শীর্ষ সংবাদ

চিকিৎসক ও জনবল সংকটে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল

চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও জনবল সংকটসহ নানান প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে কার্যক্রম চলছে। দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার ও জনবল সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা।

এতে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা। বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ম্যাডিসিন, সার্জারি, শিশু বিভাগ, অর্থপেডিক ও গাইনি বিভাগে ডাক্তার নেই। বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ৬৫ জন চিকিৎসকের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ২১টি পদ খালি।

এদিকে একবছরের বেশি সময় ধরে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের ডিজিজাল এক্স-রে বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে রেডিওলোজিস্ট সনোগ্রাফী চিকিৎসক সংকটের কারণে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের আল্টাসনোগ্রাম বিভাগটি।

নৈকট্য ও যোগাযোগ সুবিধায় মেঘনা নদীর পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে শরীয়তপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষীপুর জেলার অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা নিতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে আসেন। প্রতিদিন প্রায় চার শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ৯শ’ থেকে ১২শ’ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে চলে যান। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসক ও জনবল সংকটে চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সরকারি নিদিষ্ট খরচে হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে না পেরে অধিক খরচ দিয়েই বাধ্য হয়ে বাহিরের প্রাইভেট ডায়াগণস্টিকগুলোতে আল্ট্রাসনোগ্রাম করাচ্ছেন রোগীরা। এর জন্যও রোগীদের ওই পরীক্ষাটি করাতে হাসপাতাল থেকে অন্যস্থানে আসা যাওয়ায় অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে অর্থপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. ফরিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক ও জনবল সংকটের মধ্যদিয়েও শতভাগ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডাক্তার থাকার কথা সেখানে কিছু পদ খালি রয়েছে। এছাড়া ইমারজেন্সীতে মাত্র ৩জন কাজ করছে। যেখানে কমপক্ষে ১৫ জন দরকার। অপরদিকে মাস্টার রুলে সব মিলিয়ে দেড়শ জনের মত লোকবল প্রয়োজন। এসব স্থানগুলো পূরণ হলে এখানে চিকিৎসা সারাদেশে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবে।

তিনি আরো বলেন, খলিল নামের এই দরিদ্র রিকশাচালককে আমাদের অর্থপেডিক্স টিম এনেস্থিসিয়া বিভাগ এবং অন্যান্য স্টাফদের সার্বিক সহযোগিতায় অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করি। আমাদের বিভাগের চিকিৎসকরা ব্যক্তিগতভাবে প্লেইট স্ক্রু এর ব্যবস্থা করি এবং হাসপাতালে সমাজসেবা বিভাগ ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করে। দরিদ্র রিক্সাচালক খলিলের প্রতি এটা ছিল আমাদের ভালবাসার উপহার। ২০১৯ সালে জুলাই মাস পর্যন্ত এই হাসপাতালে ৫৬৭টি অর্থপেডিক্স সার্জারি অপারেশন হয়েছে এর মধ্যে ২৩১ টি মেজর সার্জারি।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. মো.আনোয়ারুল আজিম বলেন, হাসাপাতালে চিকিৎসক ও জনবল সংকট দূর করার লক্ষে মন্ত্রনালয়ে জানানো হয়েছে। এখানে বিদ্যমান লোক দিয়েই কিন্তু আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। সংকট আর বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে হয়।

তিনি আরো বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে থাকা রেডিওলোজিস্ট সনোগ্রাফী বিশেষজ্ঞ পদোন্নতি পেয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন। তিনি বিদায় নেবার পর পরই আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে পত্র প্রদান করেছি। কর্তপক্ষ এ পদে চিকিৎসক নিয়োগ না দেয়ায় এখনো পর্যন্ত এ বিভাগটি বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে চাঁদপুরসহ ৪০ জেলায় জটিলতার কারনে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন বন্ধ রয়েছে। তবে আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগ খুব সহসাই শুরু হওয়ার কথা জানালেন এ কর্মকর্তা।

প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম

Share