চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ পুর্নবাসন প্রকল্পের ব্যায় ৪শ’ ২০ কোটি টাকা বাজেটের বরাদ্দ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে বৃহত প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড।
চাঁদপুর পুরান বাজারের হরিসভাসহ মোট ১ হাজার ৬’শ ৩০ মিটার এবং নতুন বাজারের ১ হাজার ৭’শ ৩০ মিটার সহ মোট ৩ হাজার ৩’শ ৬০ মিটার এলাকা জুড়ে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। আর এটির নামকরন করা হয়েছে ,চাঁদপুর টাউন প্রোডাকশন প্রজেক্ট’ বা চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ পুনর্বাসন প্রকল্প।
গত ফ্রেব্রুয়ারি মাসে সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নের প্রকল্পের জন্য চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ পুনর্বাসন প্রকল্পের ৪’শ ২০ কোটি টাকা ব্যায়ের অনুমোদন চেয়ে এ প্রস্তাবনা পাঠনো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু রায়হান।
জানা যায় এই প্রকল্প বরাদ্ধের প্রস্তাবনার মধ্যে চাঁদপুর হতে হাইমচর পর্যন্ত মোট ৯ কি.মি. নদী তীরবর্তী এলাকা ব্লক ফেলে বাঁধাই করা রয়েছে। তার মধ্যে শহরের এই ৩.৩৬(তিন দশমিক ছত্রিস) কি. মি. এলাকা বাঁধাই থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই প্রস্তাবিত এই প্রকল্পে ব্লকগুলো নতুন করে বসানো বা ব্লক ডাম্পিং করার ডিজাইন করা হয়েছে। আর এই ডিজাইনটি করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকার ডিজাইন বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন।
চাঁদপুর হাইমচরের ১৬.২৭৪ কি. মি. নদী তীরবর্তী এলাকার বাঁধ নির্মাণে খরছ হয়েছে সাড়ে ৩’শ কোটি টাকা। এছাড়া স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সময়ে চাঁদপুরের নদী বাঁধ নির্মাণে খরছ হয়েছে ১’শ ৭০ কোটি টাকা। কিন্তু পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়ার তীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত চাঁদপুর শহরটি। সেজন্য এখানকার ৩.৩৬ কি.মি. এলাকা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। তাই এই প্রস্তাবিত প্রকল্পটি যদি অনুমোদন হয় এবং এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। তবে শহরবাসীর জন্য এটি খুবই মঙ্গল জনক হবে। তাই এ ব্যপারে সুদৃষ্টি দিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে চাঁদপুর দক্ষিণাঞ্চল শাখার নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মুজিবুর রহমান জানান, চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ প্রকল্পটির নাম সংস্কার করা হয়েছে। যার নতুন নামকরন করা হয়েছে চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ পুনর্বাসন প্রকল্প। নদীভাঙ্গনরোধে এই প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যায় গত মাসেই পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। যার সম্পূর্ণ ব্যায় ধরা হয়েছে ৪’শ ২০ কোটি টাকা(ডিপিপি)।প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের কাজ শুরু করার সময় মার্চ/২০২০ এবং শেষ জুন/২০২২ দেখানো হয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু রায়হানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ পুনর্বাসন প্রকল্পে ৪’শ ২০ কোটি টাকা অনুমোদন চেয়ে ১টি প্রস্তাবনা গত ফেব্রুয়রি মসে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।এই প্রকল্পের প্রস্তাবনাটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় পৌঁছানোর পর চূড়ান্ত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাশ হতে পারে। যদি প্রস্তাবিত অনুমোদন পাশ হয়। তাহলে আমরা নভেম্বর/২০২০ সালেই কাজ শুরু করতে পরবো।
এটি বাস্তবায়িত হলে চাঁদপুরবাসীর আগামী ২০ বছর পর্যন্ত নদীভাঙ্গনের ভয়াবহতা নিয়ে ভাবতে হবেনা। এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এই প্রস্তাবিত প্রকল্পটি পাশ না হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর পূর্বের ন্যায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নদীভাঙ্গন রোধে ফেলবে। যা নদীভাঙ্গনের চিত্র বদলাতে পারবে না। তাই ওই প্রস্তাবিত প্রকল্পটি চাঁদপুরবাসীর জন্য এক ধরনের আশার আলো। তাই এ ব্যপারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির সুদৃষ্টি চেয়েছেন চাঁদপুরের সচেতনমহল।
কবির হেসেন মিজি,৮ মার্চ ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur