চাঁদপুর কচুয়ায় কাপিলাবাড়ী গ্রামের অধিবাসী আব্দুল হালিম মুন্সির মাদ্রাসায় পড়ুয়া মেয়ে সুমাইয়া আক্তার নারদিন আত্মহত্যা নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে। কেউ বলছে মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে, আবার কেউ বলছে পরিবারের সদস্যরা তাকে চাপ সৃষ্টি প্রয়োগ করায় ওই ছাত্রী রাগে-ক্ষোভে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনায় মাদ্রাসা ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার নারদিনের বড় বোন তামান্না আক্তার তন্নী বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার নং- ০৮, তারিখ- ১১/১১/২০১৮ইং।
মামলার প্রেক্ষিতে কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মো. শাহজাহান কাপিলা বাড়ী গ্রামের আয়েশা বেগম ও তার মেয়ে রহিমা বেগমকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।
সরে জমিনে স্থানিয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কাপিলাবাড়ী গ্রামের মুন্সি বাড়ীর আব্দুল হালিমের মেয়ে কোয়া চাঁদপুর দাখিল মাদ্রাসার বর্তমান জেডিসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার নারদিন বাড়ীর পার্শ্ববর্তী উত্তর পার্শ্বে একটি ঘাটলার সামনে জনৈক ফয়সাল নামের এক যুবকের সাথে কথা বলে। এসময় পার্শ্ববর্তী বাড়ীর আয়েশা বেগম ও রহিমা বেগম তাদের দেখে ফেলে ডাক-চিৎকার দেয়। ডাক চিৎকারের কারণে ওই ছাত্রী দৌড়ে তাদের গৃহে চলে যায় এবং যুবক ফয়সালও পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে পরেরদিন রোববার (১১ নভেম্বর) সকালে সে নিজ গৃহে আরার সাথে ওরনা পেচিয়ে আত্মহত্যা করে বলেও পরিবার দাবী করছে।
পরে তার সৎ মা ফরিদা বেগম দেখতে পেয়ে ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন এসে থানা পুলিশকে খবর দেয়। কচুয়া থানা পুলিশ নিহত মাদ্রাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে ওই মাদ্রাসা ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনার অভিযোগে একই গ্রামের আয়শা বেগম ও রহিমা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা আব্দুল হালিম মুন্সি বলেন, ‘ঢাকায় আমি একটি কোম্পানীতে চাকরি করি। মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বাড়ী আসি। তবে যুবক ফয়সারের পরিচয় সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি কিছ্ইু বলতে পারেন নি। তার মেয়ে (নারদিন) এর ব্যবহৃত মোবাইল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দোঘর গ্রামের (মেয়ের খালা) নাজমা বেগম নিয়ে যায় বলেও তিনি জানান। মোবাইল ও সিম উদ্ধার ও ফয়সালের পরিচয় উদঘাটন হলে রহস্য উদঘাটন হবে বলে তিনি জানান।’
এছাড়া সে জেডিসিতে আরো ৩টি পরীক্ষা দেয়া হয়নি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অপর দিকে গ্রেফতারকৃত দুই নারী আয়েশা ও রহিমা বেগম নির্দোষ বলে তাদের পরিবারের পক্ষে রহিমার চাচা জাফর খলিফা বলেন কথা বলার ঘটনা দেখার বিষয়টি তার পরিবারের কাছে বিষয়টি জানানোর অপরাধে তাদের মামলা দেয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। তারা প্রকৃত পক্ষে নিদোর্ষ বলে তিনি দাবী করেন।
অন্যদিকে নিহতার দাদা আব্দুল লতিফ ও সৎ মা ফরিদা বেগম বলেন, আয়েশা বেগম ও রহিমা বেগম ওই দিন সন্ধ্যায় তাদের (ফয়সাল ও নারদিনের) কথা বলার বিষয় নিয়ে বেশি বারাবাড়ি করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুহাম্মদ শাহজাহান জানান, গ্রেফতারকৃতরা ওই মামলার আসামী।
প্রতিবেদক:জিসান আহমদ নান্নু