চাঁদপুর শহরের রমহতপুর আবসিক কলোনির ভুইয়া বাড়িতে শনিবার রাতে কোহিনুর বেগম (৪০) নামের ৩ সন্তানের এক জননিকে জবাই করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত কোহিনুর বেগম একই এলাকার ৯০ নং প্রতিজ্ঞা ভিলার প্রবাসি আব্দুল মান্নান খানের স্ত্রী। তার রিপন, সিপন ও তানজিল নামের ৩ ছেলে রয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে একই এলকার নয়ন বেগমের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। এসময় কোহিনুর বেগমের গলাকাটা লাশটি নয়ন বেগমের খাটের নিচে লুকানো অবস্থায় দেখা গেছে। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ লাশ ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে গেছে। তবে হত্যাকারীকে এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে ওই বাড়ির মালিক নয়ন বেগম (৩৫) এর ৫ম শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়ে তন্নী (১২) এর বক্তব্যের সূত্রে স্থানীয়রা নয়ন বেগমকে খুনি হিসেবে ধারণা করছেন। (মেয়েটির বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড প্রতিবেদনের নিচে দেয়া হলো)
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে নয়নের বাড়ির এক শিশু মহিলার গলা কাটা লাশটি দেখতে পায়। পরে তার ডাক চিৎকারে এলাকাসী ছুটে এসে লাশটি সনাক্ত করে পুলিশ খবর দেয়। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম এনায়েত উদ্দিন পিপিএম ঘটনাস্থালে ছুটে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এলাকার বেশ কয়েকজন জানায়, কোহিনুর বেগমের সাথে অভিযুক্ত নয়ন বেগমের টাকা ও সমিতি কেন্দ্রিক লেনদেন ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে সে সূত্রে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
স্বামী আব্দুল মান্নান গত ৫দিন পূর্বে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে আসে। তিনি বর্তমানে ঢাকায় রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক আরো স্থানীয় ক’জন জানায়, রাত সাড়ে ৭টার দিকে একজন মহিলাকে রত্তাক্ত অবস্থায় ছেঁড়া কাপড় নিয়ে দৌাড়ে পালিয়ে যেতে দেখেছে।
কোহিনুর বেগমের বড়ির ভাড়াটিয়া জানায়, ঘটনার দিন মাগরিবের নামাজের পর তিনি ঘর থেকে বেড়িয়ে নয়নের বড়িতে যায। পরে রাত সাড়ে ৯টায় আমরা এই খবর শুনতে পাই।
কোহিনুরের ছোট ছেলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ায় সরাসরি তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে সে অজ্ঞান হওয়ার পূর্বে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদেরকে জানায়, ‘মাগরিবের পর থেকে আমি মাকে অনেক খোজাখুঁজি করে পাই নি এবং মোবাইল বন্ধ’ এ কথা বলতেই তানজিল ঘটনাস্থলে মায়ের লাশ দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
অভিযুক্ত নয়নের মেয়ে তন্নী (১২) এর সূত্রে জানা যায়, তারা দু’বোন মিলে পাশের রুমে টিভি দেখা অবস্থায় তাদের মা নয়ন ও কহিনুর বেগমের চিৎকার ও দস্তাদস্তির আওয়াজ শুনতে পায়। এতে তারা রুমে দরজার খুলতে বললে তাদের মা দরজা না খুলে ভিতর থেকে উল্টো আওয়াজ দিয়ে বলে কিছু হয় নি। এর কিছুক্ষণ পর পুনরায় ওই রুমে কাছে গিয়ে তারা দরজা খোলা দেখতে পায়। তবে এ অবস্থায় এবং তারা তাদের মাকে কিংবা কোন লাশ তখনও দেখতে পায় নি।
এদিকে নয়ন বেগমের বিরুদ্ধে এলকাবাসীর নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিতো। তারা সাথে এলাকার অনেকের সাথে বহুবার ঝগড়া হয়েছে। এছাড়াও তার সাথে বহু পুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তৎক্ষনাৎ খুনের অভিযুক্ত নয়ন বেগম (৩৮) কে খুঁজে পায় নি পুলিশ। অভিযুক্ত নয়নের মেয়ে স্বপ্না আক্তার তিশা (১৭) ও তন্নী (১২) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
অপর দিকে ঘটনার পরপরই নয়ন বেগমের বাড়ির বাড়াটিয়াসহ সকলেরই পালাতক রয়েছে।
মেয়েটির বক্তব্যের ভিডিও…
চাঁদপুর টাইমস- প্রতিনিধিবৃন্দ/ডিএইচ/2015।>