নিজের জমিতে উৎপাদিত খাদ্যশস্য দান করে দেন হাজী মো. কাউছ মিয়া

চাঁদপুর মেঘনা নদীর পশ্চিম তীরে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের ৬৪ একর অনাবাদি জমিকে আবাদ করে ফসলি জমিতে রূপান্তর করেছেন দেশবরেণ্য ব্যবসায়ী ও দানবীর হাজী মোঃ কাউছ মিয়া। কোন ব্যবসায়ীক চিন্তা থেকে নয়,এই বিস্তৃত জমিতে উৎপাদিত ফসল তিনি ওই এলাকার অসহায় গরীব মানুষের মাঝে দান করে দিচ্ছেন।

শুধু তাই নয় নদীতীরের এই জমিতে গড়ে তুলেছেন বিশাল ৩টি গরুর খামার। যেখানে দৈনিক হাজিরা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এলাকার কর্মহীন শতাধিক মানুষ।

এই মানবিক কর্মকাণ্ডের সাথে নানানভাবে যুক্ত হয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মস্থান হয়েছে। এমন ভিন্ন চিন্তার মানবিক কাজে চরাঞ্চলের মানুষদের কাছে প্রশংসার জোয়ারের ভাসছেন চাঁদপুরের কৃতি সন্তান ও দেশের শ্রেষ্ঠ করদাতা হাজী মোঃ কাউছ মিয়া।

সরেজমিনে চাঁদপুর সদর উপজেলা রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বাঁশগারি চরে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত প্রত্যন্ত চর এলাকা বাঁশগারি চর। সেখানে নদীবেষ্টিত ৬৪ একর অনাবাদী জমি বছর দেড়েক আগেও পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো। আগাছা আর জঙ্গলঘেরা সেই জমিতে এখন ধান-পাটসহ সবুজ ফসলের হাতছানি। জমির ধানে পাক ধরেছে। পাশে বিশাল গরুর খামারে প্রকৃতিক খাবার খেয়ে আর লালনপালন মোটাতাজা হচ্ছে ১১৫টি গরু। আর এসব পাহারায় মানুষের পাশাপাশি রয়েছে ঘোড়া এবং বিদেশি কুকুর।

গরুর খামারে দায়িত্বরত সাইফুল আলম জানান, বর্তমানে খামারে ১১৫ টি গরু রয়েছে। আমরা ১০ জন শ্রমিক খামারে কাজ করছি। হাজী মোঃ কাউছ মিয়ার কারণে এলাকার অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

গরুর খামার ও খেতে কর্মরত স্থানীয় যুবক মহসিন হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমরা এখানে কাজ করে যা উপার্জন করি, তা দিয়ে বাবা-মা ও স্ত্রী সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছি। এজন্য আমরা কাউছ সাহেবকে মন থেকে দোয়া করি।

হাজী মো. কাউছ মিয়ার চাঁদপুরের প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসেন দেলু দর্জি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, এই ইউনিয়নের মুগাদি ও বাঁশগারি চরে চাঁদপুরের কৃতি সন্তান হাজী মোঃ কাউছ মিয়া খরিদসূত্রে মালিকানাধীন দেড়শত একর জমি রয়েছে।

এছাড়াও মুগাদি চরে ৮নং সিটে তাঁর ৮একর ৪১ শতাংশ বাড়ির সম্পত্তি রয়েছে। বাঁশগারি চরের ৬৪ একর জমি দীর্ঘদিন যাবত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। এখানে আগাছা আর জঙ্গল বাসা বেঁধেছিল। গত এক বছর আগে হাজী মো.কাউছ মিয়া এই অনাবাদি জমিকে আবাদের উপযোগী করে তোলার জন্য আমাকে নির্দেশ দেন।

তিনি চেয়েছেন এই জমি পরিত্যক্ত না থেকে এখানে নিজের টাকায় ধান-পাঠ চাষ করে তা গরীব মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিবেন। তার নির্দেশে আমরা এই জমিতে হাল চষিয়ে ফসল উৎপাদনের উপযোগী করে তুলেছি।

বর্তমানে এখানে ধান ও পাট চাষ করা হচ্ছে। এখানে উৎপাদিত এক তোলা ধান কিংবা অন্যান্য ফসল হাজী মো. কাউছ মিয়া নিজের জন্য না রেখে সব এলাকার গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে দেন। শুধু তাই নয়, এ প্রজেক্টের কারণে এই এলাকার শতাধিক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। বাকি অনাবাদি জমিগুলোকেও চাষের উপযোগী করে ফসল চাষ করা হবে বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের কৃতিসন্তান, দেশ বরন্য ব্যবসায়ী হাজী মো.কাউছ মিয়া শুধু দেশের শীর্ষ করদাতাই নন, তিনি একজন দানবীর।

দেশের যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়-বন্যা এমনকি মহামারী করোনাকালেও তিনি হাজার হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা ও নগদ অর্থ অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন। তার মানবিক কর্মকাণ্ড দেশজুড়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। 

প্রতিবেদকঃ আশিক বিন রহিম, ৬ জুলাই ২০২১

Share