নারী

যে মেয়ের জন্য আজীবন কাঁদবেন বাবা

সোমবার গভীর রাতে বাবাকে ফোন দিয়ে ছাত্রীর ছবি চাইলেন শিক্ষক। মঙ্গলবার(০৪ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে মেয়েকে এক কপি ছবিসহ স্কুলে পৌঁছে দিয়ে অফিসে চলে যান বাবা গোলাম মোস্তফা।

কিন্তু তখনো বাবা জানতেন না তার মেয়েকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হবে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাবার কাছে খবর গেল স্কুল সংলগ্ন বাগান থেকে মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বরিশাল সদর উপজেলার চড়বাড়িয়া ইউনিয়নের সাপনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাবিয়া আক্তার অথৈ (১১) সাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী এবং সাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাজী গোলাম মোস্তফার একমাত্র মেয়ে। ঘটনার পর থেকে অথৈকে ছবি চেয়ে ডেকে নেয়া স্কুলশিক্ষক মো. মনির হোসেন পলাতক রয়েছেন।

পরিবারের ধারণা- অথৈকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্কুলশিক্ষক মো. মনির হোসেন পলাতক থাকায় তিনি এ ঘটনায় জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অথৈর স্বজনরা জানান, সাপানিয়া স্কুলের শিক্ষক মনির হোসেন সোমবার গভীর রাতে অথৈর একটি ছবি প্রয়োজন বলে তার বাবার কাছে ফোন দেন। সকালে আবারও অথৈর বাবার কাছে ফোন দিয়ে ছবি চান শিক্ষক মনির। বিদ্যালয় আজ ছুটি থাকলেও সকাল ৯টার দিকে মেয়েকে এক কপি ছবিসহ স্কুলে পৌঁছে দিয়ে অফিসে চলে যান বাবা গোলাম মোস্তফা।

দুই ঘণ্টা পরও বাড়ি না ফেরায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অথৈর মা স্কুলে যান। স্কুলে না পেয়ে আশেপাশে মেয়েকে খুঁজতে থাকেন তিনি। কিছুক্ষণ পর স্কুল সংলগ্ন লেবু বাগানের মধ্যে অথৈর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন মা।

এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এসে অথৈকে উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান অনেক আগেই অথৈ মারা গেছে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই অথৈর মৃত্যু হয়েছে। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা পরীক্ষা করলে বোঝা যাবে।

অথৈর বাবা কাজী গোলাম মোস্তফা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, শিক্ষক মনির আমার এত বড় সর্বনাশ করবে আমি বুঝতে পারিনি। আমি মেয়েটিকে তার কাছে দিয়ে আসলাম। অথচ সে আমার মেয়ের সর্বনাশ করল। আজীবন আমাকে এই কষ্ট বুকে নিয়ে কাঁদতে হবে।

কাউনিয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, অথৈকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে। অথৈকে স্কুলে ডেকে নেয়া শিক্ষক মো. মনির হোসেন পলাতক রয়েছেন। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

বার্তা কক্ষ

Share