চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক :
সারাদেশে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের আওয়ামী লীগে বরণ করে নেওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে। এ নিয়ে ১৪ দলের মুখপাত্রের সামনেই শরিক দলের নেতারা আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মঙ্গলবার ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের গোলটেবিল বৈঠকে আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেন আরেক শরিক ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক।
তিনি ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের সামনেই বলেন, ‘সারাদেশে প্রকাশ্যে জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছে। আওয়ামী লীগও তাদের বরণ করে নিচ্ছে। এটা দুঃখজনক।’
জানা গেছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সারাদেশের জামায়াত-বিএনপির নেতারা আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন। অনেক ব্যবসায়ী জামায়াত-বিএনপি নেতা বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জামায়াত নেতাদের আওয়ামী লীগে যোগদানের সূত্রপাত ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বরে। এ দিন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের হাতে ফুল দিয়ে দলে যোগ দেন কুষ্টিয়া জেলা জামায়াত নেতা ও রোকন নওশের আলী। এরপর থেকে একে একে সারাদেশের জামায়াত-বিএনপি নেতারা আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া শুরু করেন।
চলতি বছরের ১২ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামায়াত নেতা আফজাল হোসেন পিন্টু আওয়ামী লীগে যোগ দেন। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীর চারঘাটের শলুয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন ৫ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্র পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত শলুয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান ও জামায়াত ক্যাডার হুমায়ুন। ভোটকেন্দ্র পোড়ানোর মামলায় আসামি মোখলেছুর রহমান পুলিশের চোখে পলাতক রয়েছেন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার জামায়াত নেতা জাহিদুল ইসলাম। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন। তিনিও সম্প্রতি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলে জামায়াত নেতাদের বরণ করে নেওয়ার ঘটনা দুঃখজনক। এভাবে চলতে থাকলে তো এক দিন এই দলেও প্রতিক্রিয়াশীলদের উত্থান ঘটবে।’
১৪ দলের আরেক শরিক বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব লায়ন এম এ আউয়াল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ঐতিহ্যবাহী দল। এই দলের যেমন হাজার হাজার সমর্থক রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ইসলামী শক্তির সমর্থক। এই দলে তো আর জামায়াতের মতো সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের দরকার নেই। তাহলে কেন তারা এমন করছে? এটা সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ‘১৪ দলে কোনো অসন্তোষ নেই। ১৪ দলে সবাই এক। এটা আদর্শিক জোট। এ জোটে কোনো ঝামেলা নেই। আমাদের দলীয় সিদ্ধান্তে অনেকের ভিন্ন মত থাকতে পারে। সেটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।’
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ০৬:০৯ অপরাহ্ন, ২২ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার ০৭ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি