চাঁদের মাটি ছেড়ে পৃথিবীর পথে রওনা হয়েছে চীনা চন্দ্রযান চ্যাং’ই- ফাইভ। সঙ্গে নিয়ে আসছে নুড়ি ও বালির নমুনা। বৃহস্পতিবার চন্দ্র পৃষ্ট ছেড়ে কক্ষপথে মূল যানে যোগ দেয় অ্যাসেন্ডার। মঙ্গলবার চ্যাং’ই- ফাইভের ল্যান্ডার চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে। এর পরপরই পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য সেটি পাথর ও মাটির নমুনা সংগ্রহ শুরু করে।
এসব নমুনা প্রথমে পাঠানো হয় চাঁদকে প্রদক্ষিণকারী একটি মহাকাশযানে। যানটি সেগুলো নিয়ে পৃথিবীতে ফেরত আসবে। বৃহস্পতিবার সেই কাজ শুরু হয়েছে।
চীন গত সাত বছরে তিনবার চাঁদে চ্যাং’ই মহাকাশযান পাঠিয়েছে। এর আগে চ্যাং’ই- থ্রি এবং চ্যাং’ই- ফোর চাঁদে স্ট্যাটিক ল্যান্ডার ও ছোট রোভার নামায়। তবে সর্বশেষ অভিযানটি আগের দুটোর তুলনায় অনেক বেশি জটিল।
এক সপ্তাহের কিছু আগে ৮.২ টন ওজনের চীনা রকেটটি পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। এরপর মাল্টি মডিউল প্রোবটি চাঁদের কক্ষ পথে ঘুরতে থাকে। এরপর সেটা দু’ভাগে ভাগ হয়। একটি ভাগে ছিল একটি ল্যান্ডার এবং আরেকটি অ্যাসেন্ডার রকেট। সেটি চাঁদের অবতরণ করে।
আরও পড়ুন- চাঁদের বুকে চন্দ্রযান, সংগ্রহ করবে নুড়িপাথর ও মাটি
চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে শেষবারের মতো পাথর ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ৪৪ বছর আগে। আমেরিকান অ্যাপোলো মিশনের নভোচারীরা এবং সোভিয়েত আমলের রোবটিক ল্যান্ডার প্রায় ৪০০ কেজি নমুনা নিয়ে এসেছিলেন।
এসব নমুনা ছিল খুবই প্রাচীন, প্রায় ৩০০ কোটি বছর আগের। তবে চ্যাং’ই- ফাইভ যেসব নমুনা আনবে সেগুলো একেবারেই ভিন্ন। ১২০ থেকে ১৩০ কোটি বছর পুরোনো।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এ মিশনে সংগ্রহ করা দুই কিলোগ্রাম নমুনা চাঁদের সৃষ্টি, গঠন ও সেখানে আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে।
অভিযানটি পরিচালিত হয় ওসেনাস প্রসেলারারাম নামে পরিচিত একটি নিকটবর্তী অঞ্চলে, যেখানে রয়েছে আগ্নেয়গিরির লাভার জটিল বিন্যাসে গঠিত মনস রামেকার।
নিকটবর্তী অঞ্চল বলতে চাঁদের যে মুখটি পৃথিবী থেকে দেখা যায়, তাকে বোঝানো হয়। এর আগে উল্টোদিকের দূরবর্তী অঞ্চলে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি যান পাঠায় এশিয়ার দেশটি।
সপ্তাহ দেড়েক চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনান প্রদেশ থেকে চ্যাং’ই-ফাইভ চন্দ্রযানটিকে একটি রকেটে করে উৎক্ষেপণ করা হয়। ১১২ ঘণ্টার মহাকাশ সফর শেষে চন্দ্রযানটি ২৮ নভেম্বর চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে। আর মঙ্গলবার চাঁদের নিকট প্রান্তে অবতরণ করে।
চ্যাং’ই- ফাইভের সংগ্রহ করা নমুনা একটি ক্যাপসুলে পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, যা অবতরণ করবে উত্তর চীনের মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ৪ ডিসেম্বর ২০২০