চাঁদপুর শহরে বঙ্গবন্ধু সড়কের নিন্মমানের সংস্কার কাজেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সড়কটির সংস্কার কাজটি দেখার মতো কেউ না থাকায় ঠিকাদার যা ইচ্ছে তাই করে কোন রকম ভাবে সংস্কার কাজ করে চলেছে। যে নিয়মে মানসম্মত সংস্কার কাজ হওয়ার কথা বঙ্গবন্ধু সড়কটির সংস্কার কাজে তার কিছুই হয়নি বলে এলাকাবাসির অভিযোগ।
জানা যায়, এ বছর সড়কটির পুনঃসংস্কার কাজের টেন্ডারটি দু’জন ঠিকাদারকে ভাগ করে দেয়া হয়। এতে ১ জনের দায়িত্বে পড়েন মিশন রোড হতে দর্জিঘাট পর্যন্ত। অন্য ঠিকাদারের দায়িত্ব পড়ে দর্জিঘাট থেকে ওয়্যারলেস ফরিদগঞ্জ সড়ক পর্যন্ত। আর এ দু ভাগে সড়কটির সংস্কার কাজ ভাগ করে দেয়ার কারনে ৫/৬ মাস ধরে চরম দুর্ভোগ পোহান, বিভিন্ন যানবাহন চালক, পথচারী ও এলাকাবাসি। প্রথম যেদিন সড়কটির সংস্কার কাজ ধরা হয়, তখন ঠিকাদাররা পুরো সড়কটি পিচ ঢালাই খুড়িয়ে তা কয়েকমাস ধরে ফেলে রাখেন। আর সড়কের ওই এলোমেলো অবস্থায় যানবাহন চলাচল করার সময় লাল ধুলোবালি বিভিন্ন বাসা বাড়িতে উড়ে পড়ার কারনে চরম দুর্ভোগের শিকার হন এলাকাবাসি। তারপরেও বন্ধ রাখা হয় সংস্কার কাজ।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ঈদুল ফিতরের ক’দিন আগে দর্জিঘাট থেকে ওয়্যারলেস পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার শেষ হলেও অন্য ঠিকাদার মোঃ সোহাগের গাফলতি ও খামখেয়ালির কারনে মিশন রোড থেকে দর্জিঘাট পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার কাজ অসুম্পর্ন হয়েই পড়ে থাকে। সর্বশেষ গত দু’তিন দিন আগে মিশন রোড থেকে দর্জিঘাট পর্যন্ত সংস্কার কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু তা অনেক অনিয়মের মধ্যদিয়ে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের মিশন রোড হতে বঙ্গবন্ধু সড়কের যে পিচ ঢালাইর কাজ ধরা হয় তা একেবারেই নিন্মমানের কাজ। পিচ ঢালাইর পূর্বে সড়করে ওপর যে কংক্রিট ও ধুলোবালি ফেলে রাখা হয়েছে, সেটি ভালো ভাবে পরিস্কার না কের এবং তার ওপর কোন পিচ না দিয়ে ওই ধুলোবালির ওপরই চলছে পাথরের পিচ ঢালাই। যদিও নিয়ম রয়েছে পাথর ঢালাইর পূর্বে সড়কের ওপর থাকা কংক্রিট ভালো ভাবে পরিস্কার করে তারপর তার ওপর ঘন করে পিচ ঢালাই দেয়ার পর তার ওপর পিচ ঢালাই করা। কিন্তু দেখা গেছে পিচ ঢালাইর আগের দিন রাতে সড়করে ওপর কেরোসিন দিয়ে ফাইল কোট দেয়া হয়। আর ওই ফাইলকোট মানুষের পায়ের ঘষায় ও যানবাহনের চাকায় এবং বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়। সেখানে ২য় বার আর কোন পিচ না দিয়েই চলছে পাথরের পিচ ঢালাই।
এছাড়া দেড় ইঞ্চি গভীরে এবং পাশে ১৩ ফুট ঢালাইর পরিমান দেয়ার কথা থাকলেও কিছু কিছুস্থানে দেড় ইঞ্চি ঢালাই থাকলেও অধিকাংশ স্থানেই তার কম ঢালাই রয়েছে। একটি সড়কের সংস্কার কাজ মানসম্মত টেকসই হওয়ার কথা থাকলেও কাজের টেন্ডার নেয়া ঠিকাদার সোহাগ অধিক লাভের জন্য তদারকি কারীদের ম্যানেজ করে তার ইচ্ছে মতোই বঙ্গবন্ধু সড়কে নিন্মমানের সংস্কার কাজ করে চলেছেন। তাই সড়কটির সংস্কার কাজ দেখার কেউ থাকলেও যেনো কেউ নেই।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার সোহাগের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি তার কাজ মানস্মত এবং নিয়ম মতো হচ্ছে বলে আর কোন ভাবেই বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার উপ সহকারী প্রকৌশলী দীলিপ কুমার দে বলেন, এ কাজের নিয়মই এটা। তারপরেও আমরা চেষ্টা করছি যতটুকু মানসম্মত কাজ তাদের কাছ থেকে আদায় করা যায়।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি