দু’উপজেলায় ৮ শতাধিক প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যন পদে ৭, মেম্বার ৩৭, সংরক্ষিত মহিলা পদে ৮ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের ১৮ ইউপিতে ৫২ প্রর্থীর মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এই দু উপজেলায় চেয়ারম্যন পদে ৭,মেম্বার পদে ৩৭ ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের মেম্বার পদে পদে ৮ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
রোববার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধের এক দিন আগে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহরের শেষ দিনে স্ব স্ব রিটাংর্নিং অফিসারের কার্যালয়ে তাদের এই প্রত্যাহারপত্র জমা দেন।
এর মধ্যে সদর উপজেলা ১২ ইউপিতে চেয়ারম্যাপন পদে ৬, সাধারণ মেম্বার পদে ১৩ ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের মেম্বার পদে ৫ প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।
চেয়াম্যারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের ২ জন, বিএনপির ২ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ২ জন। এ নির্বাচানে সদরের ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩১ মার্চ।
রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫টি অফিসে প্রত্যাহারপত্র গ্রহণ করা হয়। ইউনিয়নগুলো হলো- বিষ্ণুপুর, আশিকাটি, কল্যাণপুর, শাহমাহমুদপুর, রামপুর, মৈশাদী, তরপুরচন্ডী, বাগাদী, ইব্রাহীমপুর, চাঁন্দ্রা, হানারচর ও রাজরাজেশ^র।
সদর উপজেলার আশিকাটি, শাহমাহম্মদপুর, রামপুর ও মৈশাদী ইউনিয়নের প্রার্থীরা মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করেন সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজের কাছে। বিষ্ণুপুর ও তরপুরচন্ডি ইউনিয়নের প্রার্থীরা মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করেন রির্টানিং কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশলী আ. মতিনের কাছে। কল্যাণপুর ও বাগাদী ইউনিয়নের প্রার্থীরা মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করেন রির্টানিং কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল হকের কাছে। ইব্রাহীমপুর ও রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের প্রার্থীরা মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করেন রির্টানিং কর্মকর্তা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে। চান্দ্রা ও হানারচর ইউনিয়নের প্রার্থীরা মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করেন রির্টানিং কর্মকর্তা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তফা কামালের কাছে।
৬ চেয়াম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও ১ প্রার্থী বাতিল হওয়ার পর সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে মোট ৪৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রত্যাহার পত্রে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরা উল্লেখ করেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে আমরা আমাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলাম এবং দল থেকে যাকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনিত করা হয়েছে তার পক্ষে নির্বাচনী কাজ করবো।
এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা ব্যক্তিগত সমস্যা দেখিয়ে তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। একই কথা উল্লেখ্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন- তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মিজান বকাউল ও মো. আজম খান, ৮নং ওয়ার্ডের হাসান দেওয়ান এবং সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মমতাজ বেগম। চান্দ্রা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মো. মাসুদ মিজি ও ৩নং ওয়ার্ডের সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার। রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের আব্দুল বেপারী ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের নাসিমা বেগম। শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দেলওয়ার হোসেন পাঠান এবং সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ৪, ৫, ও ৬নং ওয়ার্ডের সালমা বেগম ও ফাতেমা আক্তার লাকী। আশিকাটি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ হোসেন, ৬ নং ওয়ার্ডের নোয়াব খান, ৮নং ওয়ার্ডের নূরুল ইসলাম প্রধান, ৯নং ওয়ার্ডের আমিনুল ইসলাম এবং সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের নাজমা ইসলাম। মৈশাদী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেন বেপারী ও ৮নং ওয়ার্ডের আশ্রাফুর রহমান।
প্রসঙ্গত, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী প্রধানিয়ার মনোনয়নপত্র যাচাই বাচাইয়ে বাতিল হওয়ার রায় বহাল রয়েছে।
এছাড়া মনোনয়নপত্র যাচাই বাচাইয়ে বাতিল হওয়া বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে মেম্বার পদে ১নং ওয়ার্ডের খোরশেদ, ৭ নং ওয়ার্ডের বাবলু দর্জি, ও মহিলা মেম্বার পদে ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের লিপি বেগম ও তরপুরচন্ডীর মেম্বার পদে ৬নং ওয়ার্ডের মো. নুরুল ইসলাম মৃধার মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশলী আ. মতিন।
মেম্বার পদে ২২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ও প্রত্যাহারের পর সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে মোট ৫৪৮ জন এবং মহিলা মেম্বার পদে ৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ও প্রত্যাহারের পর ১৪৯জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অপরদিকে হাইমচর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১, সাধারণ মেম্বার পদে ২৪ ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ৩ জন তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। হাইমচর উপজেলায় সাধারণ মেম্বার পদে ৩ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ১ জন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেরায় ১২ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে সর্ব মোট ৫২জন মনোনয়ন জমা দেন। রোববার ৬ প্রাথী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এর মধ্যে রামপুর ইউনিয়নে সাবেক চেয়াম্যান মাহাবুর রহমান পাটোয়ারী (স্বতন্ত্র), আশিকাটি ইউনিয়নে জাফর আহমেদ খান (স্বতন্ত্র), কল্যাণপুর ইউনিয়নে শহীদুল্লাহ খান (স্বতন্ত্র), হানারচড় ইউনিয়নে হানিফ রাড়ি (স্বতন্ত্র), চান্দ্রা ইউনিয়নে শেখ মো. আবু জাফর। এছাড়াও সদর উপজেলায় মনোনয়ন জমা দেয়া ৫শ’ ৭০জন সাধারণ মেম্বারের মধ্যে ১৩ জন ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ১শ’ ৫৫ প্রার্থীর মধ্যে ৫জন তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
এদিকে হাইমচর উপজেলার ৭ ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়নে আগামী ৩১ মার্চ ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ইউনিয়নে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন রোববার চেয়াম্যান পদে ১, সাধারণ মেম্বার পদে ৮ ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ৩ জন তাদের মনোনয়ন পত্যাহার করে নেন।
হাইমচর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ৫নং হাইমচর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী ইসহাক খোকনের স্ত্রী চেয়ারম্যান পদে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এছাড়া ১নং গাজীপুর ইউনিয়নের সাধারন- ১ ও সংরক্ষিত ১জন, ২নং আলগী উত্তর সাধারন-৭ মহিলা-২, ৩নং আলগী দক্ষিন সাধারন- ৩, ৪নং নীলকমল ইউনিয়নে সাধারন-১, ৫নং হাইমচর ইউনিয়নে সাধারন-৭, ৬নং চরভৈরবী ইউনিয়নে সাধারন-১ জন সদস্য মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার ১৪ মার্চ সোমবার চাঁদপুর সদর ও হাইমচর ইউনিয়নের সকল প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হবে। দুটি উপজেরা আগামী ৩১ মার্চ একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
: আপডেট ১০:০৫ পিএম, ১৩ মার্চ ২০১৬, রোববার
ডিএইচ