বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, যে কোন সরকার ক্ষমতায় আসলে হবে না। আসতে হবে জনগণের এবং শেখ হাসিনার সরকার। আমরা নারীর অধিকারের কথা বলি, আর নারী বিদ্বেষী সরকারকে ভোট দিব। আমি সততা ও ন্যয় চাইব, আর অসৎ মানুষকে ক্ষমতায় বসাবো, সেটাত হয় না। আমি একই সাথে বলব আজকের সমাজে খুব সৎ থাকাটা কষ্টকর একটি বিষয়। সেই কষ্টকর কাজটা কষ্টকরে অনেকে ধরে রেখেছেন এবং রাখবেন। কারণ তাদের রক্ত সততার বাহিরে যাওয়ার কোন পথ দেখায় না।
৮ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাব ভবনের নীচ তলা কমিউনিটি সেন্টারে প্রেসক্লাবের ২০২২ সালের কমিটির অভিষেক ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদেরকে বাংলাদেশের গত ১শ’ বছরের ইতিহাস জানতে হবে। আমি যদি রাজনীতি করি, সাংবাদিকতা করি, প্রশাসন চালাই কিংবা যে কোন কাজই করি প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। ইতিহাস জানা, ইতিহাসের গতি প্রকৃতি বোঝা ছাড়া এসব পেশার কাজগুলো ঠিকভাবে করা যায় না। ইতিহাস জেনে বুঝতে হবে পক্ষকে বিপক্ষকে। বুঝতে হবে এদেশের মাটি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা, সাহিত্য, মানুষের বোধ ও মানবিকতা বোধের সঙ্গে কার সম্পর্ক।
দীপু মনি বলেন, আমাদের রাজনীতি দু’টি ভাগ স্পষ্ট। একটি খুবই সংকীর্ণ তথা কথিত ধর্মীয় ধারা। যেটা ধর্মকে আসলে ব্যবহার করে। আরেকটি হচ্ছে উদার গণতান্ত্রিক মানবতাবাদী ধারা। এই দু’টি ধারা আমরা গত ১০০ বছর ধরে স্পষ্টভাবে দেখতে পাই। যখন উদার গণতান্ত্রিক মানবতাবাদী ধারা দেশ পরিচালনায় এসেছেন, এই দেশ এগিয়ে গেছে এবং এই দেশের মানুষের স্বপ্ন আশা আকাঙ্খা বাস্তবায়িত হয়েছে। আর বিপরীত ধারার লোকজন যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই দেশ পিছন দিকে হাটতে শুরু করেছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক কিছুতে নিরপেক্ষতা চাই। কখনো কখনো কিন্তু নিরপেক্ষতা অন্যায়কারীর পক্ষ নেয়া হয়ে যায়। যখন স্পষ্টভাবে একটি পক্ষ অন্যায় করছে, আরেকটি পক্ষ অন্যায় করছে না ন্যয়ের পক্ষে আছে। এর বাহিরে নিরপেক্ষতার নামে যিনি মাঝ পথ দিয়ে হাঁটেন, তিনি কিন্তু সত্য ও ন্যয়কে তুলে ধরছেন না। তিনি সত্য ও ন্যয়ের হাতকে শক্তিশারী করছেন না বরং নানাভাবে অন্যয়কে উস্কে দিচ্ছেন। কাজই নিরপেক্ষতা সব সময় ভাল না।
দীপু মনি বলেন, পারিবারিক কারণে সংবাদপত্র এবং সাবিদকদের সাথে সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। চাঁদপুরের সাংবাদিকদের সাথে আমার সম্পর্ক খুবই ভাল। একটি জেলা সদর থেকে অনেকগুলো খবরের কাগজ নিয়মিত বের হওয়া এটি একটি বড় জিনিস। সংবাদপত্র এমন একটি জিনিস, যেখানে বস্তুনিষ্ঠতার বাহিরে কোন জায়গা নেই। যে কোন বিষয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরা সেটা খুবই প্রয়োজন। আমাদের সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে সঠিক তথ্য দেয়া দরকার। সে ক্ষেত্রে সংবাদপত্র গুরু দায়িত্বশীলতা পালন করে। একই সাথে সংবাদপত্র পড়ে পড়ে মানুষ অনেক কিছু শেখে।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ ট্রাস্ট্রের ট্রাস্টি ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী।
সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জীবন, ইকবাল বিন বাশার, কাজী শাহাদাত, অধ্যাবক জালাল চৌধুরী, বিএম হান্নান, শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, মির্জা জাকির, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, জি এম শাহিন, এএইচএম আহসান উল্লাহ, সিনিয়র সদস্য আব্দুর রহমান, আল ইমরান শোভন, ফারুক আহমেদ, আনোয়ার হাবিব কাজল, মোশাররফ হোসেন লিটন, এম এ লতিফ, রোকনুজ্জামান রোকন, এম আই মমিন খান, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সোবহান লিটন, হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের পক্ষে কামরুজ্জামান টুটুল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত সচিব আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান, এনএসআই উপপরিচালক শাহ মো. আরমান, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, বাবুরহাট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সভাপতি সেলিম আকবর, পিপি অ্যাড. রনজিত রায় চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূইয়া, ডিআইও-১ মনিরুল ইসলাম, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রশিদ, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল,জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সমবায়ী জসিম উদ্দিন শেখ, প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি, জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি জহির মিজি প্রমুখ।
পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন আব্দুর রহমান গাজী, গীতা পাঠ করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ চন্দ্র সূত্রধর।
স্টাফ করেসপন্ডেট , ৮ এপ্রিল ২০২২