সারাদেশে দ্বিতীয় দফায় ৬৩৯ ভোটগ্রহণ চলছে। এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চাঁদপুরে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগে কয়েকটি কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত ও প্রার্থীরা নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেয়।
চাঁদপুর সদরের ১২টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে এরই মধ্যে ১১ চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপির ৬ প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চাঁদপুরের তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নের ৩প্রার্থী নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন। এরা হচ্ছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিব কাজী, ইসলামী আন্দোলনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মারূফ, বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী সরদার রফিকুল ইসলাম।
আশিকাটি ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলওয়ার মাস্টার, বাগাদী ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ আলী পাঠান, এছাড়াও চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল আলম খান, মাও. আরিফ তালুকদার, ইসলামী আন্দোলনের জামিল আহমেদ, চান্দ্রা ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান খান, রামপুর ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকির হোসেন তালুকদার।
বাগাদী ইউনিয়নের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর গাজী, একই দলের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসির উদ্দিন নির্বাচন বয়কটের েঘোষণা দেন।
এদিকে হাইমচরে ভৈরবী আজিজিয়া মাদরাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার কে এম মান্নাতকে মারধর করে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগে ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
এছাড়াও চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ১নং গাজীপুর ইউনিয়নে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ১২ সদস্য প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের ভোটার ও সমর্থকদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়ায় রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ভোট বর্জন করেন এসব প্রার্থী।
এছাড়াও ২নং আলগী দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান প্রার্থী খাজা আহমেদ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন।
চাঁদপুরে প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর, ব্যালটবাক্স ছিনতাই
চাঁদপুরে দুই উপজেলার ১৮ ইউনিয়নে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন কেন্দ্রে সংঘর্ষ, প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর, ব্যালটসহ বাক্স ছিনতায়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এছড়াও দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর জাগো নিউজের
চাঁদপুরের সদরের শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের লোধেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ব্যালটবাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করার সময় পুলিশ বাঁধা দিলে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এতে কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেয়া হয়।
অপরদিকে সদরের চান্দ্রা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিয়া নরসিংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ দলীয় দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ২টি বোমা বিস্ফোরিত হয়। তবে এতে কেউ আহত হয়নি। এ পরিস্থিতিতে প্রিজাইডিং অফিসার আতিকুর রহমান কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেন বলে তিনি জানান।
এদিকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরভী ইউনিয়নের ৫নং আজিজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার এম মান্নাফকে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা মারধর করে ব্যালটবাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করার অভিযোগে কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে বলে প্রিজাইডিং অফিসার জানিয়েছেন। এখনো বিভিন্ন কেন্দ্রে সংঘর্ষ চলছে।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার জানান, চাঁদপুরের দুই উপজেলার মোট ১৭৬টি কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলোকেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোট ১৩৭ কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪২টি কেন্দ্র বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে পড়েছে। মাত্র ৩৯টি কেন্দ্রকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এসব কেন্দ্রে ৪ হাজার ৭শ ৭০জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করছে। এদের মধ্যে ৪৫ সদস্যের ৯ প্লাটুন বিজিবি, ৪৮ জন র্যাব, পুলিশ ১৩শ ১৪ জন। এছাড়া ৬ জন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছেন।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট||আপডেট: ০২:০৪ অপরাহ্ন, ৩১ মার্চ ২০১৬, বৃহস্পতিবার
চাঁদপুর টাইমস /এমআরআর