বাংলাদেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে চীনা বিশেষজ্ঞ দল বলেছে, করোনার মতো ছোঁয়াচে ভাইরাসের বিষয়ে এ দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা খুবই কম। এদেশে সংক্রমণের চূড়ান্ত অবস্থা এখনো আসেনি সতর্ক করে চীনের দলটি। তারা বলছে, আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে লকডাউনে যেতে হবে। বাংলাদেশ সংক্রমণের চূড়ায় পৌঁছেছে কি না, সেটা বলা কঠিন। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এবং পরিকল্পিত উপায়ে লকডাউনসহ প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশ সফরে আসা চীনের বিশেষজ্ঞরা আজ রোববার ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিকাব) সদস্যদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে এ মন্তব্য করেছেন। বাংলাদেশ সফর শেষে প্রতিনিধিদলটি আগামীকাল সোমবার ঢাকা ছাড়ছে।
দুই সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশে অবস্থানের সময় করোনাভাইরাস মোকাবিলার পরিস্থিতি ১০ সদস্যের চীনা প্রতিনিধিদলকে হতাশ করেছে। কারণ, এমন একটি মহামারি নিয়ে সমাজের নানান স্তরের লোকজনের সচেতনতা খুব কম। নমুনা পরীক্ষাও হচ্ছে কম। তবে সংখ্যায় কম ও নানা সীমাবদ্ধতার পরও চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা অসাধারণ দায়িত্ব পালন করছেন।
চীনের বিশেষজ্ঞ দলটি তাদের বাংলাদেশ সফরের ভিত্তিতে সরকারের কাছে অন্তত চারটি প্রতিবেদন দেবে, যা আগামী সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকায় চীনের উপরাষ্ট্রদূত হুয়ালং ইয়ান বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলটির সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে ছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এ ছাড়া ব্রিফিংয়ে ডা. শুমিং সিয়ানইউ ও ডা. হাইতাং লিউ বাংলাদেশে তাঁদের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চীন ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে কীভাবে সহযোগিতা করবে, জানতে চাইলে হুয়ালং ইয়ান বলেন, ভাইরাস মোকাবিলায় কার্যকর ভ্যাকসিনের গবেষণায় চীনের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। কার্যকর ভ্যাকসিন খুঁজে পাওয়ার পর যে দেশগুলোকে তা দেওয়া হবে, বন্ধুদেশ হিসেবে অগ্রাধিকার পাবে বাংলাদেশ।
চীনের প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানায়, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের নমুন পরীক্ষা খুবই কম। চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার বাইরে ল্যাব নেই। সে জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয়।
যত বেশি সম্ভব নমুনা পরীক্ষার ওপর জোর দিয়ে চীনের বিশেষজ্ঞরা জানান, উহানে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে কারণ ছিল দ্রুত পরীক্ষা, দ্রুত শনাক্তকরণ, দ্রুত সঙ্গনিরোধ ও দ্রুত চিকিৎসা। করোনাভাইরাসের মতো অতিমারি মোকাবিলায় এ পদক্ষেপগুলোর কোনো বিকল্প নেই। তাই শুরু থেকেই নমুনা পরীক্ষা করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনে কার্যকরভাবে লকডাউন করার ফলে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে। ফলে উহানে এর সুফল পাওয়া গেছে।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur