চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের গর্তে পড়ে দুটি ট্রাক ও একটি পিকআপ ভ্যান আটকা পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে অন্যান্য যানবাহন চালক ও পথচারীদের। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে বঙ্গবন্ধুু সড়কের দর্জি ঘাট দোকান সংলগ্ন মোল্লা বাড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে চাঁদপুর শহরের ট্রাক ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা মেট্টো, ট- ১৪, ৮৬৮৮ নম্বরের একটি মালবাহী ট্রাক বঙ্গবন্ধু সড়কের দর্জিঘাট এলাকায় বিশাল কয়েকটি গর্ত থাকায় ওইস্থানে আটকা পড়ে। তার পেছনে থাকা যমুনা অয়েল কোম্পানী লিমিটেডের চট্ট মোট্টো-ঢ ৪১,০৩৩৯ তেলের ভাউচার আটকে পড়া ট্রাকটিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় সড়কের পাশে থাকা আরেকটি গর্তে চাকা ধেবে গিয়ে আটকা পড়ে।
যমুনা অয়েল কোম্পানীর ভাউচারের চালক আবুল কালাম জানায়, ‘তিনি চাঁদপুর শহরের যমুনা ডিপো থেকে সাড়ে ১৩ হাজার লিটার কেরোসিন তেল লোড করে কুমিল্লা উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। গাড়িটি সড়কের ওইস্থানে গেলে তিনি দেখতে পান তার সামনে থাকা একটি ট্রাক গর্তে আটকা পড়েছে। তিনি বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করে ওই ট্রাকটি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় সড়কের পাশে চাকা ধেবে যায় এবং তার গাড়িটে আটকা পড়ে। এতে করে ওই সড়কে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা যান চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হয়। পরে চাঁদপুর ওয়্যারলেস এলাকার দেলোয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপের লোকের মাধ্যমে কয়েক ঘন্টা ধরে চেষ্টা করে তা উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়াও গত ২২ জুলাই দুপুরেও ঘটনার স্থান থেকে ১০ গজ দুরে একটি পিকআপ ভ্যান গর্তে আটকা পড়ে। আটকে পড়া ওই পিকআপ ভ্যানটি প্রায় দুই তিন গন্টা পড়ে উদ্ধার করা হয়।
চালক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ সড়কটি গত কয়েক বছর ধরে এমন বেহাল দশায় পড়ে আছে। বিভিন্ন সময়ে সড়কের বিভিন্নস্থানে এরকম বেশ ক’টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ আজো সড়কটি সংস্কার করার কোন উদ্যোগ নেয়নি।
এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ট্রাক দুটো সরানোর চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, ‘গত কয়েক বছরে ছোট বড় যান চলাচলের কারণে সড়কের বিভিন্নস্থানে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আর ওই গর্তের ওপর দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছে ছোট বড় যানবাহন। এ কারনে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুঘর্টনা।
প্রায় ৬/৭ বছর আগে বঙ্গবন্ধু সড়কটি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ট্রাক, বাস, কর্ভাট ভ্যান, তেলের লড়ি, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন ভারী যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়। তবে এসব যানবাহনের মধ্যে মালবাহী ট্রাক, কর্ভাড ভ্যান, তেলের লরি এবং পিকআপ ভ্যান বেশি চলাচল করে থাকে। যার ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সড়কটি বেহাল দশায় পরিণত হয়।
সরজমিনে দেখাযায় বঙ্গবন্ধু সড়কটির চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ সড়ক হতে মিশন রোড পর্যন্ত সড়কের বিভিন্নস্থানে পাকা পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে আছে। বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে থাকা লেকের দক্ষিণ পাশের অংশ প্রায় দেড় দু’ফুট ধেবে গেছে। বিশেষ করে হাজী বাড়ি সংলগ্নস্থানে বিশাল জায়গা জুড়ে সড়কে প্রায় দুই আড়াই ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আর ওই গর্তের স্থানে প্রতিদিনই কমবেশি সিএনজি স্কুটার, অটোবাইক দুর্ঘটনায় পড়ছে।
এছাড়া গত ৩০ জুন শুক্রবার রাতে একটি ট্রাক গর্তে পড়ে একটি চাকা বিস্পোরিত হয়। চাকা বিস্পোরনের বিকট শব্দে এলাকা বাসির মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাবেই দুর্ঘটনার মধ্যদিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন।
স্থানীয়রা মনে করছেন ব্যস্ততম এ সড়কটি পুনরায় মেরামত না করা পর্যন্ত এবং ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ না করা হলে আগামী ক’বছরের মধ্যে সড়কটির আরো বেহাল দশায় পরিণত হবে।
কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৪: ০০ পিএম, ২৩ জুলাই ২০১৭, রোববার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur