হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা-ঈদুল ফিতরের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ

হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা ও ঈদুল ফিতরের জামাত সম্পর্কে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মরহুম আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ. এস্টেট এর আওতাধীন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স ও অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষক মন্ডলী, এস্টেটের কর্মকর্তাগণ , স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানের টীমগুলোর সাথে সমন্বয় রেখে কর্ম-প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে ।

হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা আদায়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে ২১ মার্চ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স অফিস সূত্রে জানা গেছে ।

প্রাপ্ত তথ্য মতে , সরেজমিনে জানা যায়, প্রতি বছরই রমজান মাসের শেষ শুক্রবার হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা ও আল কুদস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এ জুমাতুল বিদা ও আল কুদস পালন উপলক্ষে রমজানের শেষ শুক্রবার সকাল থেকে মসজিদ ও এর আশপাশের এলাকায় গড়ে তোলা হয় ব্যাপক নিরাপত্তা বলয়।

কারণ হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে প্রথম আজানের আগেই মুসল্লিরা বেশি সাওয়াবের আশায় বড় মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য এ মসজিদের সুবিধাজনক জায়গায় স্থান করে নেন। এবারও রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাসের শেষ শুক্রবারে বিশেষ বয়ান রাখবেন এবং খোৎবা পাঠ ও নামাজ পড়াবেন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা মুফতি আ. রউফ।

হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা আদায়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণে ও দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন । তিনি বহু সংগঠনের একজন সফল সংগঠক, বিশিষ্ট শিক্ষা গবেষক, হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, আহমাদ আলী পাটওয়ারী রহ. ওয়াক্ফ এস্টেটের ড. মো. আলমগীর কবির পাটওয়ারীর সুযোগ্য সন্তান মোতওয়াল্লী সমাজ বিজ্ঞানী প্রিন্স শাকিল আহমেদ।

তিনি বলেন ,‘ মুসল্লিদের সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নামাজ আদায় করতে মসজিদ কমপ্লেক্সসহ প্রাঙ্গনে প্রয়োজনীয় কাপড়ের দস্তর বিছানোর ব্যবস্থা রাখা ও সামিয়ানা টানানো,পর্যাপ্ত ওযুরস্থান ব্যবস্থাকরণ,রাতভর এবাদতের জন্যে নিরবিচ্চিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা জোরদার,নামাজ ও আযানের সাইন্ডসিস্টেম বজায় রাখা,ওয়াশব্লক সম্পুর্ণ পরিস্কার-পরিছন্নতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ,রাতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ,জুমার দিনে মহিলাদের নামাজ আদায়ে প্রয়োজনীয় পর্দাসহ ওযুর ব্যবস্থা রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়ে থাকে ।’

হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা আদায়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণে তিনি আরোও বলেন,‘ সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা নামাজ আদায় করার লক্ষ্যে আলহাজ মরহুম আহমেদ আলী রহ. এস্টেট শতাব্দী কাল থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। তাই এত বড় আয়োজনে আগের মতোই সে¦চ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।

সমগ্র বাংলাদেশের একটি বিশেষ খ্যাতিমান মসজিদ হচ্ছে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ। অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর কারণে সাধারণ মানুষের কাছে এ মসজিদটি দৃষ্টি কেড়েছে। দানবীর আলহাজ¦ আহমদ আলী পাটোয়ারী (রহ.) হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের ওয়াকীফ, প্রতিষ্ঠাতা , প্রথম মোতওয়াল¬ী।

মসজিদের প্রতিষ্ঠাকাল ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ। ২৮,৪০৫ বর্গফুট আয়তনের এ বিশাল মসজিদটির রয়েছে- সুউচ্চু কারুকার্য খচিত একটি মিনার। এটি শুধু চুন-সুরকি আর ইট দিয়ে নির্মিত। উদ্যোক্তা এ মসজিদ নির্মাণের জন্য তিনি নিজেই ইটভাটা নির্মাণ করেছিলেন। মসজিদটি আহম্মদ আলী পাটওয়ারী রহ. ওয়াক্ফ এস্টেটের তত্ত¦াবধায়নে চলে আসছে। ঐতিহাসিক এ মসজিদের সাথেই আলীয়া মাদ্রাসা, হাফেজিয়া মাদরাসা, নূরাণী মাদরাসা, ফোরকানীয়া মাদরাসা, ইসলামীয়া পাঠাগার, বেওয়ারিশ লাশ দাফন এবং দু:স্থ-অসহায়দের সহযোগিতা প্রদানসহ ধর্মীয় কার্যাবলী চালু থাকায় ধর্ম প্রাণ মুসল্লিরা এ মসজিদে জুমাতুল বিদা নামাজ আদায় করতে অনেক দূর থেকে আসেন।

হাজীগঞ্জ উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্র, আহম্মদ আলী পাটওয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেটের মুতাওয়ালী সমাজবিজ্ঞানী প্রিন্স শাকিল আহমেদ বলেন ,‘ শুধু জুমাতুল বিদা নয়, ঈদুল-ফিতর,ঈদুল-আজহাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে এ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে মুসল্লি¬দের আধিক্যে প্রায়শই এখানে দেশের বৃহৎ নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। শিরেক ও বিদায়াত মুক্ত আদর্শ এখানে বেশ শক্ত ভাবেই অনুসরণ করা হয় বলেই জুমাতুল বিদা সালাত আদায়ে মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আসেন। আর আমরাও মুসল্লিদের সুন্দর পরিবেশে নামাজ আদায়ে সর্বোত্তম সুবিধা নিশ্চিত করাসহ সকল প্রকার ধর্মীয় ব্যবসা থেকে এখন পর্যন্ত আহম্মদ আলী পাটওয়ারী রহ. ওয়াক্ফ এস্টেটকে মুক্ত রেখেছি।’

তিনি বলেন, ‘ আহমাদ আলী পাটওয়ারী (র.) নিজ মালিকানাধীন সম্পত্তিতে বাড়ি-ঘর না বানিয়ে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে শতাব্দী কাল ধরে গণমানুষের সেবার জন্য সব কিছু দান করে গেছেন। তাঁর উত্তরসুরী হিসাবে আজও আমরা ধর্ম-কর্ম, শিক্ষা-দীক্ষা, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ গণমানুষের সেবার অনন্য প্রতিষ্ঠান হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্স, আহমাদ আলী পাটওয়ারী ওয়াক্ফ এস্টেট নামাজসহ প্রাসঙ্গিক এবাদতের জন্য ২৪ ঘণ্টা মসজিদ খোলা রাখার পাশাপাশি সেবা দিয়ে যাচ্ছি ।

বছরে লাখ-লাখ মানুষের নামাজের জন্য সেবা প্রদান, ওয়াজ মাহফিলসহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা প্রদান, রমজানের প্রতিটি জুমায় বিরাট প্যান্ডেল তৈরি , পবিত্র রমজান মাসে সম্মানীত রোজাদারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম, রোজাদার ও সম্মানিত মুসল্লিসহ এতেকাফকারীদের জন্য সাধ্যমত সুবিধা প্রদান,সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য বাজারের দোকানে পানি নেয়ার ক্ষেত্রে আর্সেনিক মুক্ত বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা, পয়:নিষ্কাশনসহ চব্বিশ ঘণ্টা পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের বিশাল অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, এস্টেটের সম্পদ-সম্পত্তি হেফাজত, সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, সম্মানিত ভাড়াটিয়াদের সেবার মানের ব্যবস্থানা নিশ্চিতকরণ, মাদ্রাসাসমূহের সংস্কার, উন্নয়ন ব্যবস্থাপনায় সাধ্যমত সহযোগিতা প্রদান, নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থাপনা।

নারী মসিল্লীদেও নামাজের ব্যবস্থাকরণ ,বাজারে অগ্নিনির্বাপনে তাৎক্ষণিক পানি সরবরাহের উন্মুক্ত ব্যবস্থা, দুঃস্থ, অসহায় ব্যক্তিদের সাধ্যমত দান-অনুদান প্রদান, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্থানীয় পর্যায়ে সহযোগিতা এবং সামাজিক কার্যক্রমে সাধ্যমত আর্থিক সহযোগিতা প্রদান, ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় দিবস সমূহ উদযাপনে সহযোগিতা প্রদান, মসজিদ ছাড়াও মার্কেট সমূহের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রহরী, সিসি ক্যামরা ব্যবস্থাপনাও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, সাধ্যমত ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান,ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দান অনুদান, বে-ওয়ারিশ লাশ দাফন ছাড়াও মৃত্যুর পর মসজিদের পাশে যারা শায়িত হওয়ার ইচ্ছাপুরণে উদ্যোগ গ্রহণ ।

এদিকে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ও সেবা দানে বেশ কটি স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানের টীম স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। রমজান মাসের ক্যালেন্ডার মতে -আগামি -স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম দায়িত্ব নিয়োজিত থাকা প্রতিষ্ঠানসমূহ হচ্ছে : হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, হাজীগঞ্জ পৌরসভা, হাজীগঞ্জ থানা, বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, হাজীগঞ্জ সবুজ সংঘ, হাজীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, হাজীগঞ্জ রোটারী ক্লাব, হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাব, হাজীগঞ্জ উপজেলা সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি, নিরাপদ সড়ক চাই হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখা, আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসা, আহমাদিয়া কাওমী মাদ্রাসা, আহমাদিয়া ফাউন্ডেশন, সবুজ ডেকোরেটর, সুজন ডেকোরেটর, সামাজিক সংগঠন প্রচেষ্টা, সামাজিক সংগঠন প্রভাত, হাজীগঞ্জ শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্ট, মাতৈন সমাজ কল্যাণ পাঠাগারসহ, স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।


এসব কার্যক্রম চালু থাকায় হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের প্রতি মানুষের আকর্ষণ রয়েছে। তাই প্রতি বছর জুমাতুল বিদায় হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের আশ-পাশে পুরো এলাকা মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে বিশাল জামাতে পরিণত হয়।

জুমাতুল বিদায় মুসল্লিদের মনোরম পরিবেশে নামাজ আদায়ের এবারও আহমাদিয়া আলীয়া মাদ্রাসা,আহমাদিয়া কাওমী মাদ্রাসা, রজনী গন্ধা মার্কেট, হাজীগঞ্জ টাওয়ার মার্কেট,হাজীগঞ্জ প্লাজা মার্কেটসহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী ভাইদের সহযোগিতায় পূর্ববাজার পুরোটাই নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব সে¦চ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের আন্তরিক সহযোগিতা নিয়ে সবার প্রচেষ্টায় হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জুমাতুল বিদা নামাজ আদায়ে মহান আল্লাহ ’র সহায়তা প্রার্থনা জানানো হচ্ছে। এছাড়া আসছে ঈদুল-ফিতরের নামাজের ৩টি জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে।

আবদুল গনি
২৫ মার্চ ২০২৫
এজি

Share