প্রমত্তা মেঘনার ভাঙনে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরানবাজার হরিসভা এলাকা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। কয়েকটি স্থানে দেখা দিয়েছে ফাঁটল। ঝুঁকি এড়াতে জিওব্যাগ ভতি বালি ফেলা শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্যে প্রস্তাবিত ৪৩০ কোটি টাকার প্রকল্প গত মার্চ মাসে স্থগিত হয়ে গেছে।
পাউবো প্রকৌশলী জানান, চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার করা হয়নি। একটি বাঁধ পাঁচ বা দশ বছর পর পর সংস্কার করতে হয়। কিন্তু তা করা হয়নি।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.বাবুল আখতার জানান, মেঘনা নদীর পানি ও স্রোতধারা বৃদ্ধির কারণে হরিসভা এলাকা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এখানাকার ৯০ মিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, ভাঙন ঠেকাতে বালিভর্তি বস্তা ফেলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এক হাজার বস্তা ফেলা হয়েছে। আরো ফেলা হবে। এখানে মোট ১৫ হাজার বালিভর্তি বস্তা ফেলা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিমল বলেন, আমরা খুব আতংকে রয়েছি। ভাঙন আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে এলাকাবাসী। অনেক বাসিন্দা ভাঙন আতংকে এলাকা ছেড়েছেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধতন কর্মকর্তা, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এই এলাকাটি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। গতবছর হরিসভা এলাকায় ভাঙনে বেশকিছু বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ভাঙন আতংকে রয়েছে হরিসভা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উপাসনালয়ও রয়েছে। পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহি পুরানবাজার ব্যবসায়িক এলাকাও ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা প্রয়োজন।
স্থানীয় বাসিন্দা কালু হাওলাদার বলেন, আমরা আতংকে রয়েছি। যে কোনো সময় এলাকাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. নাসিম উদ্দিন বলেন, হরিসভা এলাকা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার জানান, চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার করা হয়নি। একটি বাঁধ পাঁচ বা দশ বছর পর পর সংস্কার করতে হয়। কিন্তু তা করা হয়নি।
তিনি জানান, পুরো শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্য আমরা ৪৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাঠিয়েছি। এ প্রকল্প গত মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে স্থগিত করা হয়।
মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সমীক্ষা করে পুনরায় প্রকল্প দাখিল করতে। কিন্তু করোনার কারণে সমীক্ষার জন্য একটি প্রকল্প তৈরী করা এখনো সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য,৩ হাজার ৩শ’৬০ মিটার এলাকা নিয়ে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের অবস্থান।
স্টাফ করেসপন্ডেট,৯ জুলাই ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur