চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা নারী-পুরুষদের দাফন করছেন কচুয়া উপজেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী টিম। করোনার শুরু থেকেই একের পর এক মৃত ব্যক্তিদের দাফন কাজ সম্পন্ন করে যাচ্ছেন আলেম সমাজের একদল মানবতার প্রেমিক। পেশায় কেউ বা ইসলামী ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা,কেউবা মসজিদের ইমাম খতিব আবার কেউবা মাদ্রাসার শিক্ষক।
এ যাবতকাল প্রায় ২০/২৫জন মৃত ব্যক্তির দাফন কাফনের কাজ করেছেন ইসসলামি ফাউন্ডেশনের সদস্য টিম।
কচুয়া ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা (ফিল্ড অফিসার) মো: হাসান মজুমদারের নেতৃত্বে কচুয়া- হাজীগঞ্জ ইসলামী ফাউন্ডেশনের সদস্যরা করোনায় মারা যাওয়ায় মৃত ব্যক্তিদের গোসল, জানাযা ও দাফন কাজ সম্পন্ন করে। মহামারি করোনা এ দুর্যোগ এই করোনা যোদ্ধা ইসলামী ফাউন্ডেশন কচুয়া শাখার টিম ইতিমধ্যে কচুয়ায় ২৫জন মৃত ব্যক্তিদের দাফনের কাজ সম্পন্ন করেছেন।
প্রথমে ১০মে উপজেলার কাপিলা বাড়ির মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে আব্দুর রব মোল্লা (৫৫), ১১ মে জগতপুর গ্রামের অধিবাসী সায়েদ আলী মিয়া (৮৫), ১৭ মে মনপুরা গ্রামের হাফেজ জাকারিয়া মাহমুদ (৩৫), ১৯ মে পালগিরি গ্রামের শাহদাত হোসেন মানিক (৫০), ২০ মে কাদলা গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৫৫), ২৮মে পালগিরি গ্রামের মুজিবুর রহমান বাচ্চু (৭৫), একই গ্রামের ফজিতুল নেছা (৭০), ৩১মে সুবিদপুর গ্রামের আবুল হোসেন (৭০), ৯ জুন ১০নং গোহট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মুন্সী (৭০), ১২ জুন রাজাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, ১৩জুন নোয়াগাঁও গাজী বাড়ির এনামুল হক মোল্লা (৮০), ১৬ জুন মাঝিগাছা পাটওয়ারী বাড়ির আব্দুল জলিল (৫৪), তালতলী গ্রামের গোলাম মোস্তফা (৬০), ২৪জুন বরিশালের মেহেদীগঞ্জ উপজেলার আব্দুল হাকিমসহ মোট ১৪জন দাফন কাজ সম্পন্ন করেছেন। সর্বশেষ বর্তমান সময়ে নলুয়া গ্রামের আলী আকবর (৫৫),নুরপুর গ্রামের লুতফুর নাহার, সাতবাড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের লাশ দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য যে, কচুয়ায় ইতিমেধ্য ২৫ জন মৃত ব্যক্তিদের জানাজা ও দাফন করেছেন ইসলামী ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। যারা নিজের ও পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষার কথা চিন্তা না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনায় মারা যাওয়া মানুষের দাফন কাজ করছেন তাদের খবর রাখেনি কেউ।
এ ব্যাপারে কচুয়া উপজেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার মো: হাসান মজুমদার বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ণ দাস শুভের নির্দেশেনায় কচুয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন মানুষকে আমরা দাফন কাজে সহায়তা করেছি। কিন্তু কষ্ট লাগে যিনি মারা যাচ্ছেন তাদের পরিবারের অনেকের সহযোগিতা পাইনি। অনেকের পরিবার মৃত ব্যক্তিকেও দেখতে আসেনি। তবে আমরা এমন মৃত্যু আর চাই না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দু:খ একটাই আমরা জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে কাজ করার পরেও কারো কাছ থেকে অন্তত ধন্যবাদ টুকুও পাইনি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে অনেকেই করোনায় মারা গেলে আমাদের জানাতে চায়নি। আমরা খবর পেলে নি:স্বার্থ ভাবে দাফন কাফনে উদ্যোগ নেই। এদিকে ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের এমন দু:সাহসিক কাজকে স্বাগত জানিয়েছেন সচেতন মানুষ।
প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু, ৩ আগস্ট ২০২১