চাঁদপুর

পুলিশের তৎপরতায় বদলে গেলো চাঁদপুর লঞ্চঘাটের চিরচেনা চিত্র

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে ভোগান্তির আরেক নাম হিসেবে যাত্রীদের কাছে পরিচিত ছিলো চাঁদপুর লঞ্চঘাট। লঞ্চ ওঠা আর লঞ্চ থেকে নামতে গিয়ে সিএনজি-স্কুটার চালক কিংবা ঘাটের কুলিদের আচরনে বিরম্ভনায় পরেনি এমন অভিজ্ঞাতা খুব কমই ছিলো এই রুটে চলাচলরত লঞ্চ যাত্রীদের।

বিশেষ করে সিএনজি-স্কুটার চালকদের দ্বারা যাত্রীদের টানাহেঁচড়া ছিলো নিত্যদিনের দৃশ্যপট। এ নিয়ে প্রতিদিনই চালক ও যাত্রীদের মাঝে কথা কাটাকাটি হতো। কখনো কখনো এটি হাতাহাতিতে রুপ নিতো।

বিষয়টি নজরে এলে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. জিহাদুল কবির পিপিএম স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেলাবাসীকে কথা দেন মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি এই চিত্র পাল্টে দিবেন। পুলিশ সুপার তার কথা রেখেছেন। তার নিদের্শে মাত্র একদিনের অভিযানেই লঞ্চঘাটের সেই চিরচেনা দৃশ্যপট।

বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় তিনি লঞ্চঘাটে যাত্রী হয়রানি বন্ধে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাঁদপুর সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরীর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।

এসময় প্রথমেই তিনি লঞ্চের ঘাট ম্যানাজার, ঘাট ইজারাদার, কুলি এবং সিএনজি-স্কুটার চালকদের সাথে পৃথকভাবে কথা বলেন।

জেলা পুলিশের এই উর্ধ্বতন কর্মকতা বলেন, ‘এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন আশা-যাওয়া করে। অথচ আনারা (চালকরা) যাত্রীদের যেভাবে টানা-হেঁচড়া করেন অশোভন দেখা দেয়। এতে যাত্রীরা বিরক্ত হয়। এটি তারা পছন্দ করেন না। শুধু তাই নয়, এভাবে চলতে থাকলে আপনাদের মাঝেও শৃঙ্খলা থাকে না, বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।’

আমাদের পুলিশ সুপার স্যার নির্দেশ দিয়েছেন এখন থেকে আর কোনো চালক যাত্রীদের ভ্যাগ নিয়ে টানা-হেঁচড়া করতে পারবেন না। কুলি ভাইরাও এটি করবেন না। চালকরা যে যার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন এবং ভিন্ন ভিন্ন রুটের গাড়িগুলো আলাদা আলাদাভাবে পাকিং করা থাকবে। যাত্রী তার ইচ্ছে অনুযায়ী গাড়ি ভাড়া করবে। আজকে আমরা প্রথম বারের মতো সতর্ক করছি। কিন্তু এরপর থেকে আমাদের নির্দেশনা না মানলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।

এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাঁদপুর সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরীর কথা শেষ হতেই সিএনজি-স্কুটারের চালকরা যার যার গাড়ির সামনে চলে যায়। এবং এরপর থেকে এভাবেই তারা যাত্রী উঠাবেন বলে জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ পরিদর্শক রেজাউল করিম সুমন, চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক অনুপ চক্রবর্ত্তী, পুলিশ লাইন্সের উপ-পরিদর্শক কামরুল আলম, সহকারী উপ-পরিদর্শক আতাউর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যবৃন্দ।

চাঁদপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লঞ্চঘাটে যাত্রী হয়রানি বন্ধ ও যাত্রী চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে জেলা পুলিশ। কুলি শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ ও সিএনজি অটোবাইকের জন্য এলাকা অনুযায়ী আলাদা স্ট্যান্ড নির্ধারণ করার মাধ্যমে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ খুঁটি বসানোর কাজ শুরু করেছে জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে।

এছাড়া ও ব্যক্তিগত গাড়ি, সরকারি যানবাহন ও ভিআইপি যানবাহনের জন্য আলাদা পার্কিং এর ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণে বিআইডব্লিউটিএ -এর ২ জন লাইন গার্ড এবং পুলিশ সদস্যরা টহলে থাকবেন।

প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম
১৪ ফেব্রুয়ারি,২০১৯

Share