চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় বহু বছরের পুরনো প্রবাহমান একটি জনগুরুত্বপূর্ণ খাল খননে বাঁধায় পড়ে ৪ হাজার একর কৃষি জমিতে আবাদ করতে না পেরে পানির জন্য হাহাকার করছেন কৃষকরা। খাল থেকে পানি সংগ্রহ করতে না পেরে ফসলী জমিতে বোরো, ইরিগেশন, ডাল, মরিচ, বাদাম ও পানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করতে করতে পারছেন না কৃষকরা।
কৃষি জমি বাঁচাতে খালটি পুনরুদ্ধারের দাবিতে কৃষি কাজ ছেড়ে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করে এ নিয়ে একটি বিশাল মানবন্ধন করেছেন হাইমচর উপজেলার চরভাঙ্গা ও চরপোড়ামুখী গ্রামের ভুক্তভোগী কৃষকরা।
প্রবাহমান একটি জনগুরুত্বপূর্ণ খালে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করার প্রতিবাদে ১১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বেলা ১২ টায় উপজেলার ৩ নং আলগী দুর্গাপুর ইউনিয়নের চরভাঙ্গা ও চরপোড়ামুখী গ্রামে মানববন্ধন করেন স্থানীয় ভুক্তভোগী কৃষকরা।
মানববন্ধন চলাকালে স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রায় বৃটিশ শাসনামল থেকে এই ৪ হাজার একর কৃষি জমির পানি নিষ্কাশন ও প্রায় ৭ হাজার পরিবারের সুবিধার্থে এই খাল দিয়ে বর্ষার পানি প্রবাহিত হতো কিন্তু বর্তমানে পূর্ণচন্দ্র চরণ মহাজনের ছেলে শ্যামল চন্দ্র মহাজনসহ কিছু প্রভাবশালী অসাধু ব্যক্তি তাদের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য খালের মধ্যে বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের বাঁধা প্রদান করে আসছে। এতে করে এলাকার বহু কৃষক পরিবার চরম বিপাকে পড়েছে।
কৃষকদের বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন ও শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়াও জমিতে বর্ষা মৌসুমে বিলের পানি আটকে থেকে ফসলের ক্ষতি বেশকিছু বাড়ি-ঘর রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যায়।
এই অঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল হাওয়ায় বোরো, ইরিগেশন, ডাল মরিচ বাদাম ও পান চাষের জন্য পানি প্রবাহ ও নিষ্কাশনের জন্য খালটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ।
তারা আরো জানান, এই খালটি ভরাট থাকায় স্থানীয় জনগণ সমস্যার সম্মুখীনের ফলে স্থানীয় চেয়ারম্যান সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৮ সালে খালটি পুনঃখননের ব্যবস্থা করেন।
এদিকে খাল খননে বাঁধ দিয়ে বাঁধাগ্রস্তরা এবং ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে হাইমচর থানা পুলিশ তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়ে তা পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে ৩ নং আলগী দুর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাস্টার জানান, প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকার শত শত পরিবারের সুবিধার্থে এই খালটি কয়েক বছর পূর্বে পুনঃখনন ও রাস্তার মধ্যে কালভার্ট নির্মাণ করেছি। খালটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কিছু সংখ্যক লোক পানি নিষ্কাশনের বাঁধা প্রদান করছে বলে আমি জানতে পেরেছি। এছাড়াও খালটি উদ্ধারে কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও হাইমচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে বলে আমি অবগত হয়েছি।
প্রতিবেদকঃ কবির হোসেন মিজি,১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২