শীর্ষ সংবাদ

চিত্রনায়ক ওয়াসিমের চাঁদপুরের বাড়ি মেঘনা গর্ভে

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা মেজবাহ উদ্দিন ওরফে ওয়াসিম ১৯৫০ সালে ২৩ মার্চ চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজিকান্দি ইউনিয়নের ইন্দরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার সাথেই তাদের পরিবার ঢাকায় বসবাস করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ১৯৮৮ সালে তাদের দেওয়ান বাড়ি মেঘনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকে ওই বাড়ীর কোন অস্তিত্ব নেই। ওই বাড়ির লোকজন বিভিন্ন স্থানে বাড়ি করে চলে গেছেন। ঢাকায় থাকার কারণে ওয়াসিম পরিবারের কোন বাড়ি-ঘর চাঁদপুরে নেই। ওয়াসিমের পিতা মোজাম্মেল হক দেওয়ান একজন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।

১৭ এপ্রিল শনিবার দিনগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রখ্যাত এই অভিনেতা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে বাসায় অসুস্থ ছিলেন।

১৮ এপ্রিল রোববার বাদ জোহর তার দাফন কর্যাক্রম সম্পন্ন হয়েছে। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মেয়ের পাশে সমাহিত করা হয়েছে।

এর আগে গুলশান আজাদ মসজিদে ওয়াসিমের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর বনানী কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে চিরঘুমে শায়িত করা হয়। জানাজায় ‘রাজপুত্র’ খ্যাত এই অভিনেতার ছেলে ও পরিবারের সদস্যসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনের বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

ওয়াসিম বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়িকা রোজীর ছোট বোনকে। তাদের দুটি সন্তান হয়-পুত্র দেওয়ান ফারদিন এবং কন্যা বুশরা আহমেদ।

২০০০ সালে তার স্ত্রীর অকাল মৃত্যু ঘটে। ২০০৬ সালে ওয়াসিমের কন্যা বুশরা আহমেদ ১৫ বছর বয়সে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। পরীক্ষা চলাকালীন নকলের অভিযোগ তার পরিবারকে জানাবার প্রাক্কালে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে বুশরা লাফ দেন। তাঁর পাশেই চিরনিদ্রা গেলেন বুশরার বাবা অভিনেতা ওয়াসিম।

সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় ওয়াসিম।

অন্যদিকে পুত্র ফারদিন লন্ডনের কারডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ব্যারিস্টার হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত।

এক সময় বাণিজ্যিক-অ্যাকশনের পাশাপাশি ফোক-ফ্যান্টাসি সিনেমার এক নম্বর আসনটি দখলে ছিল ওয়াসিমের। ১৯৭২ সালে ঢাকাই সিনেমাতে ওয়াসিমের অভিষেক হয় সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’র মাধ্যমে। আর নায়ক হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয় মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ সিনেমার মাধ্যমে। দিন যতই যেতে থাকে ওয়াসিমের জনপ্রিয়তা ততই আকাশচুম্বী হয়। এক সময় বাণিজ্যিক ঘরানার অপরিহার্য নায়ক ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট,১৮ এপ্রিল ২০২১

Share