চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজের খাস কামরা এবং এজলাসে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। জজ আদালতের দ্বিতীয় তলার রেলিং ভেঙে চোর এজলাসের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন।
৭ মে শনিবার দিনগত রাতের কোন এক সময়ে এ চুরি সংঘটিত হয় বলে ধারণা করছেন আদালতের লোকজন । চোর খাস কামরায় থেকে চুরি করে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটর, কম্পিউটার সিপিও, টিসু বক্স, চশমা, মাইক সেট, পানি গরম রাখার ফ্লাক্স, গাড়ীর কাগজ, বেশ কয়েকটি মাল্টিফ্লাগ বস্তায় ডুকিয়ে আদালত এলাকার একটি ডোবার পাশে এনে ফেলে যায়। তবে জেলা ও দায়রা জজের খাস কামরা থেকে কোন প্রকার নথি খোয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
কর্মকর্তারা জানান, চোর জেলা জজের ব্যবহৃত টেবিলের উপর রাখা জরুরি কাগজপত্র মেঝেতে এলোমেলো ভাবে ফেলে রেখে যায়। চোর দীর্ঘ সময় জেলা জজের খাস কামরায় ও এজলাসে অবস্থান করলেও আদালত এলাকায় দায়িত্বরত নৈশ প্রহরীরা বিষয়টি টের পায়নি।
রোববার (৮ মে) সকাল ৮টার পরে জেলা জজের অফিস সহায়ক বাসু দরজা খুলতে এসে দেখেনে খাস কামরার দরজার খোলা। দরজা খোলা দেখে অফিস সহায়ক বাসু বিষয়টি নাজিরকে অবগত করলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পারেন।
খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ, সিআইডি, পিবিআই ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র টিম ঘটনাস্থলে আসে। তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং চুরির আলামতগুলো দেখেন।
এছাড়াও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানান, চোর জেলা ও দায়রা জজ এর খাস কামরা থেকে এমডিফায়ার, সিসিটিভির মনিটর, কম্পিউটার সিপিও, টিসু বক্স, চশমা, মাইক সেট, ফ্লাক্স, গাড়ীর কাগজ, বেশ কয়েকটি মাল্টিফ্লাগ নিয়ে যায়। সে জিনিসপত্রগুলো দু’টি বস্তায় ডুকিয়ে পাশে একটি ডোবায় ফেলে যায়। পরে পুলিশ সিআইডি ও পিবিআই এর টিম ঘটনাস্থলে এসে ফেলে যাওয়া জিনিসিগুলো উদ্ধার করেন। ঘটনাটি পুলিশ গভীরভাবে তদন্ত করে দেখছেন।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি আবদুর রশিদ জানান, আমরা সিসিটিভির ফুটেজ দেখছি। তবে বিচারকরকরা জানিয়েছেন, যা যা খোয়া গেছে সব উনারা পেয়েছেন। তারপরও আরও কিছু আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও এজাহার দাখিল হয়নি।
তিনি আরও জানান, চোর ধরার জন্য আমরা তৎপর আছি। দুই নৈশ প্রহরীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, কোর্টের বাইরে থেকে কিছু মালামাল আমরা উদ্ধার করেছি। চোর ধরার জন্য আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট, ৮ মে ২০২২