পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া-ধনাগোদার আর্শির্বাদপুষ্ট দেশের অনন্য এক জেলার নাম চাঁদপুর। নদী বিধৌত এই জনপদ তার গর্ভে ধরেছেন দেশবরেণ্য বহু সূর্যসন্তানকে। যারা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, চিকিৎসা, শিল্প-সাহিত্য, সাংস্কৃতি কিংবা ক্রীড়া জগতকে সমৃদ্ধ করণে রেখেছেন বিশেষ ভূমিকা।
চাঁদপুরর নতুন প্রজন্মের কাছে এই গুণি মানুষদের পরিচয় করিয়ে দিতে ‘চাঁদপুর টাইমস’ এর আয়োজন ‘দ্যুতিময় চাঁদপুর’। ধারাবাহিক এই আয়োজনে আজ থাকছে প্রখ্যাত টিভি উপস্থাপক এবং অভিনেতা শফিউল আলম বাবুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক ও অভিনেতা শফিউল আলম বাবু। টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় এবং উপস্থাপনার পাশাপাশি আবৃত্তি, মূকাভিনয়, পাপেট শো, বিজ্ঞাপন ও প্রতিবেদনে কণ্ঠদান, বিদেশি ছবি ও সিরিয়ালের ডাবিংসহ সংস্কৃতি অঙ্গনের নানা শাখায় সফলতার সাথে কাজ করেছেন তিনি। তবে বিটিভিতে প্রচারিত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘সপ্তডিঙা’য় উপস্থাপনার মাধ্যমেই দর্শকনন্দিত হয়ে ওঠেন। এরপর একে একে বহু নাটক ও বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে ব্যাপক
দর্শকপ্রিয়তা পান। নাট্যপাড়ায় দীর্ঘ পথচলায় নাট্যাশ্চর্য সেলিম-আল-দিনসহ দেশবরেণ্য বহু গুণী ব্যক্তিবর্গের সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি।
শফিউল আলম বাবু ২১ মার্চ চঁাদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পঁাচ ভাই ও বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চাঁদপুর শহরে। পারিবারিক জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। তঁার স্ত্রী নাবিলা আলম পলিন একজন অভিনয়শিল্পী। পুত্র অন্তিক ও কন্যা অর্পাও ক্ষুদে অভিনয়শিল্পী। চাঁদপুরে শিক্ষাজীবন শুরু করে পরবর্তীতে ঢাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন।
ছোটবেলা থেকে সংস্কৃতির প্রতি প্রেম জন্মায় তার। ১৯৮৩ সালে চাঁদপুর সুপ্রতিষ্ঠিত বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠীর সাথে ‘জমিদার দর্পণ’ নামে প্রথম মঞ্চনাটক করেন তিনি। এরপর লেখাপড়ার সুবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে থিয়েটারে কাজ করার সুযোগ পান। তখন প্রখ্যাত নাট্যকার সেলিম-আল-দীনের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা পদাতিকের সাথে কাজ করছেন। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাট্যশিল্পী হিসেবে প্রথম টিভিতে অভিনয় করেন। তঁার অভিনীত প্রথম নাটক গোলাম মোস্তফা সংগ্রাম পরিচালিত ‘বেলা শেষে’।
শফিউল আলম বাবু অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছেÑ চন্দ্র গ্রহণ, কালা কইতর, মাধবী লতা, হানিমুন পর্ব, বুমেরাং, অহংকার, ভালোবাসা ভালো না, গুলশান এভিনিউ, কাচের পুতুল, নিশিগন্ধা, মায়ানিগম, সেকেন্ড ইনিংস, উত্তরাধিকার, ছবির হাট, মাকড়শা, বড়মিয়া, নিশীগন্ধা, মায়া নিগম, গীতিকার, মাধবীলতা, রঙ্গিলা, বাংলার বার ভূঁইয়া ও টেলিফিল্ম-বৃদ্ধাশ্রম।
এছাড়াও তিনি টেলিভিশনে বহু বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন। তিনি মাইম (মুখাভিনয়), আবৃত্তি সংগঠন পাপেট এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। উপস্থাপনা ও অভিনয়ের প্রয়োজনে তিনি পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন।
কর্মজীবনে স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, টেলিভিশন রিপোর্টারস অ্যাওয়ার্ড অব বাংলাদেশ, টেলিভিশন দর্শক ফোরাম পুরস্কার, কালচারাল জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বিনোদন সাংবাদিক সমিতি, আর্টিস্ট-জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ, বিনোদন ধারা পারফরমেন্স পুরস্কার ও মাওলানা ভাসানী স্মৃতি পুরস্কার ।
লেখক : আশিক বিন রহিম, সাহিত্য ও সংবাদর্মী,৯ অক্টোব