প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২২ মিনিটে তিনি ভাষণ শুরু করেন।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে সাধারণ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বিষয় তুলে ধরেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘ আমি আশ্বাস দিচ্ছি, সাধারণ পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে পুরো অধিবেশনজুড়েই বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল আপনাকে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা দিয়ে যাবে। আমি আপনার পূর্বসূরি সাবা কোরোসিকেও ধন্যবাদ জানাই দক্ষতার সঙ্গে ৭৭তম অধিবেশন পরিচালনা করার জন্য।’
সরকারপ্রধান বলেন, বহুপাক্ষিক কূটনীতিকে জোরদারকরণ,জাতিসংঘের উপর অর্পিত দায়িত্বসমূহ পালন করার জন্য প্রচেষ্টা ও সাহসী বক্তব্য এবং বৈশ্বিক সঙ্কট উত্তরণে সুদূরপ্রসারী ও বাস্তবমূখী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসেকে সাধুবাদ জানাই।
এ বছর সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্কের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে:‘আস্থার পুনঃনির্মাণ এবং বিশ্বব্যাপী সংহতির পুনরুজ্জীবন: আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও জোরদার করে ২০৩০ উন্নয়ন কর্মসূচি এবং এর আওতাধীন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যসমূহ অর্জনের মাধ্যমে সকলের জন্য শান্তি,সমৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ।’ আমি মনে করি, বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ও জটিলতার প্রেক্ষাপটে এবারের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দক্ষতা ও বৈধতা নিয়ে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। এর ফলে একটা শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অর্জিত সাফল্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
করোনা মহামারি ও জলবায়ু সঙ্কটের প্রভাব এবং বিশ্বব্যাপি খাদ্য,অর্থায়ন এবং জ্বালানি নিরাপত্তার উপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়ন-লক্ষ্যসমূহ অর্জনে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘ জটিল এ সন্ধিক্ষণে বৈশ্বিক সংহতি রক্ষার্থে আস্থার পুনঃনির্মাণ এবং পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে আপনার আহ্বান আমাকে এ পরিষদে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের ভাষণের একটি বিশেষ উক্তির কথা মনে করিয়ে দেয়। ’
তিনি বলেছিলেন, ‘‘সাম্প্রতিককালে গোটা বিশ্বে যে অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি ন্যায়সঙ্গত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজে আমাদের আরও ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত…। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে আমাদের মধ্যে মানবিক ঐক্যবোধ-ভ্রাতৃত্ববোধের পুনর্জাগরণ। পারস্পরিক নির্ভরশীলতার স্বীকৃতিই কেবল বর্তমান সমস্যার যুক্তিসঙ্গত সমাধান ঘটাতে সক্ষম। বর্তমান দুর্যোগ কাটাতে হলে অবিলম্বে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দরকার।’
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
এজি