Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর বাগাদী স্কুলে ২০ টাকা পরীক্ষার ফি কম দেয়ায়…(ভিডিও)

চাঁদপুর বাগাদী স্কুলে ২০ টাকা পরীক্ষার ফি কম দেয়ায়…(ভিডিও)

বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিষ্ঠুরতায় গলায় ফাঁস দিয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, বিক্ষুব্ধ জনতার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর

মাত্র ২০ টাকার জন্য শিক্ষকদের অপমান, সইতে না পেরে সাথী অক্তার (১৬) নামের ৮ম শ্রেণির স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সোমবার (২৯ আগস্ট) চাঁদপুর সদরের বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় শেখ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিলসহ অভিযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরার বিদ্যালয়ের ভেতরে অবরূদ্ধ হয়ে পড়ে। এসময় অনেক ছাত্রীরা ভয়ে চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে।

স্কুলছাত্রী সাথীর মা চায়না বেগম ও এলাকাবাসী জানায় বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সে। স্কুলের অফিস সহকারী ফাতেমা বেগম ও সহকারী শিক্ষক শংকর তারা দু’জন জেএসসির মডেল টেস্ট পরীক্ষার ফি বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছে ২শ ৮০ টাকা করে নেন।

রোববার (২৮ আগস্ট) সাথী আক্তার স্কুলে গেলে শিক্ষক ফাতেমা বেগমের কাছে ২শ ৬০ টাকা দিলে ২০ টাকা কম দেয়ায় তাকে এবং অন্যান্য যারা কম টাকা দিয়েছে তাদের সবাইকে বিদ্যালয়ের বাহিরে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রেখে কান ধরে উঠবস করায়।

পরেদিন সোমবার (২৯ আগস্ট) সকালে সাথী আক্তার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য স্কুলে গেলে অভিযুক্ত শিক্ষকরা তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। পরে সে বাড়িতে গিয়ে টাকার জন্য মায়ের সাথে কান্নাকাটি করে।

তার মা চায়না বেগম টাকা যোগার করতে বাহিরে অন্য বাড়িতে গেলে এ সুযোগে সাথী শিক্ষকদের অপমান সইতে না পেরে রাগে ক্ষোভে ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

এ ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসি উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্তদের বিচারের দাি তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালায়।

পরে বিষয়টি চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আত্মহত্যার ঘটনাটি আমরা শুনেছি এবং তাকে দেখে এসেছি। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলা অবস্থায়ই বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা ভাংচুর শুরু হওয়ায় তিনি পুরোপুরি বক্তব্য দিতে পারেননি।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা বেগম ও শংকরের সাথে কথা বলতে চাইলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। তার আগেই স্কুলের মারমুখী অবস্থান থেকে গা ঢাকা দেন।

এদিকে এলাকাবাসি উক্ত বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরে বলেন এর আগেও এ স্কুলের শিক্ষকদের এমন নিষ্ঠুর আচরণের কারনে আরো ক’জন ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে এবং বিষ পানে আত্মহত্যা করার ঘটনা ঘটেছে।

আরো জানায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে যদি কোন শিক্ষার্থী প্রাইভেট কিংবা কোচিং না পড়ে তাহলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয়। এরকম আরো অনেক অনিয়মসহ কোটি টাকার বাণিজ্যের কথা ক্ষোভের সাথে এলাকাবাসী সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

কোটি টাকার বাণিজ্যের পেছনে প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটিকে দায়ী করে বিক্ষুব্দরা বক্তব্য প্রদান করেন।

আগামীতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তাই এমন ঘটনার জন্য বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসি অভিযুক্ত স্কুল এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্তা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

পরিস্থিতি শান্ত করতে ঘটনাস্থলে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ালি উল্লা অলি ও সেকেন্ড অফিসার মনিরুল ইসলামসহ একটি টিম সেখানে পৌঁছান। স্থানীয়দেরকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭:০০ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ

Leave a Reply