চাঁদপুরের বড় স্টেশন মোলহেডের পূর্ব পাশে ব্র্যান্ডিং জেলার সেলফি জোন হিসেবে ইলিশের ভাস্কর্য নির্মাণ করছেন কচুয়ার নিবেদিত প্রাণ চিত্রশিল্পী আজাদ হোসেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের অর্থায়নে ও সাবেক জেলা প্রশাসক মো.আব্দুস সবুর মন্ডলের অনুপ্রেরণায় বড় স্টেশন মোলহেডের পূর্ব পাশে এ ‘ভাস্কর্য ইলিশ’ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ।
সাবেক জেলা প্রশাসক মো.আব্দুস সবুর মন্ডল পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরকে কাজটি করার ক্ষেত্রে অনুরোধ জানান ও তিনি নিজেও সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়,‘ ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ ও ‘ব্র্যাডিং জেলা’ চাঁদপুরের ইলিশের ঐতিহ্য ও সুখ্যাতি অ¤øান করে রাখতে এবং অদূর ভবিষ্যতে মোলহেডকে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণে প্রাথমিক ধাপ হিসেবে ‘ভাস্কর্য ইলিশ’ নির্মাণ করা হচ্ছে ।
২০১৭-’১৮ অর্থবছরের প্রথম দিকে এর নির্মাণ কাজ শুরু করেন চিত্রশিল্পী আজাদ হোসেন। কত টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে তার তথ্য এ চিত্রশিল্পী জানাতে পারেন নি। তবে তিনি প্রয়োজন মত টাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর থেকে চেয়ে নেন বলে জানান।
নিবেদিত প্রাণ চিত্রশিল্পী আজাদ হোসেন ১৯৬৭ সালে কচুয়ার বড়পাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির এক স্কুল থেকে এসএসসি, ১৯৮৬ সালে কচুয়ার পয়ালগাছা কলেজ থেকে এইচএস সি পাশ করে চট্টগ্রাম চলে যান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৯৩-৯৪ সালে বিএফএ (ব্যাচেলর অব আর্চ) ডিগ্রি নেন। তবে ১৯৯০ সালেই চট্টগ্রামে আর্ট নিকেতন নামে একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বপ্রথম তিনি ‘ চারু-কারুকলা’ বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
চট্টগ্রামে তিনি টিউশানি করে জীবন চালাতেন পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গিয়ে বিনে পয়সায় শিক্ষাথীদের চিত্রাংকনে উৎসাহ যোগাতেন।
চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুল,কিন্ডার গান্ডেন,চাঁদপুরের উদয়ন ও কোনো কোনো হাই স্কুল ও বিভিন্ন সঙ্গীত নিকেতনে অনুরূপ শিক্ষার্থীদের আর্ট শিখাতে উৎসাহ যোগাতে চলে যেতেন । চিত্রাংকন,স্থাপত্য,ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ তার এখন নেশা থেকে পেশায় পরিণত হয়েছে। যৌবনের উত্তাল এ মূহুর্তে তিনি এ সব কাজে নিজকে সম্পৃক্ত করে ফেলেছেন। ।
চিত্রশিল্পী আজাদ হোসেন চাঁদপুর টাইমস কে বলেন ,‘ চাঁদপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক মো.আব্দুস সবুর মন্ডলের অনুপ্রেরণায় বড় স্টেশন মোলহেডের পূর্ব পাশে এ সেলফি জোন হিসেব ভাস্কর্য ইলিশ নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছি। ব্র্যাডিং জেলা চাঁদপুরের ইলিশের ঐতিহ্য ও সুখ্যাতি অ¤øান করে রাখতেই এটি নির্মিত হচ্ছে।’
পারিশ্রমিক হিসেবে কী পাবেন এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কাজ শেষ হলে আমাকে সম্মানি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত তিনি ৪৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন। এরইমধ্যে চাঁদপুর প্রেস ক্লাব অভিষেক অনুষ্ঠানে তাকে পরিচিতি করে সম্মানিত করেছেন।
চাঁদপুরে ‘৯০ গণ আন্দোলনে শহিদ হওয়া চিত্রলেখার মোড় ‘রাজু ভাস্কর্য ’ও তিনি নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন। যা খুব শীঘ্রই এর কাজ শেষ হবে। এ কাজে তিনি ৪-৫ দিনের জন্যে ঢাকায় অবস্থান করছেন। দু’টোর কাজ শেষ হলে কী সম্মানী করেন তা বলা যাবে।’
ভবিষ্যতের বিষয়ে তিনি বলেন, চাঁদপুরে বিভিন্ন উপজেলায় এ ধরণের ভাস্কর্য বা ম্যুরাল, নাট্য মঞ্চ, কচুয়ায় জালাল ম্যুরাল করার প্রস্তাব এসেছে’ এর মধ্যে হাজীগঞ্জে ‘জাতীয় ফুল শাপলা’ ও ‘জাতীয় ফল কাঁঠাল’ ভাস্কর্য করাব প্রস্তাব পেয়েছেন।
এস এ সুলতান,মনিরুল ইসলাম ও সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ প্রমুখ বরেণ্য ব্যাক্তিদের একজন অনুসারী তিনি। ৫৫ বছর বয়সী এ চিত্রশিল্পী আজাদ হোসেন এখনো অবিবাহিত। বর্তমানে চাঁদপুর মোলহেডের মসজিদ সংলগ্ন একটি কক্ষে জীবন অতিবাহিত করছেন।
(অনুমতি ব্যাতিত কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ)
প্রতিবেদক : আবদুল গনি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:১০ পিএম, ১ মে ২০১৮, মঙ্গলবার
ডিএইচ