Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে প্রশিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে, মহিলা বিষয়ক

চাঁদপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে প্রশিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

চাঁদপুরে জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের জীবীকায়ন প্রকল্পে ৫টি পদে নতুন করে প্রশিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্বের আবেদনের পেক্ষিতে দু’জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই প্রকল্পের পুরোনো ৫ প্রশিক্ষককে কোনোপ্রকার অব্যহতি কিংবা তাদের বেতনভাতা না দিয়েই নতুন করে প্রশিক্ষক নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ করেছে পুরোনে ৪ প্রশিক্ষক।

মঙ্গলবার দুপরে নতুন করে নিয়োগ পরিক্ষা চলাকালিন সাবেক ৪ প্রশিক্ষক উপস্থিত হয়ে এই অভিযোগ করেন। তাদের দাবী ‘তাদেরে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বাদ দিয়ে নতুন করে প্রশিক্ষক নিয়োদ দেয়া হয়েছে। অথচ মানবিক দিক ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে আগের ৪ জনকে (১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন) পুনঃনিয়োগ দেয়ার জন্যে স্থানীয় এমপি ও জেলা প্রশাসনের সুপারী থাকা সত্ত্বেও তা করা হয়নি।

মো: সোহেল রানা, সালমা আক্তার, সামিমা নাসরিন ও রুমা আক্তার নামে সাবেক ৪ প্রশিক্ষক সাংবাদিকদের জানান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক গত ৫/৫/২০১১ তারিখে সারা দেশে ৬৪ জেলায় ডব্লিউটিসি প্রকল্পে প্রশিক্ষক হিসেবে ৫জন পুরুষ-মহিলা নিয়োগ দেয়া হয়।

এর মধ্যে চাঁদপুরে মোবাইল সাভিসিংয়ে মো. সোহেল রান, আধুনিক দর্জি বিজ্ঞানে সালমা আক্তার, ব্লক বাটিকস সামিমা নাসরিন, মোম ও শো-পিসে হাসানা হাসি ও বিউটি ফিকেশন পদে রুমা আক্তার প্রশিক্ষক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পায়। যা ২০১৪ সালের জুন মাসে সমাপ্ত হয়।

এরপর ডব্লিউটিসি প্রকল্পের অর্থায়নে সারাদেশে জীবিকায়ন কর্মসূচি চালু করা হয়। এই কর্মসূচিতে সদর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশে ডব্লিউটিসি প্রকল্পে প্রশিক্ষকদের পুনঃনিয়োগ দেয়া হয়। তখন এই ককর্মসূচির কোনো নীতিমালা হয়নি। নীতিমালা আসে ২৩/০৯/ ২০১৪ ইং তারিখে।

এরপর ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর চাঁদপুরে জেলা কর্মকর্তা হিসেকে মো. মহিউদ্দিন আহমেদ যোগদান করেন। তিনি ২০১৭ সালের জুন মাসে প্রশিক্ষকদের ৬ মাসের বেতন ও এরিয়া বিল আটকে রাখেন। বেতন ভাতা না পেয়েও প্রশিক্ষকরা নিয়মিত অফিস করে যান। মূলত এরপর থেকে (২০১৮ সাল থেকে) এ পর্যন্ত ৬৪ জেলার মধ্যে শুধুমাত্র চাঁদপুর জেলা নতুন প্রশিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্যে এই কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।

সাবেক ৪ প্রশিক্ষক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বাদ দিয়ে নতুন করে প্রশিক্ষক নিয়োদ দেয়া হয়েছে। অথচ মানবিক দিক ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে আগের ৪ জনকে (১জন মৃত্যুবরণ করেছেন) পুনঃনিয়োগ দেয়ার জন্যে স্থানীয় এমপি ও জেলা প্রশাসনের সুপারী থাকা সত্ত্বেও তা করা হয়নি। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকতা টাকার বিনিময়ে লোক নিয়োগ দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়োগ পরিক্ষার সভাপতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে সাবেক প্রশিক্ষকদের পুনঃনিয়োগের জন্যে সুপারিস করেছিলাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অধিদপ্তর তাদের নিয়োগ পুনঃবিবেচনা করেনি। নতুন করে লোক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে আমরা নিয়োগ পক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিয়োগের পরিক্ষার পক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পূর্বে যারা ছিলেন, তাদের বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকতা বলেন, আগের যারা প্রশিক্ষক ছিলো, তাদের চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে তারা নতুন করে আবেদন করেনি। এমনকি তাদের বকেয়া বেতনও এসে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই তা পরিশোধ করা হবে। যথাযথ পক্রিয়া সম্পন্ন করে নতুন প্রশিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। টাকার বিনিময়ে লোক নিয়োগ দেয়ার কোনো প্রশ্নেই আসে না।

প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম,৩০ ডিসেম্বর ২০২০