চাঁদপুর ২শ’৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের দৌরাত্মে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। রোগী চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসা মাত্র দরজার পাশে অবস্থান করা বিক্রয় প্রতিনিধিরা রোগীর প্রেসক্রিপশন দেখতে রীতিমতো কাড়াকাড়ি করেন বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী।
এছাড়া বুধবার (৮ জুন) সদর হাসপাতালে দিনভর ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৯টা থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের হাসপাতালে আনাগোনা। হাসপাতালের সামনের অংশটুকু দেখে মনে হবে তাদের মোটর সাইকেল রাখার স্থান। পুরো হাসপতাল জুড়ে তাদের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। রোগীরা ডাক্তারের রুম থেকে বেরিয়ে আসা মাত্রই কোম্পানির এসব প্রতিনিধিরা রোগীদের প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। তারা একসাথে ৫ থেকে ১০ একত্রে অবস্থা নিয়ে একের পর এক ছবি তুলতে থাকে।
চিকিৎসা নিতে আসা অসহায় রোগীরা এভাবেই প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হেচ্ছ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের ডাক্তারে সাথে দেখা করার অনুমতি করার কথা রয়েছে বেলা ১২টার পর থেকে। নির্ধারিত এই সময়ের বাইরে অন্য সময় হাসপাতালে বিক্রয় প্রতিনিধিরা কোনো চিকিৎসকের সাথে দেখা করতে পারবেন না। এমনকি হাসপাতালের সীমানার মধ্যেও কোনো বিক্রয় প্রতিনিধি অবস্থান করতে পারবেন না। কিন্তু নিয়ম মানছেন না কেউই।
অভিযোগ উঠেছে রোগী দেখার সময়ও নানা অজুহাতে কোনো কোনো বিক্রয় প্রতিনিধি চিকিৎসকদের কক্ষে অবস্থান নেয়। রোগী বেরিয়ে আসলেই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা প্রেসক্রিপশনে নিজের কোম্পানির ওষুধ লেখা আছে কি না দেখতে হুড়োহুড়ি করেন।
হাসপাতালে রোগী আকলিমা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘হাতের প্রেসক্রিপশন দেখার জন্য প্রথমে একজন ওষুধ কোম্পানির লোক তাকে থামায়। তারপর আরেকজন। একপর্যায়ে কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরে প্রেসক্রিপশন নিয়ে ছবি তুলতে থাকে। অসুস্থ শরীর নিয়ে এখানে ডাক্তার দেখাতে এসে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
আরেক রোগী কামরুল জানান, ‘এমনিতেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ডাক্তারের দেখা মেলে। বেরিয়ে আসার সময় আবার ওষুধ কোম্পানির লোকদের পাল্লায় পড়ে অসুস্থতা আরো বেড়ে যায়। একজন-দুইজন নয়, দল বেঁধে তারা ঘিরে ধরে রোগীদের। অনেকে আবার মোবাইল ফোনে প্রেসক্রিপশন ছবিও তুলে রাখে।’
এ’বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রদীপ কুমার দত্তের সাথে কয়েকবার চেষ্টা করেও দেখা করার সম্ভব হয়নি।
এ বিষেয়ে তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৪:০০ এএম, ৯ জুন ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ