সারাদেশ

জুমার আজানরত অবস্থায় মুয়াজ্জিনের চিরবিদায়

চাঁদপুর টাইমস, খুলনা:
২৮ আগস্ট শুক্রবার। জুমার দিন হওয়ায় সকাল থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মুয়াজ্জিন মাওলানা মো. শাহনুর আলম (৩০)। মসজিদ ঝাড়ু দেয়ার পাশাপাশি পরিষ্কার করেছেন আশপাশ। সাজিয়েছেন মসজিদের আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র। তারপর নিজেও প্রস্তুতি নিয়েছেন জুমার নামাজের। ঘড়ির কাটায় সময় যখন সাড়ে ১২টা ঠিক তখন শুরু করেন আজান। মসজিদসহ ওই এলাকায় তখন বিদ্যুৎ না থাকায় আইপিএস সংযোগ দিয়েই দিচ্ছিলেন আজান।

কিন্তু আজান শেষ হওয়ার আগেই বিদ্যুৎ ফিরে এলে মাইকের মাইক্রোফোন বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। সঙ্গেসঙ্গে তিনি স্পৃষ্প হয়ে আজান সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

খুলনা নগরীর ধর্মসভা মসজিদে দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও এক মুসল্লি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হয়েছেন।
মুয়াজ্জিন মাওলানা মো. শাহনুর আলম খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি গ্রামের মোল্লা ওলিউল্লাহ’র একমাত্র ছেলে। জুমার নামাজের পর যানাজা শেষে তার লাশ গ্রামের বাড়ি নেয়া হয়।

এদিকে, মুয়াজ্জিনের অকাল মৃত্যুতে জুমার নামাজে আসা মুসল্লিদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। মুয়াজ্জিনের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শোকাহত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা।

প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লি মো. মোজাম গাজী জানান, শুক্রবার ধর্মসভা মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা মো. শাহনুর আলম জুম্মার নামাজের আজান দেয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু ওই সময় বিদ্যুৎ না থাকায় তিনি আইপিএস চালিয়ে আজান শুরু করেন। আজান শেষ হওয়ার আগেই বিদ্যুৎ চলে আসে। এ সময় বিদ্যুতায়িত মাইক্রোফোনে হাতের স্পর্শ লাগার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ঝাকি দিয়ে উল্টে ফেলে দেয়। মুয়াজ্জিন মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন মনে করে তাকে উঠাতে গিয়ে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। কিন্তু কোনো রকমে বেঁচে যান তিনি। পরে দ্রত ইমামসহ অন্যদের খবর দেন। ততক্ষণে মুয়াজ্জিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

মুসল্লিরা জানান, মুয়াজ্জিন মাওলানা মো. শাহনুর আলম দীর্ঘ ৭ বছর ধরে ওই সমজিদের খাদেম কাম মুয়াজ্জিন হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছিলেন। খুলনা আলিয়া মাদরাসা থেকে কামিল পাশ করে খুলনা দারুল উলুম মাদরাসায় অধ্যয়ন করছিলেন তিনি।

Share