একটি সন্তানের জন্য ১০ বছর ধরে বিভিন্ন চিকিৎসকের পিছনে পরামর্শ নিতে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে উঠেছিলেন লাকি আক্তার। অবশেষে বুধবার কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের ওই নারী একসঙ্গে চারটি সন্তান জন্ম দিয়েছেন। আর এ ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়াসহ সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর ভাগলপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে লাকি আক্তার (২৮) নামের ওই নারী চার সন্তান জন্ম দেন।
চার সন্তানের মধ্যে দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। তারা সবাই সুস্থ আছে। তবে সন্তানের মা অসুস্থ থাকায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, জেলার কুলিয়ারচর পৌর সদর পশ্চিম গাইলকাটা গ্রামের মো. মুসা মিয়ার কন্যা লাকি আক্তার ও কুলিয়ারচর ছয়সূতী ইউনিয়নের বড় ছয়সূতী গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে ফাইজুর রহমান ১০ বছর পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকে তারা একটি সন্তানের আশার ঘুরেছেন অসংখ্য হাসপাতাল ও ডাক্তারের কাছে। অবশেষে তারা সন্তানের মুখ দেখলেন। তাও একসঙ্গে চার সন্তান!
এই আনন্দের খবরে যেন আনন্দিত হতে পারছেন না চার সন্তানের দরিদ্র পিতা ফাইজুর রহমান। ফাইজুর রহমান টেইলারিংয়ের কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালান। এ কাজ করে চার সন্তান লালনপালন নিয়ে চার সন্তানের পিতা দুশ্চিন্তায় হাবুডুবু খাচ্ছেন।
ফাইজুর রহমান জানান, একটি সন্তানের জন্য আল্লাহ কাছে অনেক প্রার্থনা করেছি। অনেক হসপিটাল ও ডাক্তার দেখিয়েছি। অবশেষে আল্লাহ আমাদের ডাক শুনেছেন এবং একসঙ্গে চার সন্তানের বাবা হলাম।
তিনি বলেন, আমি সামান্য টেইলারিংয়ের কাজ করে চার সন্তানের ভরন-পোষণ কীভাবে করবো এই নিয়ে পড়েছি দুশ্চিন্তায়। বাচ্চাদের মায়ের অবস্থাও খুব একটা ভালো না, আইসিইউতে আছে এখনও। হসপিটালেও অনেক টাকা বিলও আসবে। এছাড়া গত ১০ বছর অনেক হসপিটাল ও ডাক্তার দেখাতে গিয়ে আয়ের টাকা প্রায় সবাই খরচ হয়েছে সেখানে। এই মুহূর্তে বাচ্চার বাবা হতে পেরে আনন্দিত হলেও, চার বাচ্চার লালনপালনে নিয়ে আছি বেশ দুশ্চিন্তায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, চার বাচ্চার মধ্যে তিন বাচ্চার ওজনই ২০০০ গ্রাম করে। এক বাচ্চার ওজন ১৯৫০ গ্রাম। তারা সবাই সুস্থ আছে এবং তাদের মা অসুস্থ বিধায় আইসিইউতে আছে। এ ছাড়া বাচ্চাদের খাবারের সংস্থান হাসপাতাল থেকেই করা হচ্ছে।