প্রশ্রাব বা যোনিজ নমুনা থেকে সহজে জরায়ু ক্যানসার শনাক্তে একটি পরীক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি করেছেন একদল ব্রিটিশ বিজ্ঞানী।
বর্তমানের যন্ত্রণাদায়ক ও আক্রমণাত্মক প্রক্রিয়ার বিকল্প হিসেবে এটির ব্যবহার করা যাবে বলে তারা মনে করেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে।
এতদিন বায়োপসির মাধ্যমে ক্যানসার শনাক্ত করে আসছেন চিকিৎসকেরা। এই প্রক্রিয়ার জন্য হিস্টারোস্কোপ নামের একটি সংকীর্ণ টেলিস্কোপের দরকার পড়ে। জরায়ুর ভেতরে পরীক্ষা ও কোষ সরাতে এটি ব্যবহার করা হয়।
গবেষকেরা বলছেন, অসহ্য যন্ত্রণা ও কারিগরি জটিলতার কারণে প্রায় এক তৃতীয়াংশ নারীর ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে হচ্ছে।
জরায়ু ক্যানসার না হওয়া সত্ত্বেও ব্রিটেনে হাজারো নারীকে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এতে রাষ্ট্র পরিচালিত জাতীয় স্বাস্থ্য সেবাকে (এনএইচএস) ব্যাপক অর্থনৈতিক ধকলের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা থেকে নতুন এই শনাক্তকরণ টুল উদ্ভাবন করা হয়েছে। এতে বাড়িতে বসেই নারী প্রশ্রাব ও যোনিজ নমুনা দিতে পারবেন।
ন্যাচার কমিউনিকেশন সাময়িকীতে এ সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। যাতে দাবি করা হয়, এই পদ্ধতিতে ৯১ দশমিক সাত শতাংশ নারীর জরায়ু ক্যানসার সঠিকভাবে শনাক্তের দাবি করা হয়েছে।
নতুন টুলে নমুনা পরীক্ষায় জরায়ু ক্যানসার নেই, এমন নারীদের মধ্যে ৮৮ দশমিক ৯ শতাংশের নেগেটিভ ফল এসেছে।
গবেষক দলের নেতা অধ্যাপক এমা ক্রোসবি বলেন, প্রশ্রাব ও যোজিন নমুনায় অণুবীক্ষণ দিয়ে নারীর জরায়ুর ক্যানসার শনাক্ত করা যাবে।
তিনি বলেন, এই পরীক্ষায় যাদের পজিটিভ ফল এসেছে, তাদেরকে আরও বিস্তারিত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু যাদের ফল নেগেটিভ—তাদের যন্ত্রণাদায়ক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়নি।
নারীদের যে ক্যানসার বেশি হয়, তাদের মধ্যে ষষ্ঠতম হলো জরায়ু ক্যানসার। ২০১৮ সালে নতুন তিন লাখ ৮২ হাজার নারী এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, আর মারা গেছেন ৮৯ হাজার ৯০০ জন।
বার্তাকক্ষ, ১৩ ফেব্রুয়ারি,২০২১;