হাজীগঞ্জ

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অতিরিক্ত বিল নিয়ে বিপাকে গ্রাহকরা

চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি- ১ এর আওতায় অতিরিক্ত বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ছোট বড় আবাসিক ও বানিজ্যিক গ্রাহকরা। অতিরিক্ত এ বিল কিভাবে পরিশোধ করা হবে বা পরবর্তীতে সংশোধন হবে কিনা এর কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।

গ্রাহকদের অভিযোগ,মিটার না দেখেই মনগড়া বিল তৈরি করে রীতিমত হয়রানি করছে পল্লী বিদ্যুৎ। অনেক গ্রাহক, সমিতির দপ্তর ও আঞ্চলিক কার্যালয়ে যোগাযোগ করেও কোনো সুফল বা প্রতিকার না পেয়ে এক প্রকার তাদের মনে ক্ষোভ বিরাজ চলছে।

অফিস সৃত্রে জানাযায়, চাঁদপুর- পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি ১ এর আওতায় হাজীগঞ্জ,শাহরাস্তি,কচুয়া মিলে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ গ্রাহক রয়েছে।

যেখানে এ দপ্তর থেকে গ্রাহকদের মিটার বিল বাবৎ প্রতিমাসে সদরদপ্তরে জমা হয় ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকা। সেখানে করোনার মাঝে এবার প্রায় ১৮ কোটি টাকা জমা হয়েছে।

পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের দাবি, করোনা কালে মানুষ বাসায় বেশি সময় দিয়েছে যে কারনে, লাইট,ফ্যান, টিভিসহ নিত্যদিন চলমানের কারনে বিদ্যুৎ বিল বেশী এসেছে।

গ্রাহক পর্যায়ে বিন্নতা দেখা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার জয়শরা গ্রামের নুর মোহাম্মদ, মোহন ভূইয়া, ফারুক হোসেন, আনোয়ার হোসেন ও তাহের মিয়াসহ একাধিক গ্রাহক জানান, আমরা নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিষদের সর্তেও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে একবারে ৩ মাসের ভূতুড়ে বিল এসেছে। যা পূর্বের মাসের তুলনায় দ্বিগুণ ও তিন গুনের বেশী। এখন অতিরিক্ত বিল একসাথে পরিষদে চরম হিমসীমে পড়তে হচ্ছে।

উপজেলার পাতানিশ গ্রামের কৃষক চাঁন মিয়া, পৌরসভার বদরপুরের শাহিনসহ বেশ কয়েকজন জানান, পল্লী বিদ্যুতের বিল নিয়ে বর্তমানে গ্রাহক হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা। আমরা পল্লী বিদ্যুৎতের মনগড়া বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছি। অতিরিক্ত বিলের একটা সংশোধন করা দরকার ছিল। তাছাড়া সরকার বলেছে, জরিমানা নিবে না, অথচ আমরা বিলম্বমাসুলের জরিমানার বিল দিয়েছি।

জানা যায়, হাজার থেকে লক্ষ ছাড়িয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বাজারের একাধিক বড় বড় ব্যবসায়ীর অভিযোগের তেমন একটা সমাধান পায়নি, সেখানে প্রতিদিন যেসব ছোটখাটো অভিযোগ জমা পড়ছে তার কোন পাত্তাই দিচ্ছেন না পল্লীবিদ্যুৎ অফিস।

ভূতুড়ে বিলের কপি ও পূর্বের কাগজপত্রসহ সরাসরি অভিযোগ নিয়ে অফিসে আসেন প্রতিদিন গড়ে শতাধিকের মত গ্রাহক। এর মধ্যে গত ২৮ জুন রবিবার হাজীগঞ্জের দেশগাঁও গ্রামের কামাল হোসেন, শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দক্ষিন ইউনিয়নের দোপল্লা গ্রামের আ. রহিম, কচুয়া উপজেলার শাহাবউদ্দিনের অভিযোগে দেখা যায় আকাশ পাতাল ভূতুড়ে বিলের কান্ড। একপ্রকার সমাধান না পেয়ে এসব গ্রাহকরা বলতে শুনা যায়, পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারাই সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য যথেষ্ট।

চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি ১এর এজিএম (অর্থ) ও বিদ্যুৎ বিল সমন্বয় সেলের প্রধান মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে বিল রিডার বাড়িতে ঢুকতে পারেনি। অতিরিক্ত বিল যাদের এসেছে পরে তা সমন্বয় করা হবে। বাকি প্রশ্নের জবাব জিএম স্যার বলতে পারবেন।

চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি -১এর জেনারেল ম্যানেজার মো: কেফায়েত উল্লাহ্ জানান, আমাদের পল্লী বিদ্যুৎ এ ভূতুড়ে ও ভূয়া বিলের সুযোগ নেই।

মার্চ ও এপ্রিল মাসে করোনার কারনে মিটার রিডাররা সরেজমিনে যেতে না পারলেও মে মাসে গিয়ে শতভাগ শুদ্ধ বিল তৈরি করা হয়েছে। গ্রামের কিছু অশিক্ষিত গ্রাহক আছে তারাই না বুঝে অফিসে এসে অভিযোগের পাহাড় করছে। আমরা বরাবরই বলেছি মিটারের রিডিংয়ে অতিরিক্ত বিল থাকলে এসব গ্রাহকদের বিল সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিবেদক:জহিরুল ইসলাম জয়,২৯ জুন ২০২০

Share