চাঁদপুরের কচুয়ায় অযত্ন ও অবহেলা পড়ে আছে রায় বাহাদুর শরৎ চন্দ্র সেন চৌধুরী জমিদার বাড়ি। এক সময়ের খ্যাত জমিদার বাড়িটি এখন পরিত্যক্ত বাড়িতে পরিণত হয়েছে। বাড়িটির চারদিকে খসে পড়ছে পলেস্তরা, জমে আছে শ্যাওলা। ভিতরে ময়লা আবর্জনায় জমে এখন জরাজীর্ণ অবস্থায়।
জানা যায়, বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইতিহাস আর ঐতিহ্য। তারই মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ কচুয়া উপজেলা। কচুয়া সদর থেকে প্রায় ১৮ কি.মি. দূরে অবস্থিত এ জমিদার বাড়িটি। উপজেলার ২নং পাথৈর ইউনিয়নের পাথৈর গ্রামে প্রায় ২শ বছর সালে নির্মিত হয় এ জমিদার বাড়ি। জমিদার শরৎ চন্দ্র সেন চৌধুরী ছিলেন এই বাড়ির নির্মাতা। দোল মন্দির, শিব মন্দির, দুর্গা মন্দির সহ বিশাল এক দীঘি আছে জমিদার বাড়ির আঙ্গিনায়। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় জমিজমা ও বিশাল সহায় সম্পত্তি রেখে ভারতে চলে যান জমিদার শরৎ চন্দ্র সেন চৌধুরী ও তার পরিবার। ওই সময়ের বাসিন্দাদের এমন কেউ ছিলো না যে তখনকার জমিদার রায় বাহাদুর শরৎ চন্দ্র চৗধুরীকে চিনতেন না।
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জমিদার বাড়ি এখন পরিত্যক্ত বাড়িতে পরিণত হয়েছে। অথচ বাড়িটিকে ঘিরে রয়েছে পুরানো ইতিহাস। এখানে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল দিঘি, মাঠ এবং কারুকার্য জমিদার বাড়ি। এই ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িটি অবহেলিত থাকলেও শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর আনাগোনা থাকে সব সময়। বাড়ির মূল প্রবেশপথের পশ্চিম পাশেই রয়েছে একটি পুকুর। পুকুরটিতে রয়েছে সুন্দর একটি ঘাট। জমিদার বাড়িটি পুরানো হওয়ার কারণে বাড়ির চারদিকের পলেস্তরা খসে পড়ছে। অথচ সংস্কারের মাধ্যমে এটা হতে পারে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের জন্মের পরে থেকেই এই জমিদার বাড়িটি দেখছি। আমাদের পূর্ব পুরুষদের কাছে শুনেছি প্রজাকল্যাণ ও বিভিন্ন ধরনের জনহিতকর কাজে জমিদার পরিবারের সদস্যদের খ্যাতি ছিল। তবে আজ সেই জমিদার বাড়ির জমিদারি নেই, নেই কোনো উত্তরসূরিও। বর্তমানে প্রাসাদের অনেকাংশ প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে, ভবনগুলো শ্যাওলা পরে আছে। স্থানটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংস্কারের ব্যবস্থা নিলে এটি রক্ষা করা সম্ভব হবে। আর না হয় এটি একসময় হারিয়ে যাবে পাথৈর গ্রামের এই জমিদার বাড়িটি।
প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ২৩ মার্চ ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur