চুমু খেয়ে ‘চুমু বাবা’ কারাগারে

নিউজ ডেস্ক:

‘চুমু বাবা’ তাঁর নাম। আস্তানা ছিল ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে। এই চুমু বাবার বিশেষত্ব হলো, যাবতীয় সমস্যা দূর করতে তিনি ভক্তদের গালে চুমু এঁকে দেন। আর এক চুমুতেই হয় মুশকিল আসান!

তবে হ্যাঁ, চুমু বাবার চুমু এতদিন কিন্তু মেয়েভক্তরাই পেয়ে আসছিলেন। ছেলেভক্তদের ভাগ্যে জুটত আস্ত একখানা লেবু! সেই লেবুর সঙ্গে রাখলেই নাকি সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। এভাবেই এতদিন ধরে দিব্যি চলছিল চুমু বাবার কাজ-কারবার।

জনশ্রুতি আছে, সুন্দরী নারীভক্তদের গালে, আবার বেশি সুন্দরী হলে ঠোঁটে চুমু খেয়ে বেশ কারবার ফেঁদেছিলেন ‘চুমু বাবা’। কিন্তু সম্প্রতি এক ভক্ত চুমু বাবার এহেন কাণ্ড মোবাইলে ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিতেই ঘটে যায় বিপত্তি। ভিডিওতে বাবার কাণ্ড দেখে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। অশ্লীলতার দায়ে গত শুক্রবার চুমু বাবার কোমরে দড়ি পরিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের কাপাডা জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম প্রোদ্দাতুরের একটি মন্দিরে আখড়া গেড়েছিলেন এই ‘চুমু বাবা’। প্রথমে তাঁর নাম ছিল প্রেমানন্দ স্বামী। পরে ‘চুমু বাবা’ নামে তাঁর খ্যাতি (!) ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন বলাবলি করত, স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন এই চুমু বাবা।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, দুই বছর ধরে বাবা নির্বিঘ্নে চালাচ্ছিলেন চুমুর কারবার। রাতারাতি চুমুর দৌলতে বেশ নামও কামিয়েছিলেন তিনি। তাঁর আখড়ায় ‘ভক্তিনী’ (নারীভক্ত) এলেই তিনি সেই ভক্তিনীর সমস্যা দূর করতে তাঁকে জাপটে ধরে জম্পেশ চুমু দিতেন বেশ খানিকক্ষণ ধরে। তার পরেই নাকি সমস্যা দূর হয়ে যেত সেসব ভক্তিনীর।

তবে পুরুষভক্ত এলেই তিনি আর চুমুর ধারকাছ দিয়ে মাড়াতেন না। উল্টে পুরুষভক্তদের হাতে ধরিয়ে দিতেন আস্ত একটা লেবু। আর এতেই সন্দেহ ঘনীভূত হতে থাকে অনেকের। শেষ পর্যন্ত এক ভক্ত মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও তুলেই সর্বনাশ ঘটিয়েছেন চুমু বাবার কারবারে।

আপাতত পুলিশ ওই চুমু বাবাকে গ্রেপ্তার করে পাঠিয়ে দিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের কাপাডা জেলার আদালতে। আদালত অবশ্য এ ধরনের আজগুবি বাবাকে আপাতত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রেখে সবার আগে তাঁর মানসিক চিকিৎসা করানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

বাবাকে গ্রেপ্তারের পর অনেকেই নানা অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে আসতে থাকে। তখন জানা যায়, গ্রামের মানুষের আর্থিক এবং পারিবারিক ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে চুমু বাবা শুধু নারীদের ধরে ধরে চুমুই খেতেন না, অনেকের কাছ থেকে নাকি মোটা অঙ্কের টাকা-পয়সাও হাতিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

এ ছাড়া ‘চুমু বাবার’ আরো নানা রকম প্রতারণার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বহু বাসিন্দা। আর সেই অভিযোগের দৌলতে আপাতত চুমু বাবার ঠাঁই কারাগারে। সেই গারদ থেকে বেরিয়ে কোনো দিন ‘চুমু বাবা’ আর ভক্তদের চুমু খেতে পারবেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়।

Share