শাবনূর বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ৯০ দশক থেকে এ পর্যন্ত আসা চিত্র তারকাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় চিত্র তারকা হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ ছবি মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন শাবনূর। প্রথম ছবি ব্যর্থ হলেও পরে সালমান শাহের সাথে জুটি গড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। একে একে এ জুটি সুপারহিট ছবি দিতে থাকেন।
সালমানের অকাল মৃত্যুতে সাময়িক ভাবে শাবনূরের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়লেও তার চিরায়ত বাঙালি প্রেমিকার ইমেজ এবং অসাধারণ অভিনয় ক্ষমতা তাকে দর্শকদের হৃদয়ে শক্ত আসন গড়তে সাহায্য করে। পরে রিয়াজ, শাকিল খান, ফেরদৌস ও শাকিব খান এর সাথে জনপ্রিয় জুটি গড়ে অসংখ্য ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় ছবি উপহার দেন। একতা সময় ক্যারিয়ারে ভাটা পড়ে। বর্তমানে পর্দায় নেই তিনি। তবে জানালেন ব্যস্ত তিনি।
গণমাধ্যমকে শাবনূর বলেন, এখন আমি আগের চেয়েও বেশি। আমার ছেলে ও পরিবার নিয়ে অনেক ব্যস্ত সময় কীভাবে কেটে যায় টেরই পাই না। তাছাড়া সিডনি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল নামে একটা স্কুল আছে। সেটা নিয়ে প্রচুর ব্যস্ত থাকতে হয়।
ভবিষ্যতে ছবি বানানোর ইচ্ছা আছে শাবনূরের। নিজের ছবিতে কাজও করার ইচ্ছা আছে। ভছেলে বড় হচ্ছে, ছেলেও সময় দিতে হয়। তাঁকেও মানুষের মতো মানুষ বানাতে চান। করতে চান উচ্চশিক্ষিত। ছেলে আইজান নেহানের বয়স এখন সাড়ে ৪। স্বাভাবিকভাবেই ছেলের প্রতি মনোযোগী তিনি।
ছেলেকেও নায়ক বানাতে চান কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শাবনূর বলেন, এটা বলা মুশকিল। তার আগ্রহ ইচ্ছা কোনটা সেটা তো আমি জানি না। এই যেমন আমি কখনোই জানতাম না যে চলচ্চিত্রের নায়িকা হবো। চেয়েছিলাম পাইলট হতে। এই দেখুন হয়ে গেছি নায়িকা। আইজান ফিল্মে কাজ করবে কি; করবে না, এটা ওর ব্যাপার। তবে আমার আপত্তি নেই। ও যদি চলচ্চিত্রে কাজ করতে চায়, তাহলে করবে। আমি দ্বিমত করবো না।
শাবনূর ১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক ভাবে তার নাম রাখা হয় কাজী শারমিন নাহিদ নুপুর। পরে স্বনামধন্য নির্মাতা এবং তার মেনটর এহতেশাম তার নাম রাখেন শাবনূর। শাবনূর শব্দের অর্থ রাতের আলো। শাবনূরের পিতার নাম শাহজাহান চৌধুরী। তিন ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় তিনি। বোন ঝুমুর এবং ভাই তমাল দুজনেই নিজ নিজ পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।
শাবনূর ২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত দুই নয়নের আলো ছবিতে অভিনয় করে তার ক্যারিয়ারের একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। (কালেরকণ্ঠ)