আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের বিভিন্নস্থানে সংস্কার ও মেরামত কাজে চরম অনিয়ম করে চলেছে খান এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানটি হাসপাতালের বিভিন্ন নির্মান ও সংস্কার কাজে এমন অনিয়ম করে বছরের পর বছর ধরে গণপূর্ত বিভাগ থেকে মোটা অংকের বিল উঠিয়ে নিচ্ছেন।
জানা যায় গত দেড় দুই বছর ধরে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, চিকিৎসকদের কক্ষ, জরুরী বিভাগ, টয়লেটসহ বিভিন্নস্থানে পুনঃসংস্কার এবং বিভিন্ন কক্ষ ভেঙ্গে নতুন করে নির্মান করা হয়। আর এসব কাজের টেন্ডার পান খান এন্টার প্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। তারা হাসপাতালের এসব কাজ করতে গিয়ে একদিকে যেমন নিন্ম মানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন। অন্যদিকে নিজেদের মন মতোই যেমন খুশি তেমনি ভাবে কোনরকম কাজ সম্পন্ন করে বিল হাতিয়ে নিচ্ছেন।
গণপূর্ত বিভাগ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তেমন কোন তদারকি না থাকায় প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার খান মোহাম্মদসহ কয়েকজন ঠিকাদার কম দামে নিন্মমানের দুই নাম্বার ইট, বালু, পাথর সিমেন্ট কাজে ব্যবহার করছেন। এমনকি হাসপাতালের মেঝেতে থাকা টাইলস এবং আস্তর খোদাই না করেই সরাসরি টাইলসের ওপর সিমেন্ট বালির মসলা দিয়ে শুকনো ইট গেঁথে দেয়াল নির্মাণ করছেন।
২৩ নভেম্বর শনিবার দুপুরে হাসপাতালের একটি কক্ষ নির্মান কাজে এমনই এক অনিয়ম ধরা পড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের হাতে।
সরজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের তৃতীয় তলার কেবিন ব্লকের পাশে ইন্টার্নি চিকিৎসকদের জন্য একটি কক্ষের যে দেয়াল করা হচ্ছে, রাজমেস্ত্রীরা মেঝেতে থাকা টাইলস না উঠিয়ে এবং কোন প্রকার খোদাই না করেই তার ওপর বালি সিমেন্ট দিয়ে ইটের গাঁথুনি করছেন। এছাড়াও দেয়ালে যেসব ইট ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো অনেক পুরনো। বালির সাথে নামে মাত্র সিমেন্ট মিশানো হচ্ছে।
হাসপাতালের দেয়াল নির্মান কাজের এমন অনিয়ম দেখে ছাত্র সমন্বয়করা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ এ কে এম মাহাবুবুর রহমানকে খবর দিলে তিনি সেখানে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে ঠিদাকার খান মোহাম্মদকে খবর দিয়ে প্রায় এক ফুটের গাঁথা দেয়াল ভেঙ্গে আবার পুনরায় করার কথা বলেন।
এদিকে এমন ঘটনার পর হাসপাতালে কর্মরত বিভিন্ন জনের কাছে জানা যায় তারা পূর্বে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে এবং বিভিন্নস্থানে যেসব পুনঃসংস্কার কাজ করেছেন। সেগুলোও ঠিক একই ভাবে খোদাই বিহিন, নিন্ম মানের সামগ্রী ব্যবহার করে অনিয়ম করে নির্মান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ এ কে এম মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয় জেনে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। পরে ঠিকাদারকে খবর দিয়ে নিয়ম মতো নতুন করে দেয়াল নির্মান করার কথা বলেছি। আমার কথামতো তারা সেভাবেই কাজ করবে বলে জানিয়েছে।’
ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান খান এন্টার প্রাইজের ঠিকাদার খান মোহাম্মদ কানু বলেন, ‘এগুলো আমাদের টেন্ডারের কাজ নয়। কিছু কাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে করে দিতেছি। আজ গাতনি করার সময় মেস্ত্রিরা যে ভুল করেছে। তার জন্য আমি হাসপাতালে গিয়ে সেটি ভেঙ্গে নতুন করে কাজ করার কথা বলেছি।’
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur