চারদিকে দেয়াল ঘেঁষে দৃষ্টিনন্দন ও পরিবেশ বান্ধব গাছের ভেতর থেকে উঁকি দেয় মুসলমানের প্রাণের স্থল একটি মসজিদ। দূর থেকে আচমকা কেউ দেখলে ভেবে নিবে এটি কোনো আলিশান বাড়ি কিংবা কোনো এক শিল্পপতির বাংলো।
কাছে গিয়ে এর সৌন্দর্য্যরে সাক্ষী হয়ে ভবনটির সংশ্লিষ্ট ভিত্তিপ্রস্তর সাইনবোর্ড থেকে জানা যায় এটি চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়া মিয়াজী বাড়ি জামে মসজিদ।
অনন্য এক ব্যতিক্রম ডিজাইনে নির্মিত এ দৃষ্টি নন্দন মসজিদটির সাথে জেলার আর কোনো মসজিদের মিল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মুসল্লিদের দাবি সারাদেশে হয়তোবা হুবুহু এ ডিজাইনের আরেকটি মসজিদ পাওয়া যাবে।
মসজিদের সুসজ্জিত পরিবেশ আর নানা রকমের ডিজাইন দেখলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাবে। বাংলাদেশে নির্মিত বিভিন্ন মসজিদের ডিজাইনের সাথে কোন না কোন মিল থাকলেও মিয়াজী বাড়ি জামে মসজিদের ডিজাইনটি একবারেই ভিন্নতর।
দৃষ্টি নন্দিত এ সুসজ্জিত মসজিদটি নির্মিত হয়েছে চাঁদপুর শহরের প্রপেসর পাড়ার সাবেক ফুটবলার বারেক মিয়াজী বাড়িতে।
সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, শুধুমাত্র মূল কয়েকেটি ফিলারের ওপর ভিত্তি করে পুরো মসজিদটি দাঁড়িয়ে আছে সিরামিকের ইটের ওপর। দ্বিতল মসজিদের চারপাশের দেয়াল গুলো ব্যাতিক্রম আঁকা বাঁকাডিজাইনে খুব নিখুঁত ভাবে ঘাঁথা হয়েছে। উপরের উঠার জন্য প্রাচিনতম একটি ঐতিহ্যের চিহ্ন হিসেবে শুধুমাত্র একটি লোহার এঙ্গেলের ওপর কাঠের পাটাতন দিয়ে সিঁড়ি বানানো হয়েছে।
কাঠের ওই পাটাতন গুলোও এত সুন্দর ও নিখুঁত ভাবে গাঁথা হয়েছে, যা দেখলে মনে হয় যেনো একটি ঝুলন্ত সিঁড়ি। মসজিদের ভেতরে দেয়ালের মাঝখানে সিরামিকে লেখা রয়েছে আল্লাহর ৯৯ নাম।
জানালারা সামনে সিরামিকের ফাঁকে ফাঁকে টানানো রয়েছে বাঁশের তৈরি চাটাই।একই সাথে মসজিদের ভেতরে এবং বাহিরে শোভা পাচ্ছে দিগুন আলোর লাইট।এর পাশাপাশি মসজিদটির সৌন্দর্য বর্ধনে তার সামনের অংশে রয়েছে বিভিন্ন জাতের ফুল গাছ।
রাতের বেলায় ওই ফুল গাছ এবং অধিকলাইটের আলোয় পুরো মসজিদটি সুসজ্জিত হয়ে আরো আলোডিকত হয়ে উঠে। সবকিছু মিলিয়ে এক ব্যাতিক্রমি ডিজাইনে মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে চাঁদপুর প্রফেসর পাড়া মিয়াজী বাড়ির এ জামে মসজিদ।
জানা যায়, মসজিদ কমিটির সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন সুমন মিয়াজী ও সাধদারণ সম্পাদক কবির আহমেদ মিয়াজীর উদ্যোগে মিয়াজী বাড়ি জামে মসজিদটির প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৪ সাল থেকে শুরু করে ২০১৬ সালে মসজিদটি নির্মানন কাজ সম্পন্ন করা হয়।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ মিয়াজী জানান, মসজিদটির প্রতিষ্ঠা করার জন্য সম্পূর্ণ খরচ বহন করেন বাড়ির লোকজন। বুয়েট ও চারুকলার ছাত্র বন্ধুরা মিলে মসজিদটির ড্রয়িং ডিজাইন পরিকল্পনা করেন।
এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলামের তত্ত্ববধানে মসজিদটির ডিজাইন নির্মাণ কাজ করা হয়। তাই এটি দেশের মধ্যে একটি ভিন্নতর ডিজাইনের মসজিদ হিসেবে দাবি করেন মুসল্লীরা।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি