পবিত্র জুমাতুল বিদা ও আল-কুদস দিবস কাল

আগামিকার শুক্রবার জুমাতুল বিদা। রমজানের শেষ এ জুমা ইঙ্গিত দিচ্ছে পবিত্র এ মাসের বিদায়ের। তাই বিচ্ছেদের রক্তক্ষরণ চলছে মুমিন হৃদয়ে।

জুমার নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিরা আল্লাহর দরবারে মাগফিরাত কামনা করে কান্নায় ভেঙে পড়বেন। দু’নয়নে অশ্রুশিক্ত হয়ে ক্ষমা ও রহমত অর্জনের বড় সুযোগ এটি।

পবিত্র এ মাসের আর কয়েকটি দিন বাকি। এখনই হিসাব মিলাতে হবে,বিশ্বজনীন এ ক্ষমা ও পুণ্য লাভের মাসে আমার সংগ্রহ অনেক বেশি ।

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন,‘একবার রমজান মাস এলো,তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন,এ মাস তোমাদের কাছে এসেছে, এতে একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে,সে সব ধরনের কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হয়েছে। মূলত এর কল্যাণ থেকে চিরবঞ্চিত ব্যক্তিরাই বঞ্চিত ব্যক্তি। (ইবনে মাজাহ)।’

আলাদাভাবে কোনো ফজিলত না থাকলেও ইসলামের সূচনাকাল থেকেই রমজানের শেষ জুমাটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালিত হয়ে আসছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ দিন আগে আগে মসজিদে জড়ো হয়ে থাকেন।

জুমার নামাজ শেষে মসজিদে মসজিদে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আজও তেমনি করা হবে। রমজানের সংযম সাধনায় যেন আমাদের জীবন ও সমাজে শান্তি ও স্বস্তি ফিরে আসে, মাবুদের কাছে আজ সেই মিনতি জানাবে মুসলিম উম্মাহ।

এ দিনটি ঐতিহাসিক আল-কুদস দিবস হিসাবেও মুসলিম উম্মাহর কাছে পরিচিত। এটি মুসলমানদের প্রথম কেবলা পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাসকে দখলমুক্ত করার আন্দোলনের প্রতীকী দিন। এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে একাত্মতা এবং জায়নবাদ ও ইসরাইলের জেরুজালেম দখলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ।

ফাইল ছবি

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত,রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,যখন কদরের রাত হয়, তখন জিবরাঈল (আ.) ফেরেশতাদের দলসহ অবতীর্ণ হন এবং আল্লাহর প্রত্যেক এমন বান্দার জন্য দোয়া করেন,যারা দাঁড়িয়ে বা বসে আল্লাহর জিকির-বন্দেগি করতে থাকেন। যখন ঈদুল ফিতরের দিন আসে,তখন আল্লাহতায়ালা ফেরেশতাদের কাছে তাদের ব্যাপারে গর্ব করে বলেন,হে আমার ফেরেশতারা,যে শ্রমিক তার কার্য সম্পন্ন করেছে,তার প্রতিদান কী হতে পারে?

ফেরেশতারা জবাবে বলেন, ‘হে আমাদের প্রতিপালক,তার পারিশ্রমিক পুরোপুরি দেওয়া হচ্ছে। তখন আল্লাহ বলেন,হে আমার ফেরেশতারা,আমার যে বান্দা তার ওপর অর্পিত ফরজ যথাযথভাবে পালন করেছে,অতঃপর সে (নিজের ঘর থেকে ঈদগাহের দিকে) উচ্চৈঃস্বরে দোয়া করতে করতে বের হয়েছে-আমার সম্মানের কসম,আমি নিশ্চয় তার দোয়া কবুল করব।’

তারপর তিনি বলেন,‘তোমরা ফিরে যাও। আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাদের পাপগুলোকে পুণ্য দিয়ে পরিবর্তিত করে দিলাম।’

রাসূল (সা.) বলেন,‘তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করে। (বায়হাকি)।’ হে আল্লাহ,
আমাদের রোজাগুলো কবুল করে নিন। আমিন।

লেখক:মুফতি তানজিল আমির তরুণ আলেম,ধর্মীয় গবেষক ,
২৮ এপ্রিল ২০২২
এজি

Share