চাঁদপুর

চাঁদপুর শিশু গৃহপরিচারিকা খুন : আটক ৩

চাঁদপুরের পুরাণবাজার কুলির বাগান এলাকায় সোমবার (২৫ জানুয়ারি) কোনো এক সময় গৃহপরিচারিকা তানজিলা (৮) কে খুন করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওইদিন রাতেই সবার অগোচরে তানজিলার গ্রামের বাড়ি রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বাঁশগারি চরে লাশ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসে। চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনুর রশিদ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন।

তানজিলা রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বাঁশগারি গ্রামের তৈয়ব আলৗ ও বেগমের কন্যা। সে পুরাণবাজার মাচেন্ট একাডেমী শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিলো

পুলিশ অভিযুক্ত গৃহের মালিকের স্ত্রী জোছনা বেগম, স্থানীয় রওশন আলীর পুত্র নূর মোহাম্মদ হাওলাদার (৬০) ও রওশন কুড়ালীর পুত্র আব্দুল খালেক (৬০)  গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে গৃহের মালিক নান্টু হাওলাদার পলাতক রয়েছে।

স্থানীয়রা তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সূত্রে জানায়, তানজিলা ঘটনার আগের দিন স্কুলে একটি প্রতিযোগিতা দিয়ে পুরষ্কার পেয়েছিলো। সোমবার সকালে প্রাধান শিক্ষক তাকে স্কুলে না যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে বাড়িতে আসলে অভিযুক্ত জোছনা বেগম জানায়, ‘তানজিলা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এবং তাকে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’

এতে করে পুরো বিষয়টি রহস্যময় হয়ে উঠে এবং চারদিকে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে, প্রাথমিক বিষয়টি খুন বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে পুরো ঘটনা জানা যাবে।’

চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মামুনুর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের জানান, শিশুটির লাশ দেখে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা যাচ্ছে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও এলাকাবাসীদের সাথে আলোচনা করলে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।

এ ব্যপারে তানজিলার মা বেগম জানায়, দগত ৯ মাস পূর্বে আমার খালাতো বোন জোন্সার বাসায় আমর মেয়েকে কাজ করতে দিয়েছি। সোমবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর খালাতো বোন জোছনা জানায় তানজিলা টয়লেটের দরজা আটকিয়ে ফাঁসি দিয়েছে। পরে চরে নিয়ে লাশ দাফন করার জন্য জানালে তারা কয়েকজন লাশ নিয়ে আসে। কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা জানা নেই। তার শরীরের গলায়, হাতে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিলো।’

এদিকে নান্টুর পার্শ্ববর্তী লোকজন জানায়, ‘তাকে নির্যাতন করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে টয়লেটের ভিতরে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। নান্টু ও তার স্ত্রী এ হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে।’

পৌর ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী মাঝি জানায়, ‘তানজিলা হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। এ ঘটনায় নিরাপরাধ মানুষ যেনো মামলা বা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে পুলিশকে নজর রাখতে হবে।’

এ দিকে এ ঘটনায় পাশ্ববর্তী দু’ভাড়াটিয়াসহ গৃহের মালিক নান্টু হাওলাদার পলাতক রয়েছে।

আশিক বিন রহিম, চীফ করেসপন্ডেন্ট

: আপডেট ০১:০০ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬, মঙ্গলবার

ডিএইচ

Share