ধরে সংক্ষিপ্ত পরিসরে বলেন,‘ ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা.এর জীবনী সম্পর্কে তো আপনাদের জানা আছে। তিনি কত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও মসজিদে এসে নামাজ আদায় করতেন। তৎকালীন সময়ের একজন বৃদ্ধ বুড়ি মা ছিলেন। তিনি প্রতিনিয়ত নবীজির আসা-যাওয়ার পথে প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে কাটা রাখতেন। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা.ওই কাঁটাগুলো সরিয়ে মসজিদে আসা-যাওয়া করতেন।

তিনি এতই বিনয়ী ছিলেন যে একদিন কাঁটা বিছানো না দেখে খোঁজ নিলেন ওই বুড়ির। তখন তিনি জানতে পারেন যে তিনি অসুস্থ। পরে ওই বুড়ির বাড়িতে গিয়ে শয্যার পাশে বসে সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট দোয়া প্রার্থনা করেন। এক পর্যায়ে ওই বুড়ি মা জিজ্ঞেস করলেন,‘ কে তুমি বাবা ?’‘ তখন তিনি বললেন,‘ যার জন্য আপনি প্রতিনিয়ত পথে কাঁটা বিছিয়ে দেন- আমি সেই মোহাম্মদ।’পরে তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পেরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

অথচ আমাদের পথে কেউ কাঁটা দিলে আমরা বিনয়ী না হয়ে। তার উপরে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মনোভাব সৃষ্টি করতাম। তাই বলবো আমরা সবাই ধৈর্যশীল হই। ধৈর্যশীলের পাশে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আছেন। আমাদের নবীজি এতই বিনয়ী ছিলেন যে। সেটা ভাষায় বলে বোঝানো যাবে না। আমরা ওনার পথপ্রদর্শক হয়ে জীবন অতিক্রম করতে চাই। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন হিসেবে কবুল করে নেন আমিন। ’

তিনি আরো বলেন ,‘ হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের খতিব জেলার মাইল ফলক। সবাই উনাকে অনুসরণ ও অনুকরণ করবেন। তিনি জেলার ইমামদের প্রধান বলে মন্তব্য করেন।’ জুমার নামাজের খুৎবার দুটো অংশ। একটি হলো -মহান আল্লাহ ও প্রিয় নবীর গুণগান ,আদেশ-নির্দেশ ও আমাদের প্রতি দিক-নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা এবং অপরটি হলো-সমাজের নানা অসংগতি সম্পর্কিত কাজ থেকে দূরে থাকার বিষয়গুলো নিয়ে আলাচনা করা। খতিবগণ এটা করবেন।’

এ সময় চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম, হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন ফারুক, হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মোতয়ালীø প্রিন্স শাকিল আহমেদ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দসহ প্রায় অর্ধ-লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে মোনাজাতে অংশ গ্রহণ করেন।

হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের ভেতরে এবং বাহিরে কানায় কানায় পূর্ণ ও চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করার জন্য স্থান বেছে নেন। সড়কে বসার পূর্বে মসজিদের ভেতর, বাহির, নামাজের জায়নমাজ ও চাঁদর বিছিয়ে মার্কেটের অলিগলি এবং নামাজ উপযোগী স্থানে মুসল্লীরা নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে যান।

মান্যবর জেলা প্রশাসকের সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের খতিব মুফতি মাও. আব্দুর রউফ দেশ ও জাতির কল্যাণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন। মোনাজাতে আল্লাহুম্মা আমীন,আমীন ধ্বনিতে পুরো মসজিদ ও সামনের এলাকায় মুখরিত হয়ে ওঠে। আল্লাহকে রাজি-খুশি করতে ইমামের অশ্রুু ঝরা মোনাজাত হয়। চোখের পানি ধরে রাখতে পারলেন না প্রায় অর্ধ-লক্ষ মুসল্লি।

প্রয়াত বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনের কথা মনে করেও দোয়া করেন তিনি। তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে আল্লাহর কাছে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। মসজিদ থেকে বের হয়ে কিছুক্ষণ হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্সে বসেন । এসময় অধ্যক্ষ ড.আলমগীর কবির পাটওয়ারীর সাথে কর্মদন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

আবদুল গনি
১৪ মার্চ ২০২৫
এজি