চাঁদপুর সদর উপজেলার ১নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মধ্যমচরীতে দীর্ঘদিনের পুরনো ঝরাজীর্ণ কাঠের পুলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসি। যেখানে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ছোট্ট গ্রামে তিন চারশ পরিবার। অথচ সেই গ্রামে এবং স্কুলে যাতায়াতের জন্য নেই কোনো ভালো রাস্তা। তাই ঝুকি নিয়ে প্রতিদিন ওই জরাজীর্ণ কাঠের পুলটি দিয়েই যাতায়াত করছেন গ্রামবাসী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
এ কারণে প্রায় সময়ই ঘটছে ছোটখাট দুর্ঘটনা। পুলটি দিয়ে যাতায়াত কালে অনেক সময় পোল থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী পড়ে আহত হয়েছেন বলেও গ্রামবাসীর কাছে জানা গেছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও গ্রামবাসী চলাচলের জন্য মধ্যচরী গ্রামের এই পোলটি নতুন করে মেরামত করা খুব জরুরী হয়ে পড়েছে বলে ভুক্তভোগীরা মনে করছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১ নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডস্থ মধ্যমচরী গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বউবাজার থেকে মধ্যমচরী গ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং ওই গ্রামের বিভিন্ন পরিবারের লোকজন চলাচল করার জন্য খালের উপর যে কাঠের পোলটা রয়েছে। সেটি একেবারেই জরাজীর্ণ অবস্থা। পোলটি দিয়ে যখন মানুষজন চলাচল করে, তখন সেটি যেন হেলে দুলে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়ে যায়।
খালের উপর পুলটি বিদ্যমান থাকলেও সেটির অধিকাংশ কাঠ পচে, ভেঙ্গে গেছে এবং অনেক স্থানের কাঠ উঠে গিয়ে ফাঁকা হয়ে আছে। এমন ঝরাজীর্ণ পোলটি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ জন খুবই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
মধ্যমচরী গ্রামের মোঃ আলমগীর হোসেন, মাওলা বেপারী, আলমগীর বেপারী, আলী হোসেন সহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, ১০/১৫ বছর পূর্বে ওই গ্রামের লোকজন বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতো। এক সময় গ্রামবাসীরা সকলে মিলে টাকা উঠিয়ে একটি কাঠের পোল নির্মাণ করেন। তারপর থেকে এই কাঠেরপুল দিয়েই গ্রামবাসী এবং মধ্যমচরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে আসছে।
তারা জানান, মধ্যমচরী গ্রামে প্রায় তিন চারশো পরিবার বসবাস করছে। একই সাথে মধ্যমচরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে প্রায় দেড় থেকে ২,শ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। গ্রামবাসীরা এবং এই স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা এটি দিয়েই প্রতিদিন চলাচল করে থাকে। কাঠের পুলটি জরাজীর্ণ অবস্থা হওয়ায় চলাচল করতে গিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫/৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী পুল থেকে খালের পানিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এজন্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা এবং গ্রামবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে এখানে কি নতুন করে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা খুব জরুরী প্রয়োজন।
এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকার ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ কাশেম বেপারীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মধ্যমচরী গ্রামের এই পুলটি নির্মাণের জন্য আমি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে বলেছি। সেখানে কাঠের পুল ভেঙ্গে নতুন করে ব্রীজ নির্মাণের জন্য ৯৭ লাখ টাকার টেন্ডারও অনুমোদন হয়েছে। কিছুদিন পূর্বে কয়েকজন প্রকৌশলী গিয়ে ব্রীজ নির্মাণের জন্য সেখানকার মাটিও পরীক্ষা করেছেন। আশা করি খুব সহসাই ব্রীজ নির্মাণের কাজ ধরা হবে।
প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি,১১ এপ্রিল ২০২১