বিএনপির সংবিধান সংস্কারে একগুচ্ছ প্রস্তাব চূড়ান্ত

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রবর্তন,তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুন:স্থাপন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ সংবিধান সংস্কারে একগুচ্ছ প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। ৩১ দফার ভিত্তিতে এ সব প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে দলটি। দলের এসব প্রস্তাব সোমবারের মধ্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশনে দেয়া হবে ।

বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ বিভাগের সংস্কারে দলীয় প্রস্তাবও অনেকটা চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। এ ছাড়া দলীয় সংস্কার কমিটিগুলোর কাজের অগ্রগতি এবং সংবিধান সংস্কারসহ অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অন্য সংস্কারগুলো নিয়েও সদস্যরা আলোচনা করেন।

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে গত বছর ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দেয় বিএনপি। এর মধ্যে সাম্য,মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার- এ তিন বিষয়কে সংবিধানের মূলনীতি ঘোষণা করাসহ চূড়ান্ত করা সংস্কার প্রস্তাবনা আছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন লিখিতভাবে সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাব পাঠাতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ করেছে। এ কমিশন ইতোমধ্যে বিশিষ্ট নাগরিকসহ অন্য অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় শুরু করেছে। ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে আগ্রহী ব্যক্তি বা সংগঠনের পরামর্শ,মতামত ও প্রস্তাব দেয়ার সুযোগ রেখেছে কমিশন। এরপরই তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে বসবে।

এ দিকে সংবিধানসহ প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের আলোকে বিএনপিও সংবিধান,নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিটি করে। এর মধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিটির প্রধান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ তার প্রতিবেদন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জমা দিয়েছেন। সংবিধান সংস্কার ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রতিবেদনও চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। যথাক্রমে খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ড.আবদুল মঈন খান দু’কমিটির প্রধান।

এ ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সভায় স্থানীয় সরকার ও নারী বিষয়ক আরো দু’টি সংস্কার কমিটি করার পরামর্শ আসে। এর একটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস,আরেকটিতে সেলিমা রহমানকে আহ্বায়ক করার বিষয়ে আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,বিএনপি সংস্কার কমিটিগুলোর তৈরি করা প্রতিবেদন বা প্রস্তাবগুলো সরকার গঠিত ছয় সংস্কার কমিশনের কাছে জমা দেবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচনব্যবস্থা,পুলিশ,বিচার বিভাগ,জনপ্রশাসন,সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন করে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই ছয় কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।

নানা সংস্কার আলোচনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। সাবেক সচিব এ এস এম মো.নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে। রোববার সিইসিসহ চার নির্বাচন কমিশনার শপথ নেবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এ কমিশন গঠনকে নির্বাচনের পথে বড় অগ্রগতি বলে মনে করছেন।

চাঁদপুর টাইমস ,
২৩ নভেম্বর ২০২৪
এজি

Share