Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জে ইরি-বোরো চাষাবাদে মাঠ তৈরিতে ব্যস্ত কৃষকরা
ইরি-বোরো চাষাবাদে মাঠ তৈরিতে ব্যস্ত কৃষকরা

হাজীগঞ্জে ইরি-বোরো চাষাবাদে মাঠ তৈরিতে ব্যস্ত কৃষকরা

হাজীগঞ্জের একটি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়নে কৃষি মাঠে এবার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই অনেক কৃষক জমিতে বোরো ধান লাগানো শুরু করেছেন।

হাজীগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,চলতি ইরি বোরো মৌসুমে ৯ হাজর ৫শ হেক্টর জমিতে এবার ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিগত বছরে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ইরি আবাদে বাম্পার ফলন হয়। যা গত বছরের তুলনায় চলতি বছর প্রায় ৫০ হেক্টর জমি কম থাকলেও বাম্পার ফলনের আশাবাদী বলে জানায় কৃষি অধিদপ্তর।

কিন্তু খরচের তুলনায় ধানের ন্যায মূল্য না থাকার ফলে এবার কৃষকরা আবাদে কম ঝূঁকে পড়তে দেখা যায়। তার পরেও শেষ দিকে এসে পুরো ধমে চলছে কৃষক-কৃষাণীদের জমি পরিচর্জার কাজ।

দেখা যায়, এখানকার কৃষক-কৃষাণীসহ তাদের সন্তানরা সকাল থেকে বিজতলার চারা উঠিয়ে কুড়ি করে রাখে। সে সাথে আবার হাল দেয়া জমিতে পানি আসার সাথে সাথে মৈই দিয়ে জমি নির্বাচন করছে। আরেক দল কৃষক এসব তৈরি জমিতে চারা রোপণ করে চলছে। সে সাথে সার,কীট নাশক ওষুদসহ নানা প্রয়োজনীয় দ্রব্য জমিতে ব্যবহার করে যাচ্ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কৃষকরা এখন মাঠে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এদিকে দীর্ঘ ৬ মাস বর্ষার পানিতে মাঠ ডুবে থাকার পর গত মাসে উপজেলার সকল মাঠের পানি নেমে যায়। যে কারণে এখন ইরি-বোরো চাষাবাদের জন্যে স্থানীয় কৃষকরা তাদের জমিতে জমে থাকা কচুরি পেনাসহ নানা আবর্জনা পরিস্কার করে স্তুপ করে রাখে। যা পরবর্তীতে এসব ¯ূ‘প শুকানোর পর আগুন জ্বালিয়ে চাই তৈরি করে হাল দেয়ার পর জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।

এছাড়াও দেখা যায় গত কয়েক যুগ ধরে উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ মাঠে দু’ধরনের ফসল উৎপাদন হচ্ছে। উত্তর মাঠে দেখা যায় বর্ষার সময় আউশ ধানের ফলনসহ খরা মৌসুমে ইরি ধানের ফলনও উৎপাদন করছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।

আর দক্ষিণ অঞ্চলের মাঠগুলো নিচু হত্তয়ার কারণে এবং একাধিক ব্রিক ফিল্ড গড়ে উঠায় শুধু মাত্র খরা মৌসুমে ইরি-বোরো চাষাবাদ ছাড়া অন্য কোনো ফসল উৎপাদন করতে দেখা যায় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মনি সুত্রধর জানিয়েছেন,চলতি মৌসুমে হাজীগঞ্জে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । সে লক্ষ্যে কৃষকরা জমি পরিচর্যার কাজে নেমে পড়েছেন ।

সরকারি বীজের প্রজেক্ট ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি । সরকারি প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে আনুমানিক ৩০ টি প্রদর্শনী হয়েছে । এ ৩০টি প্রজেক্টের মাধ্যমে পুরো উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে একেক টি ইউনিয়নে ২-৩টি করে প্রদর্শনীর কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

দেখা যায় ইতোমধ্যে বাড়ির আঙ্গিনা ও উঁচু জমিতে ধানের চারার জন্যে বিজতলা তৈরি হয়েছে । আর এসব বিজতলায় বেশির ভাগই হচ্ছে বি-২৮ ও ২৯ ধান।

বর্তমানে নিচু জমিতে পানি আটক করে ধানের চারা লাগানোর কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে কৃষকরা। বাকি মাঠ চাষাবাদের জন্যে চলতি ও ফেব্রæয়ারি মাসে সম্পন্ন হবে বলে জানা যায়।

কৃষি অফিস সৃত্রে জানা যায়,উপজেলায় প্রায় ছোট বড় দেড় শতাধিক কৃষি মাঠ রয়েছে। যা থেকে এ বছরেও ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন।

এ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা গত কয়েক বছর ধরে সমান ভাবে থাকলেও চলতি বছর অনেক কৃষকই সার ও কীটনাশক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ইরি-বোরো চাষাবাদ না করে রবি শস্য উৎপাদনে মনোনিবেশ হবেন বলে জানা যায়।

এর কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় কৃষকরা চলমান চাষাবাদের খরচের সাথে ধান বিক্রয় কালে ন্যায্য মুল্য না পাওয়া।

তাছাড়া দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষি মাঠগুলো থেকে একাধারে ব্রিক্স ফিল্ড মালিকরা মাটি উত্তোলনের কারণেও চাষাবাদে বেঘাত ঘটবে বলে জানা যায়। এছাড়াও নানা প্রতিকূলতার কারণে দিন দিন ধান উৎপাদন কমে যাচ্ছে এ উপজেলায়।

প্রতিবেদক : জহিরুল ইসলাম জয়
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭:১০ পিএম,২২ জানুয়ারি ২০১৮,সোমবার
এজি

Leave a Reply