চাঁদপুর সদর

চাঁদপুর জেলায় চলছে লাইসেন্সবিহীন ৪ হাজার সিএনজি স্কুটার

চাঁদপুর জেলায় চলছে প্রায় ১১ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা। এর মধ্যে ৬ হাজার ৭শ’ সিএনজি অটোরিকশার লাইসেন্স আছে। বাকি প্রায় ৪ হাজার অটোরিকশাই চলছে লাইসেন্সবিহীন অবস্থায়। বর্তমানে নতুন করে লাইসেন্স না দেওয়ায় অবৈধভাবেই চলছে সিএনজিগুলো।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়ায় নতুন করে কোনও লাইসেন্স দেওয়া হবে না। যেসব অটোরিকশা লাইসেন্সবিহীন অবস্থায় চলছে সেগুলোও চলতে দেওয়া হবে না। তবে সিএনজি অটোরিকশা মালিকদের দাবি, যে সিএনজিগুলো চাঁদপুর শহরের মধ্যে চলছে, অন্তত সেসব গাড়িগুলোর লাইসেন্স করার সুযোগ দেওয়া দরকার। না হলে তারা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন।

চাঁদপুর জেলা বিআরটিএ অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর সিএনজি অটোরিকশা নবায়ন বাবদ সরকার ছয় হাজার ৭৮৫ টাকা পায়। সে হিসাবে,লাইসেন্সধারী ছয় হাজার ৭শ’ সিএনজি অটোরিকশা থেকে নবায়ন বাবদ সরকার পাচ্ছে ৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু লাইসেন্স ছাড়া চলতে থাকা প্রায় ৪ হাজার সিএনজি অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন হলে প্রতিবছর নবায়ন ফি বাবদ সরকারের আরও আয় হতো আরও অন্তত ২ কোটি টাকা। কিন্তু গাড়ি বেশি হওয়ার কারণ দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশন বন্ধ থাকায় এই অর্থ পাচ্ছে না সরকার। এছাড়া বিভিন্ন সময় প্রশাসন সিএনজি অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান করে মামলা ও জরিমানা আদায় করছে। কিন্তু সিএনজি মালিকরা বাধ্য হয়ে সেগুলো রাস্তায় রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল অংকের রাজস্ব আয় থেকে।

সিএনজি মালিক আবু হায়দার বলেন,‘আমার চারটি সিএনজি অটোরিকশা আছে। এর মধ্যে দু’টির রেজিস্ট্রেশন আছে আর দু’টির নেই। এখন সিএনজির লাইসেন্সও দেওয়া বন্ধ রয়েছে। তাই আমরা লাইসেন্স করতে পারছি না। সিএনজিগুলো টাকা দিয়ে কিনেছি,ফেলে দিতে তো আর পারি না।’

অটোরিকশা চালক খায়ের বলেন,‘যাদের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নেই,তারা ট্রাফিক সার্জেন্টকে টাকা দিয়ে গাড়ি চালায়।’

চাঁদপুর সদর সার্কেল বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক শেখ মো. ইমরান বলেন,‘চাঁদপুরে ছয় হাজার ৭শ’ নিবন্ধিত সিএনজি অটোরিকশার মধ্যে প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার সিএনজি অটোরিকশা নবায়ন করা হচ্ছে। যারা নবায়ন করছে না তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মামলা এবং জরিমানা করা হচ্ছে।’

চাঁদপুর জেলা সিএনজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘জেলায় প্রায় ১৫০০ গাড়ি লাইসেন্সের জন্য এক বছর আগে টাকা জমা দিয়েছে। কিন্তু তারা এখনও নম্বর পায়নি। এছাড়া আরও প্রায় দুই হাজার গাড়ি অনটেস্টে চলছে। গাড়িগুলোর রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার জন্য কথাবার্তা বলছি। মালিকরা তো গাড়ি বৈধ করেই চালাতে চায়। সিএনজি অটোরিকশা মালিকরা গরিব। অনেকেই কিস্তি নিয়ে গাড়ি কিনেছেন। সরকার ও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাবো গাড়িগুলোর নম্বর দিয়ে দেওয়ার জন্য। এরপর আর কোনও গাড়ির নম্বর না দিয়ে শোরুমগুলো সিলগালা করে দেওয়া হোক।’

তিনি আরও বলেন,‘পাশের জেলা থেকেও প্রচুর অনটেস্ট গাড়ি আমাদের জেলায় ঢুকছে। সেজন্য রাস্তায় গাড়ি বেশি দেখা যায় এবং যানজট হচ্ছে। আমাদের জেলার গাড়িগুলোর নিবন্ধন হয়ে গেলে তখন বাইরের গাড়ি আমাদের জেলায় ঢুকতে পারবে না। তাই রাস্তায় যানজট কমে আসতে পারে।’

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান বলেন,‘এ বিষয় নিয়ে আমরা দ্রুতই মিটিং করবো। এখানে কোনও অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা থাকতে পারবে না।’

সিএনজির লাইসেন্স সম্পর্কে তিনি বলেন,‘আমরা লাইসেন্স দেওয়ার পক্ষপাতি না। রাস্তা বেশি ওভারলোডেড হয়ে গেছে। আমরা ফিটনেসবিহীন সিএনজি অটোরিকশার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট চালাচ্ছি। মিটিংয়ে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে।’
বার্তা কক্ষ

Share