চাঁদপুর

চাঁদপুর শহরে শৃঙ্খলাহীন ভ্রাম্যমান বাজারের আধিক্য

রাজস্ব হারাচ্ছে পৌরসভা : জৌলুস হারাচ্ছে নির্ধারিত বাজারগুলো

চাঁদপুর শহরে ভ্রাম্যমান বাজারের আধিক্যে জৌলুস হারাচ্ছে পৌরসভার নির্ধারিত বাজারগুলো। এতে করে বড় ধরণের রাজস্ব হারাচ্ছে চাঁদপুর পৌর সভা। যত্রতত্র এসব শৃঙ্খলাহীন ভ্রাম্যমান বাজারগুলোর কারণে সৃষ্ট যানজট এখন শহরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী।

মানুষের ব্যস্ততম সময়ে পুরো শহর যেনো মাছ আর কাঁচা বাজারে পরিনত হয়ে ওঠে। শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে রাস্তার দু’ধারে পশরা সাজিয়ে বসেন মাছ বিক্রেতা থেকে শুরু করে কাঁচা তরী-তরকারীর দোকানিরা।

দেখে যে কারো মনে হতে পারে ফুটপাথগুলো যেন তাদেরকে লিজ দিয়েছে পৌরসভা। কোনো প্রকার জবাবদিহীতা না থাকায় যে যার মত করে যেখানে সেখানে ভ্রাম্যমান বাজার সাজিয়ে বসছেন। এমনকি চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সম্মুখেও নির্ধিদায় মাছের বাজার সাজিয়ে বসতে দেখা যায় এসব ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের।

সাধারন মানুষগুলো নিজেদের প্রয়োজন পূরণ করতে গিয়ে অনেকটা বিবেক বহীর্ভূতভাবে এদের থেকেই ক্রয় করছেন নিত্যপন্য। ফলে ময়লা আবর্জনায় পুরো শহরটা নোংড়া হয়ে ওঠছে। পণ্যের মান ও দাম যাচাই করতে না পারায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। সাথে মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে পৌরসভা।

একদিকে দু’শ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এ শহর তার নির্ধারিত বাজারগুলোর জৌলুস হারিয়ে এখন অস্তিত্বের সংকটে। অন্যদিকে নানাবিধ সুক্ষ্যাতি হারিয়ে প্রতিনিয়ত আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হচ্ছে এক ধরনের অতি মুনাফা লুভি কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী।

শহরে ঢুকতেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও প্রতিদিন রাস্তার উপর মাছের ডালা সাজিয়ে বসছেন মাছ বিক্রেতারা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন আদালত প্রাঙ্গনে এসে এ ধরনের দৃশ্য দেখে চাঁদপুরের শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে কি ধারনা নিয়ে যাচ্ছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

শহরের আরেক প্রানকেন্দ্র মিশন রোডের মাথায় বলতে গেলে রাস্তা বন্ধকরেই পুরো দমে চলছে মাছের বাজার। সাথে তরী-তরকারী তো রয়েছে। সাধারণ মানুষও হাতের নাগালে সবকিছু পেয়ে বেজায় খুশি। বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বিষ্ণদী রোডে রয়েছে পৌরসভার অনুমতিহীন আরেকটি মাছ ও কাচা বাজার।

ছবিটি শহরের মিশন রোড থেকে তোলা

যদিও বেস কয়েকবার পৌরসভা সেখানে বাজার ভেঙে দিয়েছিলো। তারপরও কোনো এক অদৃশ্য শক্তি সেসখানে প্রতিনিয়ত বাজার বসানোর হীনচেষ্টায় মগ্ন। যা পৌরসভাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানোর সামিল বলে মনে করেণ সচেতন মহল।

এ ছাড়া সন্ধ্যা হলেই পুরো শহরটি’ই যেনো হয়ে ওঠে ভ্রাম্যমান বাজারের শহর। সকল ব্যস্ততম সড়কের দু’ধারে মাছসহ তরী-তরকারীর পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা।

তাছাড়া পুরা শহর জুড়েই রয়েছে ভ্যানগাড়ীর ভ্রাম্যমান বাজার। কিন্তু এ শহরেই রয়েছে পৌরসভার অত্যাধুনিক কয়েকটি মাছ ও কাচা বাজার। যেখানে সকল ধরনের নিত্যপন্য পাওয়া যাচ্ছে।

সচেতন মহলের দাবি দ্রুতসময়ের মধ্যে শহরের শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষে এসব অসাধু ব্যাসায়ীদের লাগাম টানা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে এসব ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ছোটো পরিসরে আরো বেশ কিছু স্থান নির্ধারণ করে তাদেরকে পূণর্বাসন করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন শহরের সূধীজনরা।

বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সাথে দেখবার জন্যে দাবি জানিয়েছেন সচেতন পৌরবাসী।

প্রতিবেদক : শরীফুল ইসলাম

Share