জনগণই ক্ষমতার উৎস তুরস্ক তা প্রমাণ করেছে : প্রধানমন্ত্রী

তুরস্কের সেনা অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সব সময় অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে। তুরস্কের জনগণ সেনা অভ্যুত্থান মোকাবেলা করে প্রমাণ করে দিয়েছে জনগণই ক্ষমতার উৎস।

রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন আসেম সম্মেলনে তখনই ফ্রান্সে হামলার ঘটনার খবর আসে। আমি তখনও নিন্দা জানিয়েছি, এখনও নিন্দা জানাচ্ছি। এরপরই তুরস্কের সেনা অভ্যুত্থানের খবর আসে।

তিনি বলেন, আসেম সম্মেলনে আমি আমার বক্তব্যে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা তুলে ধরি। পাশাপাশি জঙ্গিবাদের মদদদাতা, অর্থদাতা, অস্ত্রদাতাদের খুঁজে বের করতে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসেম সম্মেলনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি আমি বাংলাদেশের গুলশানে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে জাপানের প্রধানমন্ত্রী, ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতিকে সরকারের চলমান তদন্ত সম্পর্কে জানাই।

উগ্রবাদী চিন্তাকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা যাদের জীবনে কোন কিছুর অভাব নেই, চাওয়া পাওয়া নেই তারা এখন বেহেশতের হুর-পরী পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। মানুষ খুন করলে বেহেশতের দরজা খুলবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আগে সবাই মনে করতো মাদরাসার ছাত্র জঙ্গি হয়। এখন দেখা যাচ্ছে উচ্চবিত্ত, তাদের সব চাহিদা পূরণ হচ্ছে এখন আর কিছু না পেয়ে মানুষ হত্যায় নেমেছে। তারা (হামলাকারী) এখন বেহেশতে হুর-পরী পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। তারা এখানে কেন আসলো? এটার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। মানুষ খুন করলে বেহেশতের দরজা খুলবে না। যারা তাদের এই শিক্ষা দেবে এটা ভুল। আমি সাংবাদিকদের বলবো, আপনারা একটু খুঁজে বের করুন তারা (হামলাকারী) কেন মানুষ খুন করছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি চালু করা হবে কি না সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতি কিন্তু বাংলাদেশে নিষিদ্ধ না। আমাদের সবার শুরুটা কিন্তু ছাত্ররাজনীতি। আমরা স্কুল পালিয়ে চলে আসতাম। যার যার প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়ম নীতিমালা অনুযায়ী চলছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে মদদ দেয়া খুব দুঃখজনক।

বাংলাদেশের গুলশানে ঘটে যাওয়া ঘটনায় বিশ্ব মিডিয়ায় বড় করে দেখানো কোন ষড়যন্ত্র কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে এইভাবে প্রচার করা আমাদের দেশ থেকেই বেশি হয় না? বিশ্বে যখন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, তখন বিশ্ব নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আসেম সম্মেলনে যখন বসলাম তখন প্রত্যেকে এজেন্ডায় যাই থাকুক ফ্রান্সের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। তারপর আসলো তুরস্কের ঘটনা।

তিনি বলেন, বিশ্ব মিডিয়ায় লাইভ দেখানো হয়। কিন্তু আমাদের দেশের মিডিয়ার মতো কোথায় লাশ পড়ে আছে, রক্ত লেগে আছে সব কিছুই দেখিয়ে দেয়। একটা ঘটনা ঘটছে তখন যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে সেটাও মিডিয়ায় বলে দেয়া হচ্ছে। যখন আমাদের মিডিয়াগুলোতে এগুলো বেশি প্রচার করা হয়, তখনই বিশ্ব মিডিয়া এইগুলো প্রচার করে। আমাদের মিডিয়া থেকে নিয়েই বিবিসি, সিএনএন প্রচার করে। দোষটা কাকে দেব প্রশ্ন রাখেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই যারা ক্ষমতায় এসেছে তখন নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্য কাজ করেছে, আর কিছুই করেনি। এভাবে যারা ক্ষমতা দখল করে তারা নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে এতই ব্যস্ত যে, দেশের জনগণের জন্য কোনো কাজ করার সুযোগ তারা পায় না। একমাত্র আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের জন্য কাজ করে।

তিনি বলেন, ‘গুলশানে বিদেশি হত্যার ঘটনার পর সন্ত্রাস মোকাবেলা করে আমরা বাংলাদেশকে যে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলাম, সে জায়গাটা যেন কিছুটা ম্লান হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়, বিশ্বের সমস্যা। এতদিন বাংলাদেশে আমরা নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছিলাম। (জাগো নিউজ)

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:৩০ পিএম, ১৭ জুলাই ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

Share